প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১০:৫০ এএম
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১৭:০১ পিএম
মিরাজরা ধুঁকছেন লঙ্কা পেসে। সংগৃহীত ছবি
শ্রীলঙ্কার দেওয়া রেকর্ড ৫১১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩৭ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর মুমিনুল হকের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ১৮২ রান পর্যন্ত করতে পারে।
আসা যাওয়ার মিছিলে তিনি অপরাজিত থাকেন ৮৭ রানে। মাত্র ১৩ রানের জন্য মিস করেন ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ সিলেট টেস্ট হেরেছে ৩২৮ রানে।
মিরাজ ফিরলেন, ফিফটির পথে মুমিনুল
চতুর্থ দিনে অসম্ভব কিছু করতে হত বাংলাদেশকে। ৫১১ রানের লক্ষ্যে সেই অসম্ভব কাজ যে আদপেই অসম্ভব সেটি সকালেই বুঝিয়েছেন কাসুন রাজিথা৷ আগের দিনে ঢাল হয়ে থাকা তাইজুল ইসলামকে শুরুতেই ফিরিয়েছেন। এরপর তিনিই সরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজকেও।
হারের ক্ষণ গুণতে থাকা বাংলাদেশও হারিয়েছে ৭ উইকেট। তবে অপরপাশে আসা-যাওয়ার ইনিংসে হাল ধরেছেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশকে শত রান পার করানো টাইগারদের সাবেক ক্যাপ্টেন অপরাজিত আছেন ৪৬ রানে। মিরাজ ফিরেছেন ৩৩ রান করে। বাংলাদেশ এখনও জয়ের থেকে ৩৮২ রান পেছনে।
তাইজুল ফিরলেন দিনের শুরুতেই
তাইজুল ইসলাম দিনের শুরুতেই ফিরেছেন। আগের দিনের নাইটওয়াচম্যানকে চতুর্থ দিনের সকালে ফেরান কাসুন রাজিথা। এরপর মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়েছেন মুমিনুল হক। দুজনের প্রতিরোধে দলীয় শতরানের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ এখনও ৪২৬ রান পিছিয়ে। জয়ের জন্য লঙ্কানদের চাই চারটি উইকেট। ৬ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুলরা করেছেন ৮৫ রান।
লজ্জাজনক হারের মুখে বাংলাদেশ
৫ শতাধিক রানের বোঝা মাথায় নিয়ে টাইগারদের ব্যাটিং ছিল হতশ্রী। বিশ্ব ফার্নান্দোর ইনিংসের প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউ হন মাহমুদুল হাসান জয়। কাসুন রাজিথার দ্বিতীয় ওভারে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে স্লিপে ক্যাচ দেন অধিনায়ক শান্ত। উইকেটের পেছনে খোঁচা মেরে ফেরেন শাহাদাত হোসেন দীপুও। সবশেষে লিটন দাস হয়েছেন সবচেয়ে দৃষ্টিকটু আউট। ৬ নম্বরে চাপ সামলাতে এসে প্রথম বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় করে বসেন লিটন। অমন পরিস্থিতিতে এমন শটে হতভম্ব সমর্থকরা।
৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্যে শঙ্কা কাটাতে গিয়ে লজ্জাকাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। সিলেট টেস্টে হার মেনে নিলেও টাইগাররা এর মধ্যেও প্রাপ্তি খুঁজছে। ভরাডুবির মুষ্টিলাভ আর কি! এ টেস্টে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে হাতড়ে বেড়াচ্ছে ‘কীভাবে হারটা সম্মানজনক করা যায়!’
সবশেষেও মিরাজের লড়ার আশা
সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ শুনিয়েছেন প্রাপ্তি খোঁজার কথা। টপ অর্ডার ব্যাটারদের বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনী আর ছন্নছাড়া শটের ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছিল। সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে মিরাজ বলেছেন সম্ভাবনার কথাই, ‘এটার ব্যাখ্যা আসলে যে খেলোয়াড়রা (বাজে) খেলে সে ভালো বলতে পারবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ওই মুহূর্তে কী চিন্তা করছে। আমার কাছে মনে হয় শেষ দিকে এটা অবশ্যই কঠিন। তবে চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে। আলাদা করে, আমাদের আউটগুলো হতাশাজনক। তার পরও ভালো খেলার চেষ্টা করব। আমরা যারা আছি মুমিনুল ভাই রান করতে পারলে ভালো, আমি যদি ব্যাটিং করি ভালো একটা অবস্থানে যদি দিতে পারি। তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে।’
নির্বাচক রাজ্জাকের ক্ষোভ
সেই ভালোটা হার রোখার মতো নয় নিশ্চিত, হারকে সহনীয় অর্থাৎ সম্মানজনক অবস্থায় আনার। সিলেট টেস্টে চারটি ইনিংসের কিছু বিষয় মিলে যাচ্ছে। লঙ্কানদের ব্যাটিং ব্যর্থতা, কামিন্দু-ধনঞ্জয়া সেঞ্চুরিতে ঘুরে দাঁড়ানো, টাইগারদের টপ অর্ডারের ধস এবং ব্যাটিংয়ে ধুঁকতে থাকা। শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা যেখানে দিনের শেষ অবধি দাপুটে ব্যাটিং করছিলেন, তাইজুলদের যত্রতত্র উড়িয়ে মারছিলেন। সেখানেই নাজেহাল দশায় লিটন-শান্তরা।
আত্মঘাতী এসব শটের বিষয়টি দৃষ্টিকটু লেগেছে নির্বাচক আবদুর রাজ্জাকের। সিলেটে ব্যাটারদের তীব্র সমালোচনা করে ক্ষোভ ঝেড়েছেন বিসিবির কর্তা, ‘ব্যাটিংয়ের দিক থেকে যদি বলেন আমার কাছে খুবই অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। গ্রহণযোগ্য নয়। এ রকম ব্যাটিং হবে, বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে…। ওদের ব্যাটিং দেখার পর আমাদের ব্যাটিং দুই রকম মনে হয়েছে। আমি হতাশ।’
পিচের সমস্যা কি না সে বিষয়ে রাজ্জাকের ভাষ্য, ‘পিচের সমস্যা হবে কেন? আধা ঘণ্টার মধ্যে পিচ আকাশপাতাল পার্থক্য হয়ে যাবে নাকি। কিছুক্ষণ আগেই ওরা দুজন একশ মেরে গেল। ১০ মিনিটের ব্রেক থাকে। ১০ মিনিটে উইকেটে কী এমন হলো? আসলে আমাদের অ্যাপ্লিকেশনে কিছু ভুল হয়েছে।’