প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪ ০১:০২ এএম
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪ ০১:১৬ এএম
ফ্লোরিয়ান ভাইর্টৎস
কেউ কেউ প্রস্তুত ছিলেন ফুটবলের রোমাঞ্চ উপভোগের মন্ত্র জপে। আবার কেউ কেউ প্রস্তুত হচ্ছিলেন মাঠের লড়াই দেখে চোখ জুড়াতে। কিন্তু দর্শকদের কেউ যেন কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই চিত্রনাট্যে উন্মাদনার ছড়াছড়ি। শুরু হয়ে যায় গোল উদযাপন আর উৎসব। ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই যেন মাঠের নীরবতা হাওয়া।
লিওঁর গ্রুপামা স্টেডিয়ামের ৬০ হাজার ছুঁই ছুঁই দর্শকদের অপেক্ষায় থাকতে হয়নি বললেই চলে। প্রতিপক্ষ ফ্রান্সের ফুটবলার থেকে দর্শক, এমনকি জার্মানির খেলোয়াড় সবাই হতবাক। সবাই তখন একটা প্রশ্নই আওড়াচ্ছেন, গোল কখন হলো?
গ্যালারির অনেক দর্শক যে বুঝতেই পারেননি গোল কখন, কীভাবে হয়েছে। এত দ্রুত গোল হলে কিছু টের পাওয়ার জো থাকে না আসলে। ফ্রান্স জার্মানি ম্যাচেও ঘটল ঠিক তেমন ঘটনা।
ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই ফ্লোরিয়ান ভাইর্টৎস কীর্তি গড়ে ফেলেন। ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে সবার চোখ কপালে তুলে দেন। গোলের দেখা পেয়ে যান ম্যাচের ৭ সেকেন্ডেই। ফরাসি শিবির তখন পুরোপুরি হতভম্ব, বিধ্বস্ত। যেন ম্যাচটাই হেরে গেছে কিক অফ হতে না হতেই।
জার্মানির ফুটবল ইতিহাসে দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন ভাইর্টৎস। তার এই গোলে ফরাসিরা মূলত মানসিকভাবে ধসে পড়ে। আর ফিরতে পারেনি খেলায়। তার আগে জার্মানদের হয়ে দ্রুততম গোলের মালিক ছিলেন লুকাস পোডলস্কি। ২০১৩ সালে ম্যাচের মাত্র ৯ সেকেন্ডে ইকুয়েডরের জাল কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন পোডলস্কি।
হঠাৎ করেই ভাইর্টৎস দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন। কেন? প্রশ্নটা উঠতেই পারে। তিনি ও তার দল যে এখন দুর্দান্ত ফর্মে! বোঝা গেল না? খোলাসা করলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। বুন্দেসলিগায় বায়ার্ন মিউনিখের একচেটিয়া আধিপত্য ভেঙে লিগ শিরোপা জয়ের দৌড়ে ভাইর্টৎসের ক্লাব বায়ার লেভারকুসেন যে এখন রাজত্ব করে চলেছে পয়েন্ট টেবিলে। পুরো ব্যাপারটা এবার স্পষ্ট হয়ে গেল তাহলে।
কিন্তু সব এখানেই শেষ নয়। প্রশ্ন আছে আরও একটি। তার এমন দাপুটে গোলে সহায়তা করেছেন কে? তিনি আর কেউ নেন, অবসর ভেঙে তিন বছর পর জার্মান জাতীয় দলে ফেরা টনি ক্রস। বিরতির পরপর দ্বিতীয় গোল দিয়ে ক্রুসের প্রত্যাবর্তনটা রাঙিয়েছেন কাই হাভার্টজ। তাতেই জার্মানি ২-০ গোলে ধরাশায়ী করেছে ফ্রান্সকে।
মাঠে থেকেও দলের জন্য কিছুই করতে পারেননি বিশ্বকাপ জয়ী তারকা ফুটবলার কাইলিয়ান এমবাপ্পে। দুদলের আগের দেখাতেও হতাশ হতে হয়েছিল ফরাসিদের। গত সেপ্টেম্বরের ওই ম্যাচে জার্মানরা জয়ের দেখা পেয়েছিল ২-১ গোলে।
২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর ১১টি ম্যাচ খেলেছে কোচ দিদিয়ের দেশমের শিষ্যরা। হারের তেতো স্বাদ হজম করেছে তারা শুধু দুই ম্যাচে। সেই দুটি হার কেবল জার্মানদের বিরুদ্ধে।
এ বছরের জুন-জুলাইয়ে জার্মানির মাঠে বসতে যাচ্ছে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। তার আগে এমন দুর্দান্ত জয় আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে জার্মান ফুটবলারদের। জার্মান কোচ ইউলিয়ান নাগলসমান বলছেন তেমনটাই, ‘এই ম্যাচ থেকে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আমরা আজ দারুণ খেলেছি এবং সঠিক পথেই আছি।’ ম্যাচ শুরুর ৭ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করা নিয়ে টনি ক্রুসের ভাষ্য, ‘ম্যাচের আগে আমরা এটা অনুশীলন করেছি। আসলে এভাবে গোল করার পরিকল্পনা আমাদের আগে থেকেই ছিল।’