প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৬ পিএম
অনুশীলনে ব্রাজিলের ফুটবলাররা
সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। ব্রাজিল যেন বাজে সময়ের দুষ্টচক্রে আটকে পড়েছে। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের শনির দশা শুরু মূলত কোচ তিতের বিদায়ের পর। তিতে-পরবর্তী যুগে ব্রাজিলে শুরু হয়েছে বিপর্যয়। বিপদের ঘনঘটা কতটা? সেটা স্পষ্ট তাদের মাঠের পারফরম্যান্সেই। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তো হারের হ্যাটট্রিকই করে ফেলেছে এ ফুটবল পরাশক্তি। লাতিন আমেরিকার ১০ দলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে পড়ে আছে ব্রাজিল।
সামনে কোপা আমেরিকা। ২০ জুন-১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসতে যাচ্ছে মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট। আছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। যেখানে ঘুরে দাঁড়ানো বড্ড প্রয়োজন ব্রাজিলের। তবেই যদি মেলে বিশ্ব মঞ্চের টিকিট। এ নিয়ে ভয়ের তেমন কিছুই এখনও অবশ্য হয়নি। কিন্তু অজানা আশঙ্কা সাম্বা ফুটবলের অনুরাগীদের মনের ভেতরে যে কাজ করছে না, তা কিন্তু নয়। তা তো হবেই। কারণ ব্রাজিল যে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার অটোমেটিক স্পটের শেষ প্রান্তে অবস্থান করছে এখন। এমন কঠিন সময়ে ব্রাজিল মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ডের। দুই পাওয়ার হাউসের হাইভোল্টেজ ও স্নায়ুচাপের মহারণ আয়োজন করতে প্রস্তুত লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় মাঠে গড়াবে জিভে জল এনে দেওয়ার মতো শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি।
কনমেবলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে একটু একটু করে যেন পিছিয়ে পড়ছে ব্রাজিল। বলিভিয়া, পেরু ও ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৯ পয়েন্ট থেকে তাদের পুঁজি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭ পয়েন্ট। আর আপৎকালীন কোচ ফার্নান্দো দিনিজের অধীনে সবশেষ তিন ম্যাচে সেলেসাওরা হার মেনেছে উরুগুয়ে, কলম্বিয়া ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে। ২২ বছরের মধ্যে এতটা বাজে অবস্থার মধ্য কখনোই যায়নি ব্রাজিল।
তাতে ব্রাজিলের সমান ৬ ম্যাচ খেলে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা নিজেদের নামের পাশে যোগ করেছে ১৫ পয়েন্ট। নেইমারদের চেয়ে আকাশি নীল-সাদা শিবির এগিয়ে এখন ৮ পয়েন্টে। আলবিসেলেস্তেরা রাজত্ব করছে এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে। লিওনেল মেসিদের পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উরুগুয়ে। লুইস সুয়ারেজদের সংগ্রহও ১৩ পয়েন্ট। কলম্বিয়ার মতো দলও ১২ পয়েন্ট পেয়েছে। সেখানে ব্রাজিল বাধা পড়েছে সিঙ্গেল ডিজিটের খোলসে। কিছুতেই যেন বেরোতে পারছে না তারা।
নান্দনিক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে কোচ ডরিভাল জুনিয়রের শিষ্যদের আজ ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ। তবে ব্রাজিলের জন্য খেলায় ফেরাটা মোটেই সহজ হবে না। কারণ কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়ে যাচ্ছে হ্যারি কেইনের ইংল্যান্ড। গত বছর কোনো ম্যাচেই হারেনি থ্রি লায়ন্স শিবির। ইংলিশদের সামনে রয়েছে ইউরো ২০২৪। ১৪ জুন-১৪ জুলাই জার্মানির মাটিতে হতে যাওয়া মহাদেশীয় এ আসরের আগে কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরাও ছন্দটা ধরে রেখে চাচ্ছে জয়রথে চেপে ছুটে চলতে। তবে খারাপ খবর আছে তাদের জন্য। দলে নেই তারকা স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। তার অভাবটা সাউথগেট কিভাবে পুষিয়ে নেন, সেটাই এখন দেখার।
ডরিভাল জুনিয়রের অভিষেক ম্যাচ দুঃস্বপ্নে পরিণত করতে সম্ভাব্য সবকিছুই করতে প্রস্তুত স্বাগতিকরা। বারুদে পুরা ম্যাচের আগে পরিসংখ্যান অবশ্য প্রেরণা জোগাচ্ছে নেইমারহীন ব্রাজিলকে। কেননা দুদলের ২৬ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে ইংল্যান্ড জিতেছে মাত্র ৪ ম্যাচ। ব্রাজিল জয় পেয়েছে ১১ ম্যাচে। বাকি ১১ ম্যাচ থেকে গেছে অমীমাংসিত। ব্রাজিল-ইংল্যান্ড সবশেষ প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল ২০১৭ সালের নভেম্বরে। যে লড়াইয়ে জয়ের মুখ দেখেনি কোনো দলই।