প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৮:০৭ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৯:২৭ পিএম
আগের দিনের মতো আজও ব্যর্থ লিটন দাস। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকারের দারুণ ব্যাটিংয়ে সংগ্রহটা ৩০০ রানের মার্ক স্পর্শ করার আশায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংসের বড় সর্বনাশটা করেছেন লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার একাই ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাঝের ওভারের সেই বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ খুব একটা ছিল না টাইগারদের সামনে। যদিও শেষ পর্যন্ত একা হাতে লড়ে গেছেন তাওহিদ হৃদয়। ডানহাতি এই ব্যাটারের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৮৬ রান জমা করেছে টাইগাররা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৬ রানের ইনিংস খেলেছেন হৃদয়। আর সৌম্য সরকার খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। এর সঙ্গে অধিনায়ক শান্ত করেছেন ৪০ রান।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও শূন্য রানে আউট হন লিটন দাস। দিলশান মাদুশঙ্কার লেগ স্টাম্প বরাবর করা বল ফ্লিক করেছিলেন লিটন। বল চলে গিয়েছিল সোজা স্কয়ার লেগে। সেখানে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন দুনিথ ওয়েলালাগে।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন আরেক ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ও ওপেনার সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজনে যোগ করেন ৭৫ রান। দিলশান মাদুশঙ্কার অফ স্টাম্প ঘেঁষা দারুণ এক লেংথ বলে শান্তর বিদায়ে এই জুটি ভেঙে যায়। শান্ত আউট হন ৩৯ বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ইনিংস টানছিলেন সৌম্য। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে সুইপ করে চার মেরে ৫২ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সৌম্য। মনে হচ্ছিল, আরও অনেক দূর যাবেন এই ব্যাটার। তবে তাকে ফিরিয়ে ৫৫ রানের জুটি ভেঙেছেন হাসারাঙ্গাই। লঙ্কান এই লেগ স্পিনারের বলে রিভার্স সুইপ করেছিলেন সৌম্য।
ভালো টাইমিং হলেও বল চলে গিয়েছিল মিড উইকেটে। সেখানে দৌড়ে এসে দারুণ ক্যাচ মুঠোবন্দি করেছেন মাদুশঙ্কা। ফলে ৬৬ বলে ৬৮ রান করে শেষ হয়েছে সৌম্যর ইনিংস। আউট হওয়ার আগে ১১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন একটি ছক্কা। এর আগে দ্রুততম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ২ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সৌম্য।
সৌম্য আউট হওয়ার দুই বল পর ফিরে গেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। আগের ম্যাচে ৩৭ রানের ইনিংস খেলা রিয়াদ আউট হয়েছেন শূন্য রানে। হাসারাঙ্গার গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে স্টাম্পিং হয়ে আউট হয়েছেন তিনি। এরপর হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম মিলে যোগ করেন ৪৩ রান।
মুশফিককেও আউট করেছেন হাসারাঙ্গা। এই লেগ স্পিনারের ফুল লেংথের বলে সুইপ করতে গিয়েছিলেন মুশফিক। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। বল আঘাত করেছিল সোজা প্যাডে। লঙ্কান ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল। তবে শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিলে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্পে পিচ করে আঘাত করত লেগ মিডল স্টাম্পে।
ফলে থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা দেন মুশফিককে। ২৮ বলে ২৫ রান করে ফিরে যেতে হয় তাকে। মেহেদী হাসান মিরাজকেও বেশিক্ষণ থিতু হতে দেননি হাসারাঙ্গা। এই স্পিনারের বলে এগিয়ে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তবে শেষ মুহূর্তে নিজের ভুল বুঝে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তবে সেই বলে সোজা আঘাত করে স্টাম্পে। ১২ রান করেই ফিরে যেতে হয় মিরাজকে।
লয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া তাওহিদ হৃদয় ৭৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। শেষদিকে হৃদয়কে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। এই দুজনের জুটি থেকে এসেছে ৪৭ রান। মাদুশঙ্কার ওপর চড়াও হতে গিয়ে ৩৩ বলে ১৮ রান করে আউট হয়েছেন সাকিব। মাদুশঙ্কার লেংথ বলে বড় শট খেলতে গিয়ে মিড অফে হাসারাঙ্গার হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হতে হয়েছে তাকে।
হৃদয়কে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তাসকিন আহমেদও। এর মধ্যে প্রমোদ মাদুশঙ্কাকে পরপর দুই বলে ছক্কা ও চার মারেন তাসকিন। লাহিরু কুমারাকে ইনিংসে শেষ দুই বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯৬ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন হৃদয়। তাসকিন ইনিংস শেষ করেছেন ১০ বলে ১৮ রান নিয়ে। ফলে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে।