প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ২১:২৮ পিএম
লক্ষ্য হোয়াইটওয়াশ...। বিসিবির
ডেপুটি মিডিয়া ম্যানেজার জাহিদুল ইসলামের কথা তখনো শেষ হয়নি। মুখের কথা টেনে নিয়েই
তাসকিন আহমেদ বলতে শুরু করলেন ‘আমাদের লক্ষ্য হোয়াইটওয়াশ’। সিঁড়ি টপকে নয় বরং সিরিজের
দ্বিতীয় ম্যাচকে ‘পাখির চোখ’ করেছেন টাইগার স্পিড স্টার। ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চান।
দ্বিতীয় ম্যাচে জয়, চান তৃতীয়টিও। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে চান ওয়ানডে
সিরিজে।
প্রথম ওয়ানডেতে দারুণ বোলিং করেছেন
বাংলাদেশের পেসাররা। তিনটি করে মোট ৯টি উইকেট তুলেছেন তানজিম হাসান-তাসকিন আহমেদ ও
শরিফুল ইসলাম। শুরুটা করেছিলেন তানজিম। লঙ্কানদের সেট হওয়া দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা
ও আভিস্কা ফার্ন্দাডোকে মাঠ ছাড়া করেন। একটু পরই ফেরান সাদিরা সামারাবিক্রমাকে। এরপর
লিয়ানাগেকে নিয়ে কুশল মেন্ডিসের দৃঢ় প্রতিরোধ। দারুণ এগোচ্ছিলেন দুজন। একটা ব্রেক-থ্রু
আবশ্যক হয় পড়ে বাংলাদেশের। ত্রাতা হয়ে আবির্ভাব হন তাসকিন। দ্রুতই তুলে নেন তিন উইকেট।
শেষদিকে গতির ঝড়ে লঙ্কানদের নাকাল করেন শরিফুল। পকেটে পুরেন তিন উইকেট।
পেসারদের দারুণ পারফর্মান্সের পর
তাসকিন মনে করেন সাগরিকার উইকেট স্পোর্টিং। প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের
এক ভিডিও বার্তায় তাসকিন বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে ছিলাম। ওদের দুওপেনার সেট ছিল। ব্যাক টু
ব্যাক তিনটা উইকেট তুলে সাকিব আমাদের ম্যাচে ফিরিয়েছে। শুরুটা ওর ছিল। মিডলে আমি। আর
শেষদিকে শরিফুল। উইকেট অনুযায়ী কামব্যাকটা দারুণ করতে পেরেছি। আর শেষটাও দারুণ হয়েছে।’
সিরিজের প্রথম ম্যাচ জয়ের ভিত্তিপ্রস্তর
গড়েন তানজিম। পরবর্তীতে সেটা টেনে নেন তাসকিন-শরিফুল। ব্যাটিংয়ে নেমে স্কাইস্ক্র্যাপারে
রূপ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। শুরুর নায়ককের প্রশংসা করতে ভুলেননি তাসকিন।
লাল সবুজের পেস ইউনিটের নেতা বলেন, ‘ ও (তানজিম সাকিব) খুবই দারুণ শুরু করেছে। উইকেট
যেমনই থাকুক ও গার্ডস নিয়েই বোলিং করে। এগ্রেসন আছে খুব। আল্লাহ যদি চায় এবং সুস্থ
থাকলে দেশকে অনেক কিছুই দেওয়া আছে সাকিবের।’
পেসারদের নৈপুণ্যের পর প্রত্যাশা
বাড়ে ব্যাটারদের ঘিরে। টার্গেটে নেমে হতাশ করেন দেশের দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও
সৌম্য সরকার। তাওহিদ হৃদয়ও আশাহত করেন প্রথম ম্যাচে। এরপর বাংলাদেশ দুটি জুটি গড়ে।
যা ছিল চোখের শান্তি। একটা জুটিতে উঠেছে ৬২ বলে ৬৯ রান। আরেকটিতে ১৭৫ বলে ১৬৫, তাও
অবিচ্ছিন্ন। প্রথম জুটিটা মাহমুদউল্লাহ–নাজমুল হোসেনের, দ্বিতীয়টি নাজমুল–মুশফিকুর রহিমের। নাজমুলের এমন অদম্য মানসিকতার প্রশংসা করেছেন তাসকিন,
‘দারুণ ব্যাট করেছে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া যাকে বলে। এত সুন্দর করে মানিয়ে নিয়ে
শেষ করে, মাশাআল্লাহ। আল্লাহ আরো ভালো করাক এবং সামনের ম্যাচগুলোতেও যেন আমাদের সবার
অবদান ভালো থাকে, এটাই চাওয়া থাকবে।’
ক্যাপ্টেনস নক যেটাকে বলে। সেটাই
হয়েছে শান্তর বেলায়। একটু আগেও যে মাঠ প্রলয়ংকরী ঝড় মাড়িয়ে গেছে, সে মাঠেই গড়লেন ইতিহাস।
তিন ফরম্যাটের দায়িত্বপ্রাপ্তির পর প্রথম ওয়ানডেতেই সেঞ্চুরি। সব ছাপিয়ে জয়। নিশ্চিত
বিষয়টি তৃপ্ত করছে শান্তকে। তবে তিনি যে আত্যক্তিতে ভুগতে চান না ম্যাচ শেষে সেটাই
জানিয়েছেন। নিজের সেঞ্চুরি এবং অবদান আড়ালে রেখেছে গুণগান গেয়েছেন সতীর্থদের। প্রশংসা
করেছেন বড় ভাই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর। বিষয়টি ভালো লেগেছে তাসকিনের। ক্যাপ্টেনের প্রশংসা
করে বলেন, ‘এটাকেই বলে প্রোপার ক্যাপ্টেন্স নক। এমন পরিস্থিতে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে।
সামনের ম্যাচগুলোতে যেন সবার অবদান থাকে সে দোয়া করি।’
শুক্রবার নতুন উদ্যমে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। খেরোখাতায় নতুন গল্প লেখার অপেক্ষায় শান্ত। তাসকিনের সামনেও মাইলফলক। আর মাত্র ২ উইকেট পেলেই বাংলাদেশের অষ্টম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ১০০ শিকার পূর্ণ করবেন তিনি। তাসকিনের আগে সাতজন বোলার ১০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। নিশ্চয়ই এমন দিনে দুটি অভিন্ন লক্ষ্য তাসকিনের-জয় এবং মাইলফলক।