প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪ ২০:৩০ পিএম
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৪ ২০:৪২ পিএম
৩০ বলে ৫৩ রান করে আউট হন রিশাদ। ছবি : ক্রিকইনফো
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রিশাদ হোসেনের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর ছিল স্রেফ ১০ রান। ছোট্ট ক্যারিয়ারে মেরেছিলেন একটি ছক্কা। সেই রিশাদই কি না গতকাল সিলেটে বইয়ে দিলেন ছক্কার বৃষ্টি! যেখানে পৌনে দুশর লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নুয়ান থুশারার আগুনে বোলিংয়ের সামনে পড়ে হাঁসফাঁস করছিলেন স্বীকৃত সব ব্যাটার। সেখানেই কি না টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডটা নিজের করে নিলেন রিশাদ। তার সাত ছক্কার ইনিংসটি ছিল সিলেটে আগত দর্শকদের জন্য শেষের বিনোদন। আবার লিটন দাস, সৌম্য সরকার কিংবা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের জন্য লজ্জারও।
বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৭৫ লক্ষ্যে নেমে হেরেছে ২৮ রানে। হারের ব্যবধান এই ম্যাচের সঠিক চিত্র নয়। স্বাগতিকরা প্রথম উইকেট হারায় ইনিংসের তৃতীয় ওভারে। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগে আরও বড় বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। পরের ওভারেই টাইগার ব্যাটারদের নিয়ে ইচ্ছা পূরণের খেলায় মাতেন পেসার থুশারা। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং তো করেছেনই, পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। ৪ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে তার দখলে গেছে ৫ উইকেট।
নিজের প্রথম ওভারে হ্যাটট্রিক মেডেন করার পর দ্বিতীয় ওভারেও উইকেটের দেখা পান থুশারা। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে তার শিকার সৌম্য সরকার। দুই ওভারে ৪ উইকেট পাওয়া থুশারা এরপর বোলিংয়ে আসেন দশম ওভারে। ওই ওভারে দেন ৫ রান। এরপর নিজের শেষ ওভারে যখন বোলিংয়ে এলেন ততক্ষণে সিলেটে ছক্কার পার্টিতে মেতেছিলেন তাসকিন আর রিশাদ। সেই পার্টিতে থুশারাকে প্রথম বলেই স্বাগত জানান তাসকিন। ১৮তম ওভারে থুশারার প্রথম বলটি লং অনের ওপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলেন তাসকিন। পরের বলে ছক্কা হাঁকান কাভারের ওপর দিয়ে।
থুশারার হ্যাটট্রিক আর তাসকিনের জোড়া ছক্কার মাঝের গল্পটা কেবলই রিশাদের। কার্যত এই ম্যাচের ‘অতি সম্ভাব্য’ ফলাফল ধরে নেওয়া গেছে পাওয়ার প্লেতেই। ৬ ওভারে ২৫ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। স্বীকৃত ব্যাটার বলতে তখন মাঠে অপরাজিত ছিলেন এই সিরিজের বিস্ময় জাকের আলী। তবে প্রথম ম্যাচের ট্র্যাজিক নায়ক এদিন কিছুই করতে পারেননি। দলের বিপর্যয়ে নেমে অনুসরণ করেছেন অগ্রজদের। সাজঘরমুখো হন ৪ রান করে।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৩৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তখন বাংলাদেশ। ঠিক তখনই ব্যাটারদের লজ্জা দিতেই যেন লড়াই জারি রাখলেন লেগ স্পিনার হিসেবে পরিচিত রিশাদ। প্রথম ৯ বল খেললেন দেখেশুনে। দশম বলে লঙ্কান অধিনায়ককে দিয়ে শুরু। তার স্টাম্পের ওপরে রাখা বলটি সজোরে চালিয়ে সীমানা পার করেন রিশাদ। পরের বলে আরও এক ছক্কা। এরপর মাহিশ থিকশানা, বিনুরা ফার্নান্ডোসহ কাউকে সমীহ করেননি রিশাদ। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে ৫৩ রান করে আউট হন রিশাদ। যেখানে সাত ছক্কার বিপরীতে চারের মার ছিল না একটিও। যদিও দলের হার এড়াতে পারেননি তিনি। চা বাগানে ঘেরা স্টেডিয়ামে আগত দর্শকরা বোধকরি এই আক্ষেপ নিয়েই বাড়ি ফিরেছেন- আহ্, রিশাদের ব্যাটার হওয়ার দিনে স্বীকৃত ব্যাটাররা যদি ‘ব্যাটার’ হতে পারতেন!