বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ‘ফাইনাল’

ভিন্ন দল, চাওয়া অভিন্ন। জিততে মরিয়া দুই দলই। বাংলাদেশের সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের হাতছানি। বিপরীতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অপরাজিত থাকার রেকর্ডে চোখ শ্রীলঙ্কার। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ শনিবার শিরোপার লড়াইয়ে দুই দলের অগ্নিপরীক্ষাও বটে। সমীকরণ এমন, সিরিজ ফয়সালার লড়াইয়ে জয়-মুখোমুখি এই দুই শিবির। সিরিজে এখন ১-১ সমতা। দুই দলের সামনে তাই সমীকরণ- জয় যার, ট্রফিও তার। 

জিতলেই শিরোপা- এমন অঙ্ক সামনে রেখে প্রস্তুত লঙ্কানরা। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাদের আটকাতে সব ধরনের কৌশলই নিয়ে রেখেছে স্বাগতিক শিবির। গতকাল শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ সামনে রেখে বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি।’ 

লাক্কাতুরা চা-বাগানের বুকে সবুজ স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে ৩ রানে হারে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটের বড় জয়ে ঘুরে দাঁড়ায় শান্তর বাংলাদেশ। তাতেই প্রথমবার লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সুযোগ। তাপ ছড়ানো ম্যাচটি শুরু আজ বেলা ৩টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস।

দুই দলের আগের চারটি সিরিজের তিনটিতেই জিতেছে শ্রীলঙ্কা। কেবল ২০১৭ সালে দ্বীপদেশটিতে সফরে গিয়ে ১-১ ব্যবধানে ড্র করতে পেরেছিলেন লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। লঙ্কানদের বিপক্ষে দেশের মাটিতে পরিসংখ্যান অবশ্য সুবিধার নয় টাইগারদের। সাতটি ম্যাচ খেলে জয় স্রেফ দুটিতে। আট বছর আগে ২০১৬ সালে মিরপুরে ২৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর প্রথম ম্যাচে জাকের-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে জয়ের আশাও জাগিয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি টাইগাররা। কিন্তু সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে লঙ্কানদের স্রেফ উড়িয়ে দেন শান্তরা। সিলেটে লঙ্কানদের বিপক্ষে হারের বৃত্ত ভাঙার পাশাপাশি আসে টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়া করে দেশের মাটিতে সবচেয়ে বড় জয়। 

আজ জয় এলেই ইতিহাস। সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাটিতে অজেয় রেকর্ড থাকবে অব্যাহত। লঙ্কান কোচ হাথুরুসিংহে শিষ্যদের নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী, ‘আমরা ইতিহাস গড়ার দোরগোড়ায়। নিজেদের শতভাগ দিয়ে ম্যাচ জিততে চাই।’

গত বছর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর নিউজিল্যান্ডে সিরিজে ছিল ১-১ সমতা । আর তাই আজ গর্ব ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ টাইগারদের। সফরকারীরা অবশ্য নিজেদের গর্ব হারাতে চান না। লঙ্কান ব্যাটিং কোচ থিলিনা কান্দাম্বি বলেছেন, ‘সিরিজ জিততে পারব বলে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমাদের ছেলেরা সেরাটা দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।’

সিলেটের মাঠটি সব সময় ব্যাটিংবান্ধব। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২১০ রান করেছিল লঙ্কানরা। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ২০০ রান পেরিয়েছে দলটি। এদিকে আগের দুটি ম্যাচ কৃত্রিম আলোতে গড়ালেও আজকের ম্যাচটি শুরু হবে দিনের আলোয়। শেষ ম্যাচে দুই দলের জন্যই সমান সুবিধা দেখছেন সংবাদ সম্মেলনে আসা লঙ্কান প্রতিনিধি, ‘রাতের খেলায় শিশির সমস্যা করে। তবে আমার মনে হয় দিনের খেলায় উভয় পক্ষের জন্যই সমান সুবিধা থাকবে।’

আগামী জুনে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে চলতি সিরিজই লঙ্কানদের শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তাই এই সিরিজকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। অলিখিত ফাইনালের আগে সফরকারীদের শক্তিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শেষ ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরছেন শ্রীলঙ্কার নিয়মিত অধিনায়ক হাসারাঙ্গা। আর এতে তাদের শক্তি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন থিলানা, ‘হাসারাঙ্গা দলে ফেরায় আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে। দলের শক্তির পাশাপাশি মনোবলও বৃদ্ধি পাবে।’

হাসারাঙ্গার ফেরাটাকে খুব একটা হিসাবের মধ্যে নিচ্ছেন না স্বাগতিক দলের কোচ হাথুরু ‘সে অন্যদের মতোই একজন ক্রিকেটার।’ তবে লঙ্কান দলকে সমীহ করছেন টাইগার কোচ, ‘আমরা সিরিজটা জেতার মতো অবস্থানে আছি। আমাদের লক্ষ্য ম্যাচটা জেতা। তবে এটাও বলব, শ্রীলঙ্কা খুবই ভালো টি-টোয়েন্টি দল।’