টি টোয়েন্টি সিরিজ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪ ২২:২৫ পিএম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪ ২৩:৪৭ পিএম
ম্যাচ জয়ের নায়কেরা
সর্বোচ্চ রান তুলে হয়েছেন ‘ম্যাচসেরা’। নিজের প্রশংসা কী আর নিজে করা যায়? করলেও বিষয়টা দৃষ্টিকটু। ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেল থেকে ব্যাটারদের প্রসঙ্গ তোলা হলে লিটন-সৌম্য ও তাওহীদ হৃদয়ের পক্ষে সাফাই গান নাজমুল হোসেন শান্ত, ‘বোলাররা দারুণ করেছেন। কন্ডিশন বিবেচনায় যা দেখানোর সর্বোচ্চটাই দেখিয়েছে।’ তবে আজ ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেওয়ার আসল নায়ক ঠিকই ব্যাটাররা। মানছেন বিপক্ষে দলের অধিনায়কও। স্বাগতিকদের সমতায় ফেরার গল্পে বাংলাদেশি ব্যাটারদের হিরো বানিয়েছেন চারিথ আসালঙ্কা।
প্রথম ম্যাচে জয়। লঙ্কানদের দুইশোর্ধ্ব সংগ্রহ আঙুল ছোঁয়া দূরত্বে এসে থামে বাংলাদেশ। বাঁচা-মরা ম্যাচে আর ভুল হয়নি। ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় নাজমুল হোসেনের দল। বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টাইগারদের ব্যাটিং আমন্ত্রণে প্রথমে ব্যাটিং করে ১৬৫ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে উইকেট হারালেও দুটি অনবদ্য জুটি দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়। জবাবে বাংলাদেশের দুই ওপেনার দেখায় বাজিমাত। দুই ওপেনার ৬৮ রানের জুটি গড়েন। সৌম্য ফিরলে ভাঙে সে জুটি। তবে শেষের দিকে শান্ত-হৃদয়ের জুটি দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। আর ১১ বল হাতে রেখে সমতায় ফেরে লাল-সবুজের দল।
এ দিন বাংলাদেশের ইনিংসে রিভিউ নিয়ে বেশ বিতর্ক হয়। বাংলাদেশের ইনিংসের তখন ৩.১ ওভার। বোলিংয়ে বিনুরা ফান্দার্নো। স্ট্রাইক প্রান্তে সৌম্য সরকার। শর্ট লেংথের বলে সপাটে পুল করেন বাংলাদেশের ওপেনার। বলটি তালুবন্দি করেন কুশল মেন্ডিস। মুহূর্তেই আঙুল তুলে ‘আউট’ হওয়ার ইঙ্গিত দেন আম্পায়ার গাজী সোহেল। বটম-এজড হয়েছেন সৌম্য, এমনটাই ধারণা তার। বিষয়টি আমলে নেননি, আপিল করে বসেন সৌম্য। মাঠের আম্পায়ার টিভি আম্পায়ার ‘রিভিউ’ চেকের সংকেত পাঠান। চেকে আল্ট্রা এজে স্পাইক দেখায়। তবে টেলিভিশন আম্পায়ার মাসুদুর রহমানের দাবি, স্পাইক দেখানোর সময় বল ও ব্যাটের মধ্যে ‘গ্যাপ’ দেখেছেন তিনি। বড় পর্দায় স্পাইক দেখে সৌম্য তো তখন মাঠ ছাড়ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পান। যদিও এমন সিদ্ধান্ত মনঃপূত হয়নি শ্রীলঙ্কার। তাদের আফসোস করতে দেখা গেছে।
বিতর্কিত ‘রিভিউ’ ঘটনার পর সৌম্য বেশিক্ষণ টিকেননি। টানেল ধরে প্যাভিলিয়নে ফিরতে সময় নেননি লিটন দাসও। তবে নাজমুল আজ সত্যিই শান্ত ছিলেন। ধীরে এবং ধরে পথ চলাতে সমাধান খুঁজছেন। প্রথম ম্যাচের মতো আজও শুরুতে সময় নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। যদিও এবার খোলস ছেড়ে বের হয়েছেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন আগের ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া তাওহীদ হৃদয়। দুজন শান্ত সৌম্যভাবে এগোতে থাকেন। ক্রমান্বয়ে জয় থেকে অপেক্ষার দূরত্ব কমান। আর শেষ পর্যন্ত ১১ বল হাতে রেখে জয় এনে দেন।
জয়ের দিনে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। ৩৮ বলে তিনি ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন। ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেলকে অধিনায়ক বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে কন্ডিশন বদলেছে। আমরা যেভাবে বোলিং করেছি তাতে সত্যিই খুশি। সবাই খুব ভালো বোলিং করেছে। শরিফুল বিপিএলে ভালো বোলিং করেছেন। সে তার ফর্ম ফিরে পেয়েছে। আমি তার ওপর সন্তুষ্ট।’
ব্যাটারদের নিয়ে তার মন্তব্য, ‘সৌম্য এবং লিটন দারুণ শুরু করেছেন এবং শেষদিকে হৃদয় অসাধারণ ছিলেন। এটাই প্রোফার টিম গেইম। অবশ্যই একজন ব্যfটার সবসময় চায় এমন স্কোর করতে। আশা করি আমি আমার ফর্ম কন্টিনিউ করবো।’
চারিথ আসালঙ্কা বলেন, ‘২০-২৫ রান কম হয়েছিল। কামিন্দুর রান আউট হলে চাপে পড়ে যাই। বিশেষ করে এই কন্ডিশনে একজন ব্যাটার হিসেবে আপনাকে রান করতেই হবে। এ কন্ডিশনে বোলারদের বোলিং করা খুবই কঠিন।’ বাংলাদেশের জয়ের ব্যাপারের লঙ্কান অধিনায়ক বলেন, ‘এ জয়ের কৃতিত্ব বাংলাদেশের ব্যাটারদের। বিশেষ করে শান্ত, হৃদয় এবং লিটন ভালো ব্যাটিং করেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৬৫/৫ (কুশল ৩৬, কামিন্দু ৩৭, আসালঙ্কা ২৮, ম্যাথুস ৩২*, শানাকা ২০*; শরীফুল ৪–১–২০–০, তাসকিন ৪–০–৩৮–১,, রিশাদ ৩–০–২১–০, সৌম্য ১–০–৫–১)।
বাংলাদেশ: ১৮.১ ওভারে ১৭০/২ (লিটন ৩৬, সৌম্য ২৬, নাজমুল ৫৩*, হৃদয় ৩২*; ম্যাথুস ২.২–০–২২–০, মাদুশঙ্কা ৪–০–৩৪–০, পাতিরানা ৩.৪–০–২৮–২, শানাকা ১.১–০–১৯–০)।
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন।