হেলাল নিরব, সিলেট থেকে
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৯:৫১ এএম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪ ১২:১৩ পিএম
তিন ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ— পুরোনো ছবি
রোমাঞ্চকর সিরিজের প্রত্যাশা করেছিলেন লঙ্কান কোচ ক্রিস সিলভারউড। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসন শান্তও বলেছিলেন, লড়াই হবে। লাক্কাতুরার চা বাগান ঘেরা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই ঝাঁজ দেখা গেছে প্রথম ম্যাচেই। এবার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ভিন্ন রোমাঞ্চ। স্বাগতিক বাংলাদেশের যেমন সিরিজে টিকে থাকার এবং একই সঙ্গে বৃত্ত ভাঙার। আর সফরকারীদের সামনে আজ সিরিজ জয়ের হাতছানি।
দুই দলের আগের চারটি সিরিজের তিনটিতেই জিতেছে শ্রীলঙ্কা। কেবল ২০১৭ সালে দ্বীপদেশটিতে সফরে গিয়ে ১-১ ড্র করতে পেরেছিলেন লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় টাইগারদের আরেকটি সিরিজে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ। চায়ের দেশ সিলেটে সিরিজের প্রথম ম্যাচে তীরে এসে তরি ডুবিয়েছে বাংলাদেশ। মারকাটারি সংস্করণে রানবন্যা ছোটানো ম্যাচে ৩ রানে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা।
সিলেটের মাঠটি সব সময় ব্যাটিংবান্ধব। এখানে সর্বশেষ গত বছরের জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১৮-২০২৩ এই সময়ের মধ্যে এই মাঠে খেলা পাঁচ ম্যাচের মধ্যে দুটিতে জয় ও তিনটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ সংগ্রহ শ্রীলঙ্কার। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২১০ রান করেছিল লঙ্কানরা।
সোমবার প্রথম ম্যাচেও দুশ রানের গণ্ডি পেরিয়েছে দলটি। এই মাঠে অনুষ্ঠিত ৪৯ ম্যাচের মধ্যে ২৯টিতেই আগে ব্যাটিং করা দল জিতেছে। সেই হিসাবে টস বড় একটি ভূমিকা রাখতে পারে এই ম্যাচে। শিশির একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও এমন উইকেটেরই প্রত্যাশা করছে লঙ্কানরা। উইকেট কেমন হতে পারে, তা দেখতে সফরকারীদের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এসেছিল। প্রথম ম্যাচের মতো আজও বড় রান আশা করছে দুদল।
লঙ্কানদের বিপক্ষে দেশের মাটিতে পরিসংখ্যান অবশ্য সুবিধার নয় টাইগারদের। ছয়টি ম্যাচ খেলে জিতেছে স্রেফ একটিতে। সেই জয়টি এসেছিল আট বছর আগে। ২০১৬ সালে মিরপুরে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ২৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে জাকের-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে জয়ের আশাও জাগিয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি টাইগাররা।
আগামী জুনে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে চলতি সিরিজই লঙ্কানদের শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তাই এই সিরিজকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। বিশ্বকাপ প্রস্তুতির এই সিরিজ লঙ্কানরা ভালোভাবেই শুরু করেছে।
আজ তাদের বিপক্ষে বড় চ্যালেঞ্জে থাকবে শান্তর দল। সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়েও অপরিবর্তিত থাকতে পারে বাংলাদেশের একাদশ। শ্রীলঙ্কাও একাদশ অপরিবর্তিত রাখতে পারে। তবে পেসার মাথিশা পাথিরানাকে হয়তো বাইরে রাখতে পারে সফরকারীরা।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া কিংবা পাকিস্তান-ভারতের মতোই বর্তমান ক্রিকেটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচও এখন দারুণ উপভোগ্য। ২০১৭ সালে নিদাহাস ট্রফি থেকেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের ‘দ্বৈরথ’ পায় নতুন রূপ। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিব-ম্যাথুস আউট বিতর্ক যে দ্বৈরথে বাড়তি মাত্রা যোগ করে।
মাস তিনেক পর যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বসা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখেই গুরুত্ব পাচ্ছে ছোট ফরম্যাটের সিরিজটি। ২০২২ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কোনো সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ, যা বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে শান্তদের। নতুন বছরের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে না পারলেও সিরিজ রক্ষার মিশনে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে মরিয়া বাংলাদেশ।