প্রবা প্রতিবেদক, সিলেট থেকে
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ২৩:৫৪ পিএম
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৪ ২৩:৫৫ পিএম
ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন লিটন দাস— পুরোনো ছবি
জাকের আলী অনিক যখন প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটছিলেন, কমেন্ট্রি বক্স থেকে তখন ভেসে আসছিল— ‘মেনি উইল রিমেম্বার ইট ফর লং টাইম।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেটে হৃদয়ভাঙা হার অনেকের মনেই দাগ কেটে যাবে। কিন্তু বোলিংয়ে মোস্তাফিজুর রহমান অথবা ব্যাটিংয়ে লিটন দাস-নাজমুল হোসেন শান্তরা নিজেদের ভুল কতটা শুধরে নেবেন!
আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রায়ই দেখা যায়, প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দারুণ শুরু করে টাইগাররা, মাঝে ছন্নছাড়া, এরপর লড়াই এবং শেষে আফসোস। সব মিলিয়ে আক্ষেপ বাড়ানো আরেকটি হার। দায়িত্বহীনতার দায়টা সাদা চোখে কখনও নির্বিষ বোলিং, কখনও ব্যাটারদের উইকেট বিলিয়ে আসার দিকে বর্তায়।
ম্যাচের পর ম্যাচ যায়, ওপেনিংয়ে একের পর এক বদল আসে কিন্তু ফল অভিন্ন থাকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি হারটিতেও আছে দায়িত্বহীনতা। ক্রিকেট কোচ এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, প্রতিপক্ষের উইকেট তুলতে না পারা আর ব্যাটিংয়ের শুরুতেই উইকেট হারানো হারের কারণ।
সিলেটে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের তিন পেসারের তিনজনই ওভারপ্রতি খরচ করেছেন দশের বেশি করে রান। দাপুটে শুরু আনা শরিফুল ইসলাম ৪ ওভার শেষে খরচ করেন ৪৭ রান। তাসকিন একটি উইকেট নিলেও ৪ ওভারে দেন ৪০ রান। বোলিংয়ে সবচেয়ে বাজে দিন কাটিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
উইকেটের সম্ভাবনা জাগাতে ব্যর্থ হওয়া পেসার সেদিন খরচ করেন ৪২ রান। শেষ ওভারে তাকে দুটি করে চার-ছক্কায় উড়িয়ে চারিথ আসালাঙ্কা ও সাদিরা সামারাবিক্রমা নেন ২৪ রান। শ্রীলঙ্কাও পায় সিলেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ৩ উইকেটে জমা করে ২০৬ রান। শেষের ওভারে ফিজ যদি আরেকটু মিতব্যয়ী হতে পারতেন তাহলে হয়তো ফল ভিন্ন হতেই পারত!
প্রতিপক্ষের বড় স্কোর গড়াতে বোলারদের ব্যর্থতা দেখছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম, ‘শুরুতে উইকেট পেলেও মাঝখানে উইকেট পাইনি। দুইটা উইকেট পড়ার পর পুরো ওভারে একটা উইকেট পড়েছে। এটা যদি হয় এত বড় পার্টনারশিপ। আমাদের উইকেট নিতে হবে। উইকেট নেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। শেখ মাহেদী দায়িত্ব নিতে পারেনি। মোটেও ভালো বল করেনি। আমাদের পেস বোলারদের কাছ থেকে বেশি আশা করেছিলাম। তারাও দায়িত্ব নিতে পারেনি।’
বোলারদের পর ব্যাটাররাও ছিল ছন্নছাড়া। বিশেষ করে টপ অর্ডার। দুইশ রানের লক্ষ্যে নেমে শূন্য রানে ফিরে চাপ বাড়িয়েছেন লিটন দাস। বড় শটে রানের গতি বাড়ানোর পরিবর্তে ২২ বলে ২০ রান করে চাপ বহুগুণে বাড়িয়েছেন অধিনায়ক শান্ত। তিনে নামা সৌম্যও রাখতে পারেননি মান। চারে তাওহিদ হৃদয় শুরু করলেও হয়েছেন ব্যর্থ। ৪ ওভারে ৩০ রান, নেই টাইগার টপ অর্ডারের চার উইকেট। বাংলাদেশের হার তখনই দেখে ফেলেছিলেন কেউ কেউ। সেখানে ত্রাতা হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলী।
তাদের বীরত্বের পর যদিও শেষ অবধি জয় আসেনি। তবে শুরুর ব্যর্থতার ঘাটতি মনে করিয়ে দিয়েছে বারবার। নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, টপ অর্ডার ব্যাটাররা বিষয়টি যত দ্রুত বুঝবে ততই ভালো, ‘রিয়াদ ও জাকিরের ব্যাটিং দেখার পর নিশ্চয় সবাই অনুভব করেছে যে ওপরে ভালো ব্যাটিং করতে পারলে সব স্বাভাবিক থাকত। আসলে আমরা বেশিই খারাপ খেলেছি। আশা করি সামনে সেটা শুধরে নেওয়া যাবে।