প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ১৩:০৯ পিএম
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জমে উঠেছে শিরোপার লড়াই। সেটিকে আরও মর্যাদাবহ করেছে আর্সেনাল। গতকাল সোমবার রাতে শেফিল্ড ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৬-০ গোলের জয়ে ব্যবধান কমিয়েছে মিকেল আর্তেতার দল। বড় জয়ে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে ব্যবধান এক পয়েন্টে নামিয়ে আনে গানাররা। লিগ টপার লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান সেখানে স্রেফ দুই পয়েন্টের।
রাউন্ড-২৭ শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সংগ্রহ ৬৩ পয়েন্ট। ম্যানসিটি ৬২ এবং আর্সেনালের ৬১ পয়েন্ট। চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যাস্টন ভিলা অবশ্য রেসে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। ভিলার পয়েন্ট ৫৫। অনেকটাই নিশ্চিত ম্যানসিটি, লিভারপুর, আর আর্সেনালের মধ্যেই লড়াইটা হতে যাচ্ছে। সেই লড়াইয়ে সবশেষ ম্যাচে নিজেদের এগিয়ে রেখেছে আর্সেনাল।
প্রতিপক্ষের মাঠে এদিন গোলের নেশায় মেতে ওঠে গানার শিবির। খেলার পঞ্চম মিনিটে শুরু, এরপর প্রথমার্ধের পুরোটা সময় চলেছে গানারদের গোল উৎসব। অতিথি দলটি এই অর্ধেই করেছে ৫ গোল। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচজন খেলোয়াড়কে বদলি হিসেবে নামান মিকেল আর্তেতা। তাতে গোলবৃষ্টি কিছুটা থেমেছে। দ্বিতীয়ার্ধে শেফিল্ডের জাল কেপেছে কেবল একবার। গানারদের হয়ে একটি করে গোল করেছেন মার্টিন ওডেগার্ড, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি, কাই হাভার্টজ, ডেকলান রাইস, বেন হোয়াইট। নিজেদের জালে আত্মঘাতি গোল করেছে শেফিল্ডের জোয়ডেন বোগলে।
আর্সেনাল এদিন কতটা আগ্রাসী আর একপেসে ম্যাচ খেলেছে সেটির নমুনা পাওয়া যেতে পারে তাদের ৮১ শতাংশ বল দখল জেনেই। এদিন তারা ২২টি শটের ১০টি অন টার্গেটে রাখে। গোল হতে পারত আরও কয়েকটি। তবে বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছে গানাররা। এই জয় নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে সবশেষ ৪ ম্যাচেই জয় তুলে নিল এমিরেটসের দলটি। এর মাঝে হেরেছে কেবল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলায়। এফসি পোর্তো মাঠে গিয়ে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ১-০ গোলে হেরে মাঠ ছেড়েছিল আর্সেনাল।
এই ম্যাচে জয় দিয়ে দারুণ এক রেকর্ড গড়ল আর্সেনাল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে কোনো দল তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচে ৫ কিংবা তার বেশি গোল ব্যবধানে জিততে পারেনি। সোমবার রাতে শেফিল্ডকে ৬-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ডটি গড়ে ফেলল আর্সেনাল। এই ম্যাচের আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি বার্ণলির ঘরের মাঠে আর্সেনাল জিতেছিল ৫-০ গোলে। তার আগের ম্যাচে, ১১ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্টহামের বিপক্ষে জয়টি ছিল ৬-০ গোলের।
রেকর্ডময় এমন জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত আর্সেনাল কোচ আর্তেতা। অনেক গোল করার পাশাপাশি তিনি খুশি নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পেরে, ‘দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং আমাদের জন্য দারুণ এক ফলাফল। বিশেষ করে যে পরিমাণ গোল আমরা করেছি এবং কোনো গোল হজম করিনি। আজকে (সোমবার রাতে) আমরা খুবই আগ্রাসী ও ইতিবাচক ছিলাম। আক্রমণভাগে সত্যিকারের মান দেখিয়েছি আমরা। আমরা ছন্দ ধরে রেখেছি, ক্ষুধাটা ধরে রেখেছি। দলের এই ব্যাপারটিই আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে।’
দলের ভেতরের ক্ষুধার কথা আরও একবার আলাদা করে বললেন আর্তেতা। অনুশীলনে সবাই পরস্পরকে উজ্জীবিত করছে এবং নিজেদেরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার তাড়না তিনি দেখতে পাচ্ছেন ফুটবলারদের মনোভাবে, ‘দলের খেলায় ইঙ্গিত আছে যে, ওরা আরও চায়। এটা খুবই ইতিবাচক। এই মুহূর্তে দলের প্রাণশক্তি দারুণ। দল যখন জিততে থাকে, সবকিছুই তখন আসলে সহজ মনে হয়। এই মোমেন্টাম আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে। এটা প্রিমিয়ার লিগ, কাজেই প্রতিপক্ষের মানটা আপনারা জানেন। এখানে সন্তুষ্ট থাকার উপায় নেই। ছেলেদের ভেতর থেকেই সেই তাড়না আসছে এবং প্রতিদিনই অনুশীলনে তা দেখছি আমি। পরস্পরকে উদ্বুদ্ধ করছে তারা এবং একে অপরাকে আরও ভালো করে তোলার চেষ্টা করছ। দলের ভেতর এই রসায়নটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা যা অর্জন করতে চাই, তা করতে হলে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’