প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪ ২২:১৯ পিএম
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৪ ১২:০২ পিএম
কলি ফোঁটার আগেই সুবাস ছড়িয়েছেন। একরাশ অভিমান ছিল। ছিল আক্ষেপও। তবুও চুপ ছিলেন। কষ্টকে ক্লেষ্টতে পরিণত করেছেন। নিজ শহরে ব্যাট উঁচিয়ে ধরার যে কীর্তি প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই গড়েছেন জাকের আলী।
জাকের আজ লিখেছেন দারুণ কাব্য। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মহাকাব্য বললেও দোষের নয়! ১০ বলে ১১ রান। ধুয়োধ্বনি গ্যালারিজুড়ে। সেখান থেকেই বাকি ২৪ বলে ৫৭। নিমিষেই বদলে গেল দৃশ্যপট। যাতে ছিল
৬ ছক্কা এবং ৪ বাউন্ডারি। স্ট্রাইক রেট ২০০+। জাকের যতটা না দৌড়ে রান নিয়েছেন, তার
চেয়েও বেশি বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। এমন ইনিংস সচরাচর কবে দেখেছে টাইগার
ভক্তরা!
এক
খণ্ড উইলো টুকরো দিয়ে বোলারদের ছাতু বানিয়ে জাদুকর যখন ফিরছেন, সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের
দশর্করা দাঁড়িয়ে। গ্যালারিতে লাল-সবুজের ঢেউ। জাকের, জাকের গর্জন। দর্শকদের গগণবিধারী
চিৎকার। ঘরের ছেলের বিরাট কীর্তি। কীর্তি হয়েছে ঠিকই। খেলেছেনও সর্বোচ্চ উজাড় করে।
গতিপথ থেকে ছিটকে পড়া লাল-সবুজের লাগাম টেনে থেমেছেন আঙুল ছোঁয়া দুরত্বে। তাতে আক্ষেপ
বাড়িয়েছেন বৈকী।
ইশ...।
জাকের যতটা না আক্ষেপ করেছেন। তারচেয়েও বেশি মুষড়ে পুড়েছে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ।
তবে যে খেলা দেখিয়েছেন তাতে মনকুঠুরে জায়গা করে নিয়েছেন সবার। নজর কেড়েছেন ম্যানেজম্যান্টেরও।
বিশ্ব ক্রিকেটের ফ্রাঞ্চাইজিও হয়তো পাখির চোখ করেছেন জাকেরের এমন দুর্দান্ত ব্যাটিং।
শ্রীলঙ্কা
সিরিজে ঘোষিত স্কোয়াডে ছিলেন না। নির্বাচকদের ভাবনায় জাকের ছিলেন কি না, জানা যায়নি।
২৮ বর্ষী জাকের ওসবে দৃষ্টিপাতও করেননি। যা দরকার, রয়েসয়ে করে গেছেন। নিজেকে প্রমাণের
চেষ্টাগুলো বিপিএলে উপস্থাপন করেছেন। ফলও পেয়েছেন হাতেনাতে। ছোটবেলা থেকে জাতীয় দলে
খেলার স্বপ্নে বিভোর থাকা জাকের যে এভাবে রাঙিয়ে দেবেন, কত জনইবা জানতো।
বিপিএলে ১৪১ ছাড়ানো স্ট্রাইক রেটকে জাতীয় দলে পা রেখে বাড়িয়ে করেছেন ২০০। হয়তো সেটা আরও বাড়বে। আক্ষেপ কমতে পারে বিসিবিরও। একজন যোগ্য টেলার এন্ডারের যে অভাব, হয়তো সেটি মোচন হতে যাচ্ছে শিগগিরই। জাকেরও কষ্টে বিবশ না হয়ে নতুন করে জেগে উঠবেন অন্য কোনো ম্যাচে।