প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৫ এএম
খেলা শুরুর ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোল উদযাপন। ছয় মিনিট পর রেড ডেভিলরা উদযাপনে মাতে দ্বিতীয় গোলের। কম যায়নি লুটন টাউনও। ওই গোলের ৮ মিনিটের মধ্যেই এক গোল পরিশোধ করে দেয় তারা। খেলার ১৪ মিনিটের মধ্যে তিন গোলের রোমাঞ্চ দেখে মাঠে থাকা দর্শকেরা। তবে শুরুর এই গোল উৎসব পরে যদিও আর দেখা যায়নি। ব্যবধান ধরে রেখে প্রিমিয়ার লিগে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে এরিক টেন হাগের দল।
রাসমাস হজলান্ডের জোড়া গোলে কেনিলওর্থ রোডে রোববার ২-১ ব্যবধানে লুটনকে হারিয়েছে ম্যানইউ। চলতি প্রিমিয়ার লিগে এই প্রথম টানা চার ম্যাচে জিতল ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি। দুর্দান্ত জয়ের পথে দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন হজলান্ড। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টানা ছয় ম্যাচে জালের দেখা পেয়েছেন তিনি। ২১ বছর ১৪ দিন বয়সে রেকর্ডটি গড়লেন হজলান্ড। আগের রেকর্ড ছিল নিউক্যাসলের মিডফিল্ডার জো উইলকের, ২১ বছর ২৭২ দিন বয়সে।
খেলা শুরুর বাঁশি বাজতেই আক্রমণ শাণায় লুটন। প্রতিরোধ করে পাল্টা-আক্রমণে ওঠে ম্যানইউ। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার আমারি বেল বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তুলে দেন হজলান্ডের পায়ে। প্রতিপক্ষের এমন উপহার পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠান তরুণ ডেনিশ ফরোযার্ড। ম্যাচের ঘড়িতে সময় তখন ৩৭ সেকেন্ড! চলতি প্রিমিয়ার লিগে রেড ডেভিলদের যা দ্রুততম গোল।
সপ্তম মিনিটে আবারও ম্যানইউর গোল এবং উদযাপনের মধ্যমণি হজলান্ড। এই গোলে অবশ্য বড় কৃতিত্ব আরেক তরুণ ফরোয়ার্ড আলেজান্দ্রো গার্নাচোর। ডি-বক্সের মুখ থেকে জোরাল ভলি করেন এই আর্জেন্টাইন, আর কাছের পোস্টে দারুণ ভঙ্গিতে একেবারে ঠিক সময়ে শরীরটাকে একটু বাঁকা করেন হজলান্ড, বল তার বুকে লেগে গোললাইন পেরিয়ে যায়। প্রিমিয়ার লিগে এই প্রথম কোনো ম্যাচে জোড়া গোল করলেন হজলান্ড। টানা ৬ ম্যাচে গোল পেলেন তিনি।
লুটনও শুরু থেকে প্রতিপক্ষের চোখে-চোখ রেখে লড়াই করতে থাকে। তাতে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে লড়াই। চতুর্দশ মিনিটে গোলও পেয়ে যায় দলটি। কাছ থেকে হেডে ব্যবধান কমান ইংলিশ ফরোয়ার্ড কার্লটন মরিস। বিরতির আগে অল্পের জন্য বেঁচে যায় অতিথিরা। লুটনের ইংলিশ মিডফিল্ডার অ্যালফি ডাউটির নিচু শট পোস্টের পাশ ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ১৫ মিনিটে দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করে ম্যানইউ, কিন্তু জালের দেখা মেলেনি। ৫৭তম মিনিটে মার্কাস রাশফোর্ডের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর ব্রুনো ফার্নান্দেজ গোলরক্ষককে কাটিয়ে কোণাকুণি শট নেন; কিন্তু দারুণ স্লাইডে রুখে দেন লুটনের মিডফিল্ডার সাম্বি লোকোঙ্গা।
৬৬তম মিনিটে ফের প্রতি-আক্রমণে ওঠে ম্যানইউ। সতীর্থের থ্রু পাস ধরে গার্নাচো ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে, গোলরক্ষককে কাটাতে গিয়ে একটু গড়মিল হয়ে যায়, তারপরও বল নিয়ন্ত্রণেই ছিল, কিন্তু পরে আর ঠিকমতো শট নিতে পারেননি তিনি।
৭৭তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণের ভালো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি হজলান্ড। গার্নাচোর কাটব্যাক ধরে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি।
শেষ দিকে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে পয়েন্ট তালিকার ১৭ নম্বরে থাকা লুটন। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ভাগ্য বিরূপ না হলে গোল পেয়েও যেত তারা, রস বার্কলির হেড ক্রসবারের ওপরের অংশে লাগে।
তিন পয়েন্ট নিশ্চিত হয় ম্যানইউর। মৌসুমের প্রথমভাগে খারাপ সময়ে ঘুরপাক খাওয়া দলটি এখন শীর্ষ চার নম্বর দলের থেকে ৫ পয়েন্ট দূরে। ২৫ ম্যাচে ১৪ জয় ও ২ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৪৪। তাদের ওপরে টটেনহাম হটস্পারের পয়েন্ট ৪৭। আর চার নম্বরে অ্যাস্টন ভিলার পয়েন্ট ৪৯। টেবিলের চূড়ায় লিভারপুলের পয়েন্ট ৫৭। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আর্সেনাল। ৫৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার দল অবশ্য একটি ম্যাচ কম খেলেছে।