প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪১ পিএম
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৮ পিএম
নেটে অনুশীলনের সময় বলের আঘাতে মাথায় চোট পান মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় বাঁহাতি এই পেসারকে নেওয়া হয় চট্টগ্রামের ইমপেরিয়াল
হাসপাতালে। সেখানে তার মাথার সিটি স্ক্যানের পর ক্ষতস্থানে পাঁচটি সেলাই করা
হয়েছে। স্ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী মোস্তাফিজকে নিয়ে গুরুতর কোনো শঙ্কা নেই। আগামী ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকবেন এই টাইগার পেসার। তবে আপাতত ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মোস্তাফিজের আঘাত ঠিক কতখানি গুরুতর তা নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ
করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের টিম ফিজিও জাহিদুল ইসলাম সজল। ইম্পেরিয়াল
হাসপাতালের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দলের ফিজিও জানান, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি মুস্তাফিজের
মাথায় পাঁচটি সেলাই করা হয়েছে। নিউরোসার্জন তাকে দেখেছেন। আপাতত কোনো শঙ্কা নেই।
তিনি নিজের নাম বলতে পারছেন, সব বিষয়ে যোগাযোগ করতে পারছেন। কনকাশনেরও কোনো লক্ষণ
নেই।’
মোস্তাফিজকে ঢাকায় নেওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না তা জানতে চাইলে সজল
বলেন, ‘এখানে আমরা নিউরোসার্জনকে যেহেতু পেয়েছি। সিটি স্ক্যান যেহেতু নরমাল আছে।
ঢাকাতে আমরা ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর সঙ্গে আপডেট রাখছি।
সব পেপার আমরা ঢাকাতে ফরোয়ার্ড করেছি। ডাক্তার দেবাশীষ উনার সিটি স্ক্যান
পেপারগুলো দেখেছেন। আমরা এখনও ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে যাইনি।’
এর আগে ফিজের স্ক্যান রিপোর্ট নিয়ে কুমিল্লা এক বিবৃতিতে এই ফিজিও জানান,
‘স্ক্যান করানোর পর আমরা জানতে পেরেছি যে চোট শুধুই বাইরের অংশে। অভ্যন্তরীণ কোনো
রক্তক্ষরণ নেই। সার্জিক্যাল টিম ক্ষতস্থানে সেলাই করে দিয়েছে। এখন তিনি
নিউরোসার্জন দলের অধীনে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার
জিসিআই স্কেল ১৫/১৫। বর্তমানে তিনি বিপদের বাইরে আছেন এবং আশা করছি ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর আমরা তাকে টিম হোটেলে নিয়ে যেতে পারব।’
জিসিআই স্কেল ১৫ থাকার অর্থ পুরোপুরি সজাগ ও সজ্ঞানে আছেন মুস্তাফিজ।
দলের পক্ষ থেকে ওই বিবৃতি দেওয়ার আগে হাসপাতালে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে
জাহিদুল ইসলামও বলেন, মাথায় সেলাই লাগলেও বড় কোনো শঙ্কা নেই মুস্তাফিজকে ঘিরে। মূলত
সতর্কতা হিসেবেই হাসপাতালে রাখা হয়েছে মুস্তাফিজকে।
এ প্রসঙ্গে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের পরামর্শক
ডা. মঈনউদ্দিন এম. ইলিয়াছ বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমানের সিটি স্ক্যানে আমরা ভয়ের
কোনো কারণ পাইনি। কিছুটা হেমাটমা (রক্তজমাট) আছে। সেটা মস্তিষ্ক ও হাড়ের বাইরে।
অভ্যন্তরীণ কোনো হেমাটমা নেই। তবে ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগে কাউকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে
না।’
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আজ সকাল ১০টা
থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দল অনুশীলন করছিল। মোস্তাফিজ নেটে বোলিং করার সময়ই
মাথায় চোট পান। বল করে রান আপ নিতে ফিরছিলেন তিনি। এ সময় কুমিল্লার প্রধান কোচ
মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ডাক পড়ে মোস্তাফিজের। মাথা ঘুরিয়ে কোচের দিকে যাওয়ার সময়ই
বল মোস্তাফিজের মাথার বাঁ দিকে আঘাত করে।
বলের আঘাতে মোস্তাফিজের মাথার পেছনের দিক ফেটে যায়। রক্ত বন্ধ করতে
মাঠেই কুমিল্লার চিকিৎসক দল মোস্তাফিজের মাথায় ব্যান্ডেজ করেন। এরপর তাকে
অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত
কুমিল্লার হয়ে ৯ ম্যাচ খেলেছেন মোস্তাফিজ। তার শিকার ১১ উইকেট। ৩২ রান দিয়ে ৩
উইকেট ছিল এবারের বিপিএলে মোস্তাফিজের সেরা বোলিং।