প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০৬ এএম
সাকিব গড়েছেন ডাবল রেকর্ড— রংপুর রাইডার্স
কেউ তাকে ডাকেন রেকর্ড আল হাসান বলে। কারও মতে তিনি রেকর্ডের রাজপুত্র। সাকিব আল হাসান খেলতে নেমেছেন আর রেকর্ড হয়নি, এমন বোধহয় খুব কমই পাওয়া যাবে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দিনটিতেই যেমন সাকিব প্রথমে ব্যাটিংয়ে, এরপর গড়েন বোলিংয়ে রেকর্ড।
সাকিবের একাধিক রেকর্ডের দিনে পাত্তা পায়নি শুভগত হোমদের চট্টগ্রাম। ক্যাচ মিস আর নুরুল-নিশামদের কাছে তুলোধুনো হওয়া চ্যালেঞ্জার্সরা হেরেছে বড় ব্যবধানে। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ওঠার ম্যাচে সাকিবও দেখিয়েছেন দাপট। আগের ম্যাচে মোমেন্টাম ফিরে পাওয়া সাকিব এদিন ছুঁয়েছেন দুটি রেকর্ড। রংপুরের তারকা ব্যাটার দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ছুঁয়েছেন ৭০০০ রানের মাইলফলক। টি-টোয়েন্টিতে ৭০০০ রান ও ৪০০ উইকেট আছে এমন বোলার হিসেবেও রেকর্ড গড়েছেন সাকিব।
রংপুর রাইডার্সের হয়ে ব্যাট হাতে গতকাল মিরপুরে ২৭ রান আনার পর বোলিংয়ে সাকিব নিয়েছেন দুটি উইকেট। তাতেই তার উইলো দাঁড়িয়েছে এমনÑ মোট রানসংখ্যা ৭০১৯, আর উইকেট সেখানে ৪৭৬টি। ৪২২ ম্যাচে ৩৮৭ ইনিংসে তিনি গড়েছেন এই কীর্তি। সাত হাজারের বেশি রান করা ক্যারিয়ারে সাকিবের পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস আছে ২৯টি ম্যাচে। বিপিএলের গত আসরে ফরচুন বরিশালের হয়ে রংপুরের বিপক্ষে করা অপরাজিত ৮৯ রান তার সর্বোচ্চ।
সাকিব অবশ্য এই রেকর্ডে প্রথম নয়। তার আগে জাতীয় দলের তারকা ওপেনার তামিম ঢুকেছেন সাত হাজারি রানের ক্লাবে। তামিম ২৫৫ ম্যাচের ২৫৪ ইনিংসে করেছেন ৭ হাজার ৩৮৬ রান। ৪৬টি ফিফটির সঙ্গে ৪টি শতক করেছেন অভিজ্ঞ ওপেনার।
ছোট কিন্তু দলের পক্ষে ইমপ্যাক্টফুল ইনিংস খেলার পথে সাকিব বসেছেন আন্দ্রে রাসেলের পেছনে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ক্যারিবিয়ান তারকার পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার সাকিব, যার সংগ্রহে ৪০০ উইকেট এবং সাত হাজারের বেশি রান। রেকর্ড আল হাসানের আগে রেকর্ড ছোঁয়া রাসেল ব্যাটিংয়ে ৭ হাজার ৯৯২ রান করেছেন, সঙ্গে বল হাতে নিয়েছেন ৪২৪ উইকেট। সাকিব সেখানে ৪২২ ম্যাচে ছুঁয়েছেন অনন্য রেকর্ডটি। টি-টোয়েন্টিতে বোলিংয়ে পাঁচবার ৫ ও দশবার ৪ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। অবশ্য এ তালিকায় খুব দ্রুতই দুই থেকে তিনজন হয়ে যেতে পারে। ক্যারিবিয়ান আরেক তারকা ডোয়াইন ব্রাভো নিঃশ্বাস ফেলছেন সাকিব ও রাসেলের ঘাড়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ব্যাটিংয়ে করেছেন ৬৯২০ রান।
সাকিবের ডাবল রেকর্ডের দিনে দর্শকদের মাঝে স্বস্তি, অলরাউন্ডার ফিরেছেন নিজের চেনা রূপে। গতকাল ব্যাটিংয়েও সেটির রূপ দেখিয়েছেন। ১৬ বলের ইনিংসে সাকিব খেলেছিলেন ৩ চার ও ১ ছক্কায় ঝোড়ো ইনিংস। আসরজুড়ে ভালো করে যাওয়া বোলিংয়েও এদিন রেখেছিলেন বড় অবদান। ৪ ওভারে ২৪ রান খরচ করার দিনে ফিরিয়েছেন চট্টগ্রামের ওপেনার জশ ব্রাউন ও টপ অর্ডার ব্যাটার সাহাদাত হোসেনকে। সাকিবের অলরাউন্ড পারফর্মের দিনে ম্যাচের সেরা হয়েছেন অবশ্য জিমি নিশাম। তবে সাকিব ফিরেছেন এই স্বস্তি ছড়িয়েছে রাইডার্সদের শিবিরে।
চোখের সমস্যায় ভোগা সাকিবকে নিয়ে কথা চলছিল, বোলিংয়ে নিজের সেরাটা দিতে পারা সাকিব আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘জীবনে কখনও একটি পরিচয় নিয়ে খেলিনি।’ রংপুরের শেষ দুই ম্যাচে স্বরূপে ফেরা সাকিবকেই দেখা গেছে। গতকাল চট্টগ্রামকে চূর্ণ করে তো ডাবল রেকর্ডও করে বসেছেন সাকিব।