× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সর্বজয়ী সাগরিকা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০০:২০ এএম

আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৫০ এএম

ভারতের বিপক্ষে ট্রফি জয়ের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবেগাপ্লুত মোসাম্মৎ সাগরিকা। ছবি : আলী হোসেন মিন্‌টু

ভারতের বিপক্ষে ট্রফি জয়ের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবেগাপ্লুত মোসাম্মৎ সাগরিকা। ছবি : আলী হোসেন মিন্‌টু

ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ের অন্তিমলগ্নে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন মোসাম্মৎ সাগরিকা। ৯৩ মিনিটে তার গোলেই কমলাপুর স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার উঠে লাল-সবুজের বিপ্লব। লাইফলাইন পায় বাংলাদেশ। এরপর পেনাল্টি শুটআউটে ১১ বার জালের দেখা পান আফিদা খন্দকার ও সাগরিকারা। যদিও শেষ পর্যন্ত শিরোপা ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে সাইফুল বারী টিটুর দল। শিরোপা হারায়নি বাংলাদেশ। যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারতের সঙ্গে। ট্রফির উল্লাস করতে করতে শেষ পর্যন্ত হোটেলে ফেরেন জুনিয়র বাঘিনীরা। তাদের সেই ট্রফিতে মিশে আছে সাগরিকার অশ্রু- সর্বোপরি আনন্দাশ্রু। 

ম্যাচ শেষে মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের সবুজ টার্ফে সংবাদকর্মীরা খুঁজে নেন সাগরিকাকে। যখন তিনি তার মা-বাবার সঙ্গে ভাগ করছেন অর্জিত শিরোপা পাওয়ার আনন্দ। মাকে জড়িয়ে আবেগাপ্লুত সাগরিকার সেই স্থীরচিত্র যা এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। সাগরিকা এবং তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের এই প্রতিবেদক। সাগরিকার বাবা লিটন আলী মেয়ের খেলা দেখতে আসেন ঢাকায়। মেয়ের খেলা দেখার জন্য ঠাকুরগাঁও থেকে ট্রেনে দাঁড়িয়ে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন তারা। এক সময় মেয়েকে ফুটবল খেলতে দিতে চাইতেন না বাবা লিটন আলী। এখন সেই মেয়েই তার মুখ উজ্জ্বল করেছেন, তাই তো ম্যাচ শেষে মাঠের মধ্যে অশ্রুসিক্ত হয়েছেন বাবা লিটন ও মা আনজু বেগম। অশ্রুসিক্ত নয়নে বাবা লিটন আলী বলেন, ‘মেয়ের এমন সাফল্যে ভালো লাগছে। কারণ মাঠে এসে মেয়ের খেলা দেখতে পারব এটা কখনও ধারণা ছিল না। পরে ওয়ালটনের কল্যাণে আমি মাঠে এসে মেয়ের খেলা দেখতে পারছি, এজন্য ভালো লাগছে।’

সাগরিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘ফুটবল খেলে সে এগিয়ে যাবে। দেশের জন্য ভালো কিছু করবে, এটাই একমাত্র ভাবনা। আগে চিন্তাভাবনা করেছিলাম মেয়েকে ফুটবল খেলায় দেব না। ফুটবল খেললে মানুষ খারাপ ভাববে, খারাপ বলবে, মেয়ে মানুষের জন্য ফুটবল খেলা ভালো না। এমন অনেক কিছুই ভাবতাম, চারদিক থেকে শুনতাম। এখন আমি মনে করি আমার সিদ্ধান্ত এবং মানুষের সিদ্ধান্তগুলো ভুল ছিল। আর আমার মেয়ের সিদ্ধান্তটাই ছিল সঠিক। আমি চাচ্ছি আমার মেয়ে আরও ওপরের লেভেলে যাক, দেশের জন্য কিছু করুক। ফুটবল ফেডারেশনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, মেয়ে এখানে খেলার সুযোগ পাচ্ছে, দেশের জন্য কিছু করতে পারছে, এতেই আমি খুশি।’

এদিন প্রায় পুরোটা সময় মাঠে অশ্রুসিক্ত ছিলেন সাগরিকার মা আনজু বেগম। ফ্লাডলাইটের আলো আর ক্যামেরার লেন্সে তার চোখের জল চিকচিক করছিল। তবে এ কান্না কোনো শোকের না, মেয়ের অর্জনে আনন্দের কান্না। অশ্রুসিক্ত নয়নে আনজু বেগম বলেন, ‘ফুটবল খেলার জন্য আমার মেয়ে অনেক কষ্ট করেছে, সবার মতের বিরুদ্ধে গিয়েই সে ফুটবল খেলেছে। তবে তার (সাগরিকা) জেদ ছিল, সে ফুটবলার হবে। তাকে আমরা কিছুই দিতে পারিনি। আমাদের কাছে একজোড়া বুট চেয়েছিল, বুটের অনেক দাম, তাই তাকে বুট কিনে দিতে পারিনি।’

বাবা-মায়ের সেই সাগরিকা কেবল ফাইনালেই ত্রাতা নন, পুরো আসরেই বাংলাদেশের জিয়নকাঠি। রবিন লিগের প্রথম ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল, পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জয়সূচক গোলটি তার। এরপর ভুটানের বিপক্ষে বিশ্রাম নিয়ে নামেন ফাইনালে। সেখানে গোল পেয়েছেন জুনিয়র বাঘিনীদের নাম্বার টেন। সব মিলিয়ে আসরে চার গোল করেন সাগরিকা। টুর্নামেন্টে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। হট্টগোল ফাইনালের পর এই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করা হয়নি। তবে সেরার তালিকায় দারুণভাবেই ছিলেন সাগরিকা। ম্যাচ শেষে তাই সেরা খেলোয়াড় না হতে পারার আক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘না, আমার সেটি নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। ফাইনালে গোল করতে পেরেছি, দলকে চ্যাম্পিয়ন (যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন) করতে পেরেছি এতেই খুশি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা