প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৫৮ পিএম
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৪৭ পিএম
উয়েফার সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন; ফাইল ছবি
২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো উয়েফার সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন আলেক্সান্দার সেফেরিন। এরপর টানা তৃতীয় মেয়াদে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির গুরুদায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কিন্তু ২০২৭ সালে উয়েফা সভাপতি পদে টানা চতুর্থবারের মতো আর নির্বাচন করতে চাইছেন না ৫৬ বছর বয়সি এই স্লোভেনিয়ান।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত এবারের উয়েফার কংগ্রেসে সংবিধানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনের বিষয়ে উয়েফার সদস্য দেশগুলো একত্রিত ভাবে ভোট দিয়েছে। এর মধ্যে ২০৩২ সাল পর্যন্ত সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবেও অনেকেই সেফেরিনকে বেছে নিয়েছে। আর এসবের পরপরই সেফেরিন নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন।
উয়েফার পদ ছাড়া প্রসঙ্গে সেফেরিন বলেছেন, ‘প্রায় ছয় মাস আগে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০২৭ সালে আর সভাপতি পদে নির্বাচন করব না। এর মূল কারণ হচ্ছে কিছু সময় পর প্রতিটি সংস্থায় নতুন মানুষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রায় সাত বছর যাবৎ আমি আমার পরিবার থেকে দূরে রয়েছি।’
তার ভাষ্যে করোনা মহামারির কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে গিয়ে তিনি বেশ পরিশ্রান্ত হয়ে গেছেন। ওই সময়গুলোতে এত বড় দায়িত্বে থাকা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ ছাড়াও বিতর্কিত সুপার লিগের পরিকল্পনা নিয়ে তাকে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। তবে নির্বাচন না করার কথা আগে কারও সঙ্গে আলোচনাই করেননি সেফেরিন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এর আগে আমি ইচ্ছে করেই আমার পরিকল্পনা কাউকে বলিনি। কারণ কিছু মানুষের আসল চরিত্র আমি দেখতে চেয়েছি এবং আমার সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আমি কংগ্রেসকে প্রভাবিত করতে চাইনি। আমি চেয়েছি তারা নিজেরাই তাদের সিদ্ধান্ত নিক। আমি যা বলছি তার ওপর নির্ভর করে তারা যেন কিছু না বলে।’
সংশোধনীর মধ্যে মূল একটি হচ্ছে তিন মেয়াদের সময়সীমা বাতিল না করা। ফিফাকে নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার বছরই সেফেরিন এই আইন শুরু করেছিলেন। গত এপ্রিলে সেফেরিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয় মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর মাত্র এক সপ্তাহ আগে জিয়ানি ইনফান্তিনো ফিফার সভাপতি পদে পুনর্বহাল হয়েছিলেন।
সেফেরিন চতুর্থ মেয়াদে সভাপতি প্রার্থী হবার বিষয়ে এর আগে আগ্রহ দেখালে ডিসেম্বরে কার্যনির্বাহী সভায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তারই জেরে গত মাসে উয়েফার ফুটবল প্রধান ভোনিমির বোবান পদত্যাগ করেন। ৯০’র দশকে এসি মিলানের সফল দলের সদস্য সাবেক এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার সেফেরিনের পরিকল্পনাকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়টির পক্ষে দুই তৃতীয়াংশ ভোট পড়েছে। ৫৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে একমাত্র ইংল্যান্ড ভিন্নমত দিয়েছে, ইউক্রেন অনুপস্থিত ছিল। এ ছাড়া কংগ্রেসে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৬টি ইউরোপীয়ান দেশ যৌথ ঘোষণায় সুপার লিগের বিরোধিতা করলেও একমাত্র দেশ হিসেবে স্পেন এই তালিকায় অনুপস্থিত ছিল।
স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা এখনও প্রকাশ্যেই এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত আছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ইউরোপের শীর্ষ ১২ ক্লাব নিয়ে সুপার লিগের বিতর্কিত প্রস্তাবে একে একে সবাই সরে এলে এই দুই স্প্যানিশ ক্লাব এখনও তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে।