বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংস্কার
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩১ পিএম
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম- বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই স্টেডিয়াম। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে এই স্টেডিয়ামে কোনো খেলা নেই। মূলত সংস্কার কাজ চলমান থাকায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে খেলা মাঠে গড়ানোর অপেক্ষা বাড়ছে। এদিকে ২০২১ সালের আগস্টে শুরু হওয়া সংস্কার কাজ এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এখনও স্টেডিয়ামের গ্যালারি, ফ্লাডলাইট ও মিডিয়া বক্সের নির্মাণ কাজের সেভাবে কোনও অগ্রগতি নেই। তবে দ্রুতই এই বিষয়গুলো সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী পাপন। স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেই মন্ত্রী সরাসরি মাঠে পা দেন। এরপর খুটিয়ে খুটিয়ে দেখার ও জানার চেষ্টা করেছেন সব বিষয়ে। প্রায় এক ঘন্টা স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ ব্যক্ত করেছেন ক্রীড়া মন্ত্রী, ‘এখানে এসে দেখলাম মূলত দু’টি সমস্যা। একটি স্প্রিংলার (মাঠে পানি দেওয়ার মাধ্যম) আরেকটি মিডিয়া বক্স। সমস্যা টা বুঝলাম। সমস্যা আছে অস্বীকার করার পথ নেই। সমাধানের পথ আছে কিনা দেখব, সম্ভব হলে অবশ্যই করব। তবে খুব একটা অসম্ভব বলে মনে হয় না।’
অবশ্য স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি নতুন মন্ত্রী, ‘ওনাদের কাছ থেকে ডকুমেন্টস না পেলে কমেন্টস করা ঠিক হবে না। এখন একটা কথা বললে হয় এনএসসির ওপর পড়বে, না হয় যারা আমাদের কনসালট্যান্ট অথবা ফুটবল ফেডারেশন...কাজেই কাগজপত্র না দেখে কমেন্টস করা ঠিক হবে না। সমস্যা এখনো আছে। এটাকে নিরসন করা সম্ভব হলে অবশ্যই করব। বড় কোনো সমস্যা থাকলে সেটা দূর করার চেষ্টা থাকবে।’
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের মাঝে পানি ছিটানোর পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত সমালোচনা করে আসছে বাফুফে। তাদের দাবি স্প্রিংলার বদলে পপ-আপ সিস্টেমে পানি দেয়ার। এতে নতুন করে আবার বাজেট বাড়াতে হবে। তবে যেটাই হোক নতুন মন্ত্রী আশাবাদী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার, ‘সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আমরা আর বিলম্ব করতে চাই না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করতে চাই। এর মধ্যে যতটুকু সমাধান করা যায় করা হবে, না হলে নেই। কারণ, এটা স্টেডিয়ামের সংস্কার তাই অনেক কিছুই করা হয়তো সম্ভব না।’
আরও যোগ করেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্টেডিয়ামের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে যেখানে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রতিনিধি, বাফুফের প্রতিনিধি ও একজন টেকনিক্যাল এক্সপার্ট থাকবে। উক্ত কমিটি নির্ধারিত সময় অন্তর অন্তর আমাদের নিকট অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করবে। আমরা লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে পড়ছি কি না, সেটি তারাই আমাদের জানাবে। আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন ও সংস্কার কাজ শেষ হবে।’
এদিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের স্থাপনা নিয়ে ফেডারেশনগুলোর অভিযোগ ক্রীড়াঙ্গনে নিত্য-নৈমত্তিক বিষয়। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম নিয়ে বাফুফের যেমন অসন্তোষ অন্য ফেডারেশনগুলোরও প্রায় একই চিত্র। স্থাপনা তৈরিতে ফেডারেশন ও এনএসসি দূরত্ব ঘোচানোর প্রত্যয় নতুন মন্ত্রীর কন্ঠে, ‘একেক স্থাপনার স্পেসিফিকেশন একেক রকম। প্রতি ফেডারেশনকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন স্থাপনা নির্মাণ, সংস্কার যেটাই হোক একটি ফাইল পাশ হওয়ার পর আর এটা নিয়ে প্রশ্ন থাকা যাবে না।’
এ সময়ে যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ ও মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাফুফে ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।