প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৩৮ পিএম
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দামামা বাজতে শুরু করে দিয়েছে। আগামী ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের দশম আসর। আসন্ন বিপিএল সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে পূর্বাচলে মাসকো-সাকিব ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন শুরু করেছে বিপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেখানেই গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন দলের প্রধান কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
এই সময় নব্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাকিব আল হাসানকে নিয়ে জানতে চাওয়া হয় তার গুরু সালাউদ্দিনের কাছে। এমপি সাকিব প্রসঙ্গে কুমিল্লার কোচ বলেন, ‘রাজনীতির ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নেই। কেউ যদি এমপি বা প্রধানমন্ত্রীও হয়ে যায় সেটা নিয়েও আগ্রহ নেই আমার। সে আমার কাছে আগে থেকে যেমন, আমি আশা করি সাকিব সে মানুষই থাকবে। সে এমপি নাকি মন্ত্রী হলো, সেটা আমার কাছে মুখ্য বিষয় নয়। আমার কাছে মনে হয় আমার সঙ্গে যে সম্পর্ক, সেটাই থাকবে। বাকিটা নিয়ে আমার আসলে কোনো আগ্রহ নেই।'
আগের আসরগুলোর সব ফ্র্যাঞ্চাইজি মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করত। তবে এবার শুধু মিরপুরে নয়, অধিকাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুশীলন করছে নিজেদের পছন্দের মাঠে। কুমিল্লাও অনুশীলনের জন্য নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত মাসকো সাকিব ক্রিকেট একাডেমিকে বেছে নিয়েছে।
এ নিয়ে কুমিল্লার কোচ বলেন, ‘মিরপুরে আগে যখন আরও বেশি উইকেট ছিল, তখনও মাছ বাজারের মতো লাগত। একসঙ্গে অনেক দল মাঠে চলে আসত। এখন জায়গা আরও অনেক ছোট হয়ে গেছে। ফলে এখনও সাতটি দল এলে অনুশীলন করার অবস্থা থাকবে না।’
সালাউদ্দিন আরও বলেন, ‘সব দলই যার যার মতো বেছে নিয়েছে। অন্য দল হয়তো আরেকটা বেছে নিয়েছে। এখানে যেহেতু আমি থাকি, একটু সুবিধা পেতেই পারি। জায়গা ওভাবে ব্যবহার করতে পারি। এ কারণেই এখানে আসা।’
বিপিএলের সঙ্গে একই সময়ে চলবে আরও দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ-২০ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের লিগ আইএল টি-টোয়েন্টি। এ ছাড়া বিপিএলের মাঝপথে শুরু হবে পাকিস্তানের পিএসএলও। সব মিলিয়ে এত টুর্নামেন্টের কারণে ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটারদের বিপিএলে আনাটাই হয়ে গেছে মুশকিল।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মনে করেন, বছরের অন্য কোনো সময়ে উইন্ডো ওপেন করে চালানো যেতে পারে বিপিএল। তাতে বেশ ভালোভাবে এবং সুন্দরভাবে আয়োজন করা যাবে টুর্নামেন্ট।
এ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন বলেন, ‘চাইলে এই টুর্নামেন্ট অনেক সুন্দর করে করতে পারবেন। অনেক ভালো করেই করতে পারবেন। উইন্ডো ওপেন করা কঠিন কিছু নয় কোনো বোর্ডের জন্য। এটা অনেক সহজ। এই টুর্নামেন্ট অনেক ভালোভাবে, অনেক সুন্দরভাবে করা সম্ভব। এবার কিছু জিনিস নতুন আসছে, এটা ভালো দিক।’
সালাউদ্দিন আরও জানান, ‘আমার জানা মতে আমাদের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির কেউ বসেও নেই। আলোচনা করলে কিন্তু অনেক ভালো কিছু বেরিয়ে আসতে পারে। আমরা সব মেইলে পাই।’
বিপিএল থেকে প্রতি বছর ১-২ জন টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ ক্রিকেটার খুঁজে পাওয়ার আশা করে থাকে বিসিবি। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখনও পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায়নি টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সমস্যার জায়গাও ধরিয়ে দিলেন দেশসেরা এই কোচ।
সালাউদ্দিনের ভাষ্য, ‘(বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিপিএলের) ভূমিকা তো আছেই। হয়তো এখান থেকে ১-২ জন টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটার আমরা পেতে পারি। এখন আমাদের যেই জায়গাটাতে ভালো করা দরকার, আমাদের ক্রিকেটাররা ওই জায়গাটায় ভালো করতে পারে না। ৬-৭ নম্বরে হয়তো (জাতীয় দলে) বড় জায়গা খালি আছে। কিন্তু এই জায়গায় দেখা যাবে না যে (বিপিএলে) ওই রকম প্লেয়ার আছে। ওইখানে বড়োসড়ো ক্রিকেটাররা থাকে যারা খেলাটা শেষ করবে। ওইরকম রিসোর্সটা আসলে আমাদের নেই। টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে হলে কিছু কিছু জায়গায় নজর দিতে হবে। সেখানে আমাদের দেশি ক্রিকেটাররা সুযোগ পাচ্ছে কি না তাতে নজর দিতে হবে।’
এ ছাড়া রশিদ খান এবার খেলতে আসবে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন বলেন, ‘নির্ভর করে আসলে। যেভাবে দল গুছানো হয়েছে তার খেলার সুযোগ আছে। ভবিষ্যতে বলে দেওয়া যাবে (খেলবে কি না)।’