আকবর আলীর সাক্ষাৎকার
হেলাল নিরব
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:২২ পিএম
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩১ পিএম
আকবর আলীর হাত ধরেই যুবাদের বিশ্বকাপ জিতেছে বাংলাদেশ— ছবি: আ. ই. আলীম
আকবর আলী খান। নামটা আসতেই ভেসে ওঠে তারুণ্যে ঠাসা এক ছবি, যার মুখে প্রশস্ত হাসি আর হাতে ঝলমলে রুপালি ট্রফি। রংপুরের এই তরুণের হাত ধরেই বাংলাদেশ ২০২০ সালে জিতেছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। সেই সময়ের তরুণ অধিনায়ক বিপিএল সামনে রেখে প্রস্তুত করছেন নিজেকে।
এর ফাঁকে গতকাল বুধবার খোলামেলা আলোচনায় আকবর বলেছেন আসন্ন বিশ্বকাপে অনুজদের সম্ভাবনা নিয়ে। জানিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ চাওয়া, এবং বিপিএলের দল খুলনা টাইগার্সের সম্ভাবনার কথা। ২২ বর্ষী উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের সঙ্গে আলাপনের চুম্বক অংশ তুলে এনেছেন হেলাল নিরব
প্রশ্ন : শিবলি-সিদ্দিকিদের কাছে প্রত্যাশা কতটা?
আকবর আলী : অনুর্ধ্ব ১৯ দল নিয়ে প্রত্যাশা হচ্ছে তারা খুব ভালো করুক। টিম হিসেবে যদি বলেন, আমি এশিয়া কাপ থেকে তাদের ভালো করে দেখেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে , খুবই ভারসাম্যপূর্ণ দল। রাব্বিদের টিমে অলরাউন্ডার বেশি। এখন তারা যদি তাদের সামর্থ অনুযায়ী খেলতে পারে তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু করা সম্ভব।
প্রশ্ন : অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জন্য বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হিসেবে আপনার পরামর্শ কী?
আকবর আলী : পরামর্শ কিছুই নেই, তাদেরকে বলব উপভোগ করতে। অনেক বেশি প্রত্যাশা না রেখে খেলাটা উপভোগ করতেই বলব। অবশ্যই তাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা বিশ্বকাপ খেলতে গেছে তাদের বেশিরভাগ দলই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই যাবে। প্রতিটা ম্যাচ শেষেই তো আপনি চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন না।
আপনাকে সেমিফাইনাল খেলতে হবে, ফাইনাল খেলতে হবে, সেখানে জিততে হবে। শুধু ফাইনাল ফাইনাল করে গেলে তো হবে না। কিন্তু তারা যদি বেসিকটা ফলো করে, প্রসেস মেনে ম্যাচ ধরে ধরে খেলে, তাহলে প্রত্যেকটা ম্যাচে ভালো করা সম্ভব। একটা লক্ষ্য থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হতেই হবে এইটা থাকলে একটা অঘোষিত চাপ পড়ে খেলোয়াড়দের ওপর।
প্রশ্ন : আপনারা যেখানে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় আরেকটি যুব বিশ্বকাপ। ২০২০ ও ২০২৪ দলের মিল খুঁজে পান কি না? বা পার্থক্য কোথায়?
আকবর আলী : অনূর্ধ্ব-১৯ দলের স্কোয়াড় যেহেতু দুই বছর পরপর পরিবর্তন হয়, তাই এখানে মিল তেমন পাবেন না। আপনি যেমন ২০২২ সালের সঙ্গে ২০২৪ সালের মিল পাবেন না, তেমনি ২০২৬ সালে যারা খেলবে তাদের মাঝেও তেমন মিল পাবেন না। প্রতিটা দলের আলাদা আলাদা ক্যারেক্টার থাকে, আলাদা শক্তির জায়গা থাকে, ভিন্ন রকমের দুর্বলতাও থাকে।
আমাদের বিশের দলটির সঙ্গে চব্বিশের দলটিরও অবশ্যই পার্থক্য আছে। একটা যদি বলি, এই দলটাতে অনেক বেশি অলরাউন্ডার। আমাদের টিমে অত বেশি ছিল না। সত্যি কথা বলতে আমাদের অলরাউন্ডার ছিল হাতেগোনা। শুধু শামীম পাটোয়ারী বাদে বলার মতো কেউ ছিল না বললেই চলে।
তবে ব্যাটিং, বোলিং এবং বাকি সবকিছু বিবেচনায় আনলে কিছু পার্থক্য আছে। আমার মতে, আমাদের চেয়ে এই দলটি এগিয়ে আছে। অলরাউন্ডার বেশি থাকলে অধিনায়ক বা কোচের হাতে অপশন থাকে। ঘাটতি কমে যায়, বিভিন্ন ডিসিশন মেকিং করতে সুবিধা হয়। হাতে বিকল্প বেশি থাকে— তাই ভালো করার সুযোগও বেশি থাকে। আমি বলব এটা ভারসাম্যপূর্ণ দল।
প্রিন্ট সংস্করণে সাক্ষাৎকার পড়তে ক্লিক করুন...
প্রশ্ন : বিপিএল নিয়ে আপনার পরিকল্পনা জানতে চাচ্ছি...
আকবর আলী : খুলনা টাইগার্স ম্যানেজমেন্ট থেকে যে রোলটা দেবে সেটা ঠিকঠাকভাবে করার চেষ্টা থাকবে। দলের জয় এনে দিতে চাই। কিছু ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স করতে চাই। এটাই আমার লক্ষ্য থাকবে। আমরা ব্যক্তিগত অনুশীলন ইতোমধ্যে শুরু করেছি। খুব দ্রুত দলগত অনুশীলনও শুরু হবে।
প্রশ্ন : খুলনা টাইগার্সে এনামুল হক বিজয় আছেন, আপনি আছেন, শ্রীলঙ্কান দাসুন শানাকা আছেন। অধিনায়ক হিসেবে সুযোগ দেখছেন কি না...
আকবর আলী : না না, একদম সুযোগ দেখছি না। এটা নিয়ে কথা বলতে চাই না ভাই। এতদূর ভাবছিও না। যেখানেই সুযোগ পাব, সেটাকেই বাস্তবায়ন করতে পারলেই আমি খুশি।
প্রশ্ন : দল হিসেবে খুলনা টাইগার্সকে কেমন দেখলেন? শক্তি, দুর্বলতা, প্রত্যাশা এবং সম্ভাবনা কতটা...
আকবর আলী : আমাদের দলটিতে অভিজ্ঞ এবং তরুণদের মিশেল আছে। সম্ভাবনার কথা জানতে চাইলে বলব অনেক উঁচু। আমি যখন যেই টিমে খেলি সেটি নিয়ে সর্বোচ্চটা জেতার স্বপ্নই দেখছি।
প্রশ্ন : জাতীয় দল নিয়ে কতটা ভাবেন? জাতীয় দলে কবে আকবর আলীকে দেখতে পাব। এখনও দলে না আসাটা আক্ষেপের কি না আর কবে মিটতে পারে বলে মনে করেন?
আকবর আলী : দোয়া করেন আপনারা। সবকিছু যদি ঠিক থাকে আল্লাহ চাইলে ভালো খেললে সুযোগও আসবে।
প্রশ্ন : জাতীয় দলে এখন আপনি যেমন কিপার-ব্যাটার, তেমনি আছেন তিনজন। মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস এবং নুরুল হাসান সোহান— এদের সঙ্গে কি আপনার অঘোষিত টক্কর চলছে। জাতীয় দলে আসার ব্যাপারে কি এমন কিছু...
আকবর আলী : মোটেও না, মোটেও টক্কর না। দেখুন আসলে এই কম্পিটিশন আমার নিজের সঙ্গে নিজের। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে যেতে চাই।