প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১২:১৬ পিএম
অথচ নায়ক হতে পারতেন বিরাট কোহলি। সুযোগ ছিল ড্যারিল মিচেলেরও। কিন্তু মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভাঙা কোহলি হননি, হতে পারেননি কিউইদের আশা হয়ে থাকা মিচেলও। হলেন কি না নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কের ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া মোহাম্মদ শামি। হবেনইবা কেন, পরের গল্পটি যে নিজের হাতে লিখেছেন ভারতের তারকা পেসার। তবুও শামির মনের কোণে খচখচানি থেকেই যাচ্ছে— ‘ইস, অমন না হলেও পারত।’
ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের প্রথম ম্যাচ শেষে একটি পোস্টে ‘সেমি-ফাইনাল’-এর সেমি কেটে লিখেছিল ‘শামি-ফাইনাল’। আদপে শামি ফাইনালই বটে! তিনশ ছাড়ানো কিউইদের হতাশা মূলত তিনিই বাড়িয়ে দিয়েছেন।
দুয়ো শোনার পরিবর্তে শামি পেয়েছেন স্তুতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এককাঠি সরেস হয়েছেন, ‘ক্রিকেটবিশ্ব শামির অনবদ্য বোলিং মনে রাখবে চিরকাল।’ তবে খোদ শামির কণ্ঠে আক্ষেপ ঝড়েছে, ‘সহজ ক্যাচ ফেলা আমার উচিত হয়নি। ভীষণ খারাপ লাগছিল।’
অবশ্য শামি কারোর মুখাপেক্ষী হননি। বিশ্বকাপে অন্যসব ম্যাচের মতো এবারও বোলিংয়ে আগুন ধরালেন। একে একে ফেরালেন কিউইদের টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে। শেষদিকে গড়লেন আরেকটি ফাইফার। ভারতকে ফাইনালের টিকিট কেটে দেওয়ার দিনে ৯.৫ ওভারে ৫৭ রান খরচ করে নিলেন ৭ উইকেট। ভারতের হয়ে যা সেরা।
এত কিছুর পরও খুশি হতে পারেননি শামি, ‘উইলিয়ামসনের ক্যাচটা ধরা উচিত ছিল। সহজ ক্যাচ ফেলা ঠিক হয়নি। ভীষণ খারাপ লাগছিল তখন। তারপর আমার লক্ষ্য ছিল বলের গতি কমিয়ে দেওয়া। ওরা এমনিতেও মেরে খেলত। জানতাম সুযোগ আসবেই। সেটাই চেষ্টা করেছি।’
শামি অবশ্য সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। বিশ্বকাপে যার থাকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল, সেই শামি একের পর এক এমন কাণ্ড ঘটালেন যে, প্রতিপক্ষ নাস্তানাবুদ হয়ে গেছে। অপরাজিত থেকে ভারত এখন ফাইনালে, ২৩ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে শীর্ষে শামি। কীভাবে এমন সাফল্য?
শামি বলেছেন, ‘সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। খুব বেশি সাদা বলের ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাইনি। সুযোগ পেলে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। অনেকে বোলিংয়ে বৈচিত্র্যের কথা বলেন। আমার লক্ষ্য থাকে সঠিক জায়গায় বল ফেলা। বিশ্বাস করি ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারলে নতুন বলে উইকেট আসবেই। ম্যাচের যেকোনো সময়ই উইকেট আসতে পারে।’
কোহলির বিশ্বরেকর্ডের রাতে বিশ্বের সপ্তম বোলার হিসেবে বিশ্বকাপে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করে বসেছেন শামি। তাও মোটে ১৭ ম্যাচে। বিশ্বকাপে এটাই দ্রুততম ৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। ওয়াংখেড়েতে এতশত গল্প লেখার দিনে শামিকেই তো তাই শিরোনামে রাখতে হচ্ছে!