নজরুল ইসলাম
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৩৩ এএম
চোখ এখন ফাইনালে। লড়াইটা এখন আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের টিকিট পাওয়ার। সেমির দ্বিতীয় মহারণে ইডেন গার্ডেনসে অস্ট্রেলিয়ার সামনে আজ দক্ষিণ আফ্রিকা। দুদলের লড়াইয়ের মধ্যেও থাকবে ক্রিকেটারদের দ্বৈরথ। খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত লড়াই-ই তো জমিয়ে তুলবে পুরো ম্যাচ। ক্রিকেটারদের সম্ভাব্য ব্যক্তিগত খণ্ডযুদ্ধ নিয়েই এই প্রতিবেদন-
মিচেল স্টার্ক-কুইন্টন ডি কক : স্টার্কের বিশ্বকাপটা সেভাবে কাটেনি। যেমনটা তার সুনাম রয়েছে। ছন্দে ফিরতে সংগ্রাম করে গেছেন। ৬.৫৫ ইকোনমি রেটে ৮ ম্যাচ থেকে মাত্র ১০ উইকেট নিয়েছেন। তবে ওয়ানডেতে ডি ককের বিপক্ষে তার হেড-টু-হেড রেকর্ড কিন্তু দুর্দান্ত।
১৩ ইনিংসে স্টার্ক দক্ষিণ আফ্রিকার এ উইকেটরক্ষককে ২৮.২৫ গড়ে চারবার আউট করেছেন। প্রতি ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ৪.৭৭। ডি কককে তাড়াতাড়ি সরিয়ে দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। এটা করতে অজিরা নির্ভর করবে স্টার্কের ওপরই।
অ্যাডাম জাম্পা-হেইনরিখ ক্লাসেন : জাম্পা ২২ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে লিগ পর্ব শেষ করেছেন। অন্যদিকে ক্লাসেন ১৪০.৫২ স্ট্রাইক রেটে ৩২৬ রান তুলেছেন। যার মধ্যে মুম্বাইয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাঁকিয়েছেন তিনি স্মরণীয় সেঞ্চুরি। সাদা বলের ক্রিকেটে স্পিনের বিরুদ্ধে সেরা ব্যাটারদের একজন ক্লাসেন। আর লিগ পর্বের সেরা স্পিনার হলেন জাম্পা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ব্যক্তিগত লড়াইগুলোর মধ্যে তাদের দুজনের দ্বৈরথটাও জমবে বেশ।
কেশব মহারাজ-গ্লেন ম্যাক্সওয়েল : সম্প্রতি বোলারদের ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে চূড়ায় উঠেছেন মহারাজ। কিন্তু বিশ্বকাপজুড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। তবে ৪.৫-এর নিচে ইকোনমিতে ১৪ উইকেট নিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লিগ পর্বের খেলায় তিনি লক্ষ্ণৌয়ে ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ অ্যান্ড বোল্ড করেছিলেন। কলকাতায় একইভাবে নিম্ন এবং ধীরগতির পিচে মহারাজ ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে নিশ্চিত দক্ষিণ আফ্রিকার তুরুপের তাস বনে যাবেন। যে ম্যাক্সওয়েল কি না অতিমানবীয় ইনিংস খেলে দেখিয়েছেন কীভাবে বিশ্বকাপের মতো আসরে একক প্রচেষ্টায় দলকে জেতানো যায়।
কাগিসো রাবাদা-ডেভিড ওয়ার্নার : ওয়ার্নার এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৫৫.৪ গড়ে ৪৯৯ রান সংগ্রহ করেছেন। বিপরীতে রাবাদা ২৬.৯ গড়ে শিকার করেছেন ১২ উইকেট। তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে রাবাদার বিরুদ্ধে একটু হলেও এগিয়ে থাকবেন ওয়ার্নার। ওয়ানডেতে রাবাদার মাত্র ১৪৩ ডেলিভারিতে ওয়ার্নার তুলেছেন ১৮৫ রান। তবে অজি এ ব্যাটার কখনও আউট হননি।
এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সাধারণত শুরুর দিকে বল করেননি রাবাদা। বোলিংয়ের প্রথম পরিবর্তনের জায়গায় বোলিং করে যাচ্ছেন তারকা এ পেসার। রাবাদা বল হাতে নেওয়ার আগে যদি প্রোটিয়ারা ওয়ার্নারকে সরিয়ে দিতে না পারে, তাহলে তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারেন এ ওপেনার।
মার্কো জানসেন-ট্রাভিস হেড : জানসেন ২৪.৪১ গড়ে আট ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়েছেন বিশ্বকাপে। কিন্তু সব সময় নিজের বোলিংয়ে লাইন ও লেন্থের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখে গেছেন। তার ইকোনমি রেট-ই (৬.৪০) দিচ্ছে তার প্রমাণ। হেড নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম খেলায় বিস্ফোরক এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তারপর থেকে রানের জন্য লড়াই করছেন এ অজি ব্যাটার।
জানসেনের বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে দারুণ এক রেকর্ড রয়েছে হেডের। তিনি কখনও আউট না হয়ে ৪৫ বলে করেছেন ৭৩ রান। আজ দুজনের যুদ্ধে কে জিতবেন? তার ওপরই নির্ভর করবে ম্যাচ কোন দিকে কতদূর এগোবে।