প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ১১:০২ এএম
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪৩ পিএম
নীল সমুদ্রে ভেসে এভারেস্টে চড়তে চান? সংবাদ সম্মেলনে যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ার আগে কেন উইলিয়ামসন যা একটু বললেন, তার অর্থ দাঁড়ায়Ñ ‘সুযোগ তৈরির চেষ্টা করব, ফাইনালে উঠতে পারলে দারুণ হয়!’ নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক অবশ্য এমন স্পষ্ট করে বলেননি, স্বল্পভাষী উইলিয়ামসনের তবে অমন কিছুতেই চোখ। ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার বদলা নিতে প্রস্তুত ভারত। চলতি বিশ্বকাপে আরেকবার কিউই-বধের পরিকল্পনা আঁটা রোহিত শর্মাদের ভাবনায় শাপ মোচনের বিষয়টিও।
ভারতের মাটিতে রোহিত-কোহলিদের বিপক্ষে খেলা মানেই নীল সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আসনসংখ্যা ৩৩১০৮টি। সেখানে কিউইদের বিপক্ষে অনেক কিছুই থাকবে। সমর্থন, মাঠ কিংবা মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকার মঞ্চে আজ বুধবার দুপুরে দুদলের মূল ভাবনায় আরেকবার ফাইনালে ওঠা, শিরোপার আরেকটু কাছে যাওয়া।
মুম্বাইয়ে গতকাল সেই প্রশ্নটি শুনিয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন, কিউই অধিনায়কের অবশ্য দর্শকদের নিয়ে ভাবনা ততটা নেই। কিউইদের ৩৩ জন দর্শক খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে বেশ কৌশলী উইলিয়ামসন, ‘৩৩ জনের বেশি অবশ্যই থাকবে। নিশ্চিত বিশাল একটি দল ভারতকে সমর্থন দেবে। তারা বেশ পাগলাটে। তবে খেলোয়াড়ের দিক থেকে চিন্তা করলে এটা কিন্তু আনন্দের। আপনি যখন এই দর্শকদের সামনে খেলবেন তখন আনন্দ পাওয়া যায়। ভারতের বিপক্ষে ভারতের মাটিতে সেমিফাইনাল। এটা ক্রিকেটের সেরা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’
ওয়াংখেড়েতে বদলা নেওয়ার লড়াইয়ের জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত ভারত। ম্যানচেস্টারের দুঃস্মৃতি এক ঝটকায় উড়িয়ে দিতে শিষ্যদের বিশেষ মন্ত্র শিখিয়ে দিয়েছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়, ‘প্রত্যেকেরই আলাদা শক্তি রয়েছে। সে অনুযায়ী পরিকল্পনা কাজে লাগাতে হবে। শতভাগের বেশি পরিশ্রম করতে হবে। মোটেও চাপে পড়লে চলবে না। মানসিক শক্তিই হবে আসল পুঁজি।’
রাহুলের মন্ত্রের মূলে ‘মানসিক স্থিরতা’, যা কোহলিদের ভোগাচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। শিষ্যদের তাই ম্যাচটি সহজভাবে নেওয়ার অনুরোধ গুরুর, ‘সেমিফাইনাল বলে আলাদা কিছু হবে না। যে দল ভালো খেলবে তারাই জিতবে। একে আরও একটা ম্যাচ হিসেবে দেখছি। আমাদের পরিকল্পনা তৈরি। সেটা কাজে লাগাতে পারলেই বাজিমাত।’
শিষ্যদের শান্ত রাখতে, শান্ত থাকতে কোচের এমন দীক্ষার পেছনের গল্প করুণ। বৈশ্বিক মঞ্চে ম্যান ইন ব্লুদের পেলেই যেন ভয়ংকর হয়ে ওঠে কিউইরা। রোহিতরা যদি কোনো দলের বিপক্ষে স্নায়ুচাপে ভোগেন, সেটা এই নিউজিল্যান্ডই। সেমিতে লড়াইয়ে নামার আগে ইতিহাস কিউইদের পক্ষে। আইসিসির ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে অতীত পরিসংখ্যানে এগিয়ে উইলিয়ামসনরা। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিলিয়ে ১৩ ম্যাচ খেলে ভারতের জয় মাত্র চারটিতে, ৯ ম্যাচই জিতেছে নিউজিল্যান্ড। এখন পর্যন্ত আইসিসির সাদা বলের কোনো ইভেন্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নক আউটের ম্যাচ জিততে পারেনি ভারত। দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতেছে কিউইরা।
পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে যদিও এগিয়ে ভারত। ১১৭ বারের মুখোমুখিতে ম্যান ইন ব্লুদের জয় ৫৯টি ও কিউইদের জয় ৫০টিতে। আজ উইলিয়ামসনদের চোখ থাকবে ব্যবধান বাড়ানোর, স্বাগতিকদের লক্ষ্য সমতা।
লড়াই হবে ব্যক্তিপর্যায়েও । টক্কর হবে কোহলি-রাচিন রবীন্দ্রর। দেখা মিলবে জাদেজা-স্যান্টারের ঘূর্ণিঘোর। পেসে তাণ্ডবের অপেক্ষায় জাসপ্রিত বুমরাহ-ট্রেন্ট বোল্ট। এক্সফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে মাঠ। বয়ে যেতে পারে রানবন্যা। হাতের তালুতে চেনা মাঠে বদলা নিতে মরিয়া ভারত। ইতিহাসে পুনরাবৃত্তি ঘটানোর প্রত্যয় নিউজিল্যান্ডের।