প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:২৯ পিএম
গ্রুপপর্বে যা কিছু ঘটেছে তা নিয়ে গল্প...
শত ভবিষ্যদ্বাণী আর কত বিষয় নিয়ে আলোচনা, সব ছাপিয়ে নিশ্চিত হয়েছে বিশ্বকাপের শেষ চার দল। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যে যার প্রতিপক্ষও পেয়ে গেছে। সেমির লড়াই শুরুর আগে এবার পেছন ফিরে দেখা যাক গ্রুপ পর্বের খেলাগুলো। রানবন্যার বিশ্বকাপে গত এক মাসে এমন কিছু ঘটেছে যা কি না এবারই প্রথম। আবার অনেক কিছুর রেকর্ডও হয়েছে। নিজের কিংবা নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতেও বদ্ধপরিকর ছিলেন অনেকে। সেই সব আলোচনা,-সমালোচনা কিংবা অর্জন-বিসর্জন নিয়েই হবে লম্বা গল্প।
‘টাইমড আউট’ বিতর্ক
বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘দিল্লিতে ঘটে যাওয়া এই ইস্যুতে আলোচনা থামবে না।’ হয়তো থামবেও না। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে বিশ্বের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে সময়ক্ষেপণ করার কারণে সাকিব আউট করে দেন। সেই নিয়েই শত আলোচনা। কেউ ‘স্পিরিটের’ কথা টেনে সাকিবের মুণ্ডুপাত করছেন, কেউবা বলছেন নিয়ম আছে সেটার সদ্ব্যবহার করছেন সাকিব। সাকিবের বন্দনা কিংবা তিরস্কারের ওই ‘টাইমড আউটের’ ঘটনাই ভারতের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি আলোচনার।
পাকিস্তানের রেকর্ড রান তাড়া
আনপ্রেডিক্টেবল বলে যে শব্দটি আছে সেটি আরেকবার প্রমাণ দিয়েছিল পাকিস্তান। টিকে থাকতে হলে জিততে হবে, এমন ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে চারশ রানের বেশি লক্ষ্য পেরিয়ে যায় বাবর আজমের দল। কিন্তু রানতাড়ার এই ঘটনাটি সেদিনের নয়। তারও আগের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেদিন কুশল মেন্ডিস এবং সাদিরা সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩৪৫ রান করে লঙ্কানরা। জিততে হলে বিশ্বকাপে রান তাড়া করার রেকর্ড গড়তে হতো পাকিস্তানকে। হায়দরাবাদে আবদুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের অপরাজিত সেঞ্চুরি পাকিস্তানের পক্ষেই নিয়ে আসে ম্যাচটি। শফিকের ১১৩ রানের পর পায়ে ক্র্যাম্প নিয়েও ১৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন রিজওয়ান। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড ৬ উইকেটে জিতেছে পাকিস্তান। এটা পাকিস্তান তো বটে, বিশ্বকাপেরও রেকর্ড।
ডাচদের রূপকথা
শেকড় ভুলে শিখরে ওঠার লক্ষ্যে ছিলেন স্কট এডওয়ার্ডসরা। প্রায় প্রতিটা ম্যাচের আগেই তারা বলতেন, ‘সেমির স্বপ্ন দেখছি। প্রতিপক্ষকে তো হারাবই।’ সেই শক্তি তাদের অনেকদূর নিয়ে আসে। দশ দলের বিশ্বকাপে তলানিতে থেকে শেষ করতে হলেও প্রায় এক যুগ পর অনেক বাধা পেরিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে আসা ডাচরা চমকই দিয়েছিল। নেদারল্যান্ডসের কাছে প্রথম বধ দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটিকে ফ্লুক ভাবতে পারেন। কিন্তু পরের ম্যাচগুলো দেখল আদপে তা মনে হবে না। তারা ভালো খেলছিল, রূপকথাও তৈরি হয়েছিল। তুলির সবশেষ আঁচড় ডাচরা দেয় বাংলাদেশের বিপক্ষে। সাকিবদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্বপ্ন বড় করা ডাচদের আশা পূরণ না হলেও বিশ্বকাপে ছাপ রেখে যাচ্ছে বড়।
ম্যাক্সওয়েল তাণ্ডব
আফগানিস্তান বুঝি এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে যাচ্ছে, এমন ভাবনায় যখন সবাই বুঁদ তখন ম্যাড ম্যাক্সের তাণ্ডব। অবাক বনে দেওয়া ইনিংসটি দেখে কেউ তো বলেই দিয়েছেন, ‘এটাই ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা ইনিংস।’ মুম্বাইয়ে দুর্বার গতিতে এগোনো আফগানদের ২৯১ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। সেই হেরে যেতে বসা ম্যাচে ম্যাক্সওয়েল কামিন্সকে নিয়ে জয় আনেন ৩ উইকেটের। ১২৮ বলের ইনিংসে ২১ চার ও ১০ ছক্কা হাঁকান ম্যাক্সি। অজি তারকার একাই দুইশ হওয়া দেখে বলতে বাধ্য হবেন, ‘ম্যাক্সি আপনি একজন খুনি!’