প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ২২:২৭ পিএম
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৩৯ পিএম
এবার বিশ্বকাপ না জিততে পারলে পরবর্তী বিশ্বকাপ জেতার কথা ভাবতে আরও তিন বিশ্বকাপ লেগে যাবে ভারতের। রোহিত শর্মাদের নিয়ে রবি শাস্ত্রীর মন্তব্য মোটেও অবান্তর নয়, বরং পক্ষেই মত দেবে যে কেউ। স্বাগতিকদের বিশ্বকাপ না জেতার কারণ দেখেন না শোয়েব আখতারও। রিকি পন্টিংয়ের স্বপ্নে রোহিত উঁচিয়ে ধরেছেন সোনায় বাঁধানো ট্রফি। তবে রাহুল দ্রাবিড়ের ফর্মুলা ম্যাচ বাই ম্যাচ উইন। ডাচদের সঙ্গে পোশাকি লড়াইয়েও সজাগ দৃষ্টি ভারত কোচের। তাতে সায় দেন শ্রেয়াস আইয়ার ও লোকেশ রাহুলরা। তাদের খুনে ব্যাটে রানপাহাড়ে চড়ে ভারত। পরে ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার দল জেতে ১৬০ রানে।
এ জয়ে বিশ্বকাপের লিগপর্বে শতভাগ জয়ের রেকর্ড গড়ল অপ্রতিরোধ্য ভারত। তার মানে প্রথম পর্বের ৯ ম্যাচের ৯টিতেই জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতল স্বাগতিকরা। বিশ্বকাপ আয়োজকদের জয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ। আর পয়েন্ট তালিকার দশে থিতু হয়ে বিশ্বমঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিল নেদারল্যান্ডস। সঙ্গে ইউরোপের দলটি দর্শক হয়ে গেল চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও।
গতকাল রবিবার নেদারল্যান্ডসকে পেয়ে রেকর্ড ভাঙাগড়ায় মাতে ভারত। স্বাগতিকদের ব্যাটিংলাইনের প্রথম পাঁচ ব্যাটারই পান ৫০ ছাড়ানো ইনিংস। তাদের মধ্যে সেঞ্চুরির দেখা পান আইয়ার ও রাহুল। চার উইকেট হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪১০। বৈশ্বিক আসরে এটি ম্যান ইন ব্লুদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের তোপ সামলাতেই বেগ পেতে হয় ডাচ ব্যাটারদের। তাই তো ৪৭.৫ ওভারে ২৫০ রানেই গুটিয়ে যায় অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের দল। তবে আগুন-বোলিংয়ের মাঝেও ফিফটি হাঁকান তেজা নিদামানুরু (৫৪)। ৪৫ রান আসে সাইব্র্যান্ড এনজেলব্রেখটের ব্যাট থেকে। সঙ্গে কলিন অ্যাকারম্যান ৩৫ ও ম্যাক্স ও ডাউড ৩০ রান এনে দিলেও লাভ হয়নি। রানের হিমালয় টপকাতে পারেনি ডাচরা।
এদিন টস জিতে শুরু থেকেই ডাচ বোলারদের ওপর চড়াও হন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। গড়েন শতরানের জুটি। দলীয় ১০০ রানে ৩২ বলে ৫১ রান করে আউট হন শুভমান গিল। গিল ফিরে গেলেও রানের ছন্দে মোটেও ভাটা পড়েনি। বরং দ্বিগুণ আগ্রাসী হয়ে ওঠেন রোহিত শর্মা। তবে দলের স্কোরবোর্ডে ২৯ রান যোগ হতেই বিদায় নেন অধিনায়ক। তার আগেই গড়েন দুটি রেকর্ড। এবি ডি ভিলিয়ার্সকে টপকে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ৬০টি ছয় হাঁকানোর কীর্তি গড়েন রোহিত। ২০১৫ সালে ডি ভিলিয়ার্স ৫৮টি ছয় হাঁকিয়েছিলেন।
৫৪ বলে ৬১ রান করার পথে দুই ছয়ে সেটি ছাড়িয়ে যান রোহিত। একই সঙ্গে ছাড়িয়ে যান সৌরভ গাঙ্গুলিকেও। বিশ্বকাপে ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫০৩ রান রোহিতের। ২০০৩ বিশ্বকাপে ৪৬৫ রান করে এই রেকর্ডটি ২০ বছর নিজের কাছে রেখেছিলেন সৌরভ। রোহিত বসেন শচীন টেন্ডুলকারের পাশেও। বিশ্বকাপে দুবার ৫০০ পেরোনো সংগ্রহ আছে শচীনের। সেই তালিকায় যোগ হলো রোহিতের নামও। রোহিতকে ফিরিয়ে নেদারল্যান্ডসের হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন বাস ডি লিড।
দুই ওপেনার ফিরে গেলে আইয়ারকে নিয়ে কোহলি দলগত স্কোর দুশতে নেন। তারপর থামেন। ব্যক্তিগত ৫১ রানে ভ্যান ডার মারউইয়ের শিকার হন কোহলি। বিশ্বকাপে সপ্তম হাফসেঞ্চুরিতে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৫০ ছাড়ানো ইনিংস খেলা শচীন টেন্ডুলকার ও সাকিব আল হাসানের পাশে বসেছেন কোহলি। ২০০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর আইয়ার ও লোকেশ রাহুল ডাচ বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলায় মাতেন। বিশেষ করে রাহুল দৌড়ে কম রানই নিয়েছেন, চার-ছয়ে সাজিয়েছেন ইনিংস। ইনিংসের এক বল আগে থাকতেই আউট হন তিনি।
তার আগে আইয়ারের সঙ্গে তিনিও তুলে নেন সেঞ্চুরি। তাতেই ভারতের ইনিংস চারশ ছাড়ায়। ৬২ বলে তার এই সেঞ্চুরিটি ভারতের হয়ে বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরি। এ আসরেই ৬৩ বলে রোহিতের সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন রাহুল। রাহুল শেষ সীমানায় কাটা পড়লেও আইয়ার অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। ৯৪ বলে ১০ চার ও ৫ ছয়ে ১২৮ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা আইয়ার।