× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শেষটায় হৃদয় কাড়লেন শুধু তাওহিদ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০০:১৪ এএম

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৩২ এএম

শেষটায় হৃদয় কাড়লেন শুধু তাওহিদ

অভিষেকেই নিজের জাত চেনান। খেলেন চমৎকার এক ধৈর্যশীল ইনিংস। সেঞ্চুরি মিস করেও আস্থার প্রতিদান দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দেন তাওহিদ হৃদয়। সিলেটের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯২ রানের দুরন্ত ইনিংসে সবার মন কেড়ে নেন উদীয়মান এ ব্যাটার। গত মার্চের সেই স্মৃতি আজও জ্বলজ্বল করছে। আইরিশ সিরিজে পরের ম্যাচেই ফের ঝলক দেখান। এক রানের জন্য মিস করেন হাফসেঞ্চুরি। টানা দুই দারুণ ইনিংসে ওয়ানডেতে নিজের জায়গা পোক্ত করেন তাওহিদ। সেই থেকে বগুড়ার ছেলেটি নিয়মিত মুখ বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে।

লাল-সবুজের দলে জায়গা পেয়ে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে থাকেন। বিরতি দিয়ে হাঁকাতে থাকেন দুর্দান্ত সব ইনিংস। চেমসফোর্ডে আইরিশদের বিপক্ষে মে-তে ফের ফিফটি (৬৮) হাঁকান। চট্টগ্রামে জুলাইতে আফগানিস্তান ম্যাচেও হাসে তার ব্যাট (৫১)। মাঝে বিরতি দিয়ে এশিয়া কাপেও তার ব্যাট থেকে ঝরে রানবৃষ্টি। কলম্বোতে টানা দুই ম্যাচে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস উপহার দেন তাওহিদ (৮২ ও ৫৪)। কিন্তু দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকেই শুরু হয় তার রানখরা। ফিফটি তো দূরে থাক, রানই যেন পাচ্ছিলেন না এ তরুণ তুর্কি। সেই খরা বইয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপেও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে রঙিন জয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যদের বিশ্বমঞ্চের নতুন মিশন শুরু হলেও ব্যাট করার সুযোগ পাননি তাওহিদ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার ব্যাট ছুঁয়ে আসে ৩৯ রান। পরে নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার ব্যক্তিগত স্কোর যথাক্রমে ১৩, ১৬, ৭ ও ১৫*। আটকে পড়েছিলেন ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্তে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে কম লেখালেখি হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড়ই বইয়ে যায়। সব জায়গায় আলোচনার একটি বিষয়ই ছিল। কোথায় হারিয়ে গেলেন তাওহিদ? রান কেন পাচ্ছেন না? হৃদয় কেন কাড়তে পারছেন না? স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ছাপিয়ে যায় আরও বড় আঙ্গিকে। তাওহিদের মতো তরুণ ব্যাটারদের নিয়ে কি তাহলে ভুল করেছে বাংলাদেশ? এ কারণেই কি বিশ্বকাপটা কাটল ভরাডুবিতে?

অবশেষে ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখে হাসি ফোটালেন তাওহিদ। কাটালেন রানখরা। দুরন্ত ব্যাটিং পারফরম্যান্সে খেললেন দারুণ এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। উপহার দিলেন দাপুটে এক হাফসেঞ্চুরি। ক্রিজে টিকে থাকলেন ১২১ মিনিট। ধৈর্য নিয়ে উইকেটে টিকে থেকেই পেলেন ৭৪ রানের দুর্বার এক স্কোর। ৭৯ বলের অসাধারণ ইনিংসটি সাজিয়ে দেন তিনি ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়। ৯৩.৬৭ স্ট্রাইকরেটে দাপুটে ব্যক্তিগত স্কোর গড়েই মার্কাস স্টয়নিসের বলে মার্নাস লাবুশেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। এবারের বিশ্বকাপে এটাই তার প্রথম ফিফটি। আর সব মিলিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ষষ্ঠ পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। সে সুবাদে ফের সবার হৃদয় কেড়ে দলকে এনে দেন লড়াকু পুঁজি। ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ গড়ে ৩০৬ রানের বড়সড় এক স্কোর। বলার অপেক্ষা রাখে না, যেখানে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল তাওহিদ হৃদয়ের হৃদয়কাড়া ইনিংসের।

অস্ট্রেলিয়ার বাঘা বাঘা বোলারদের সামলে তাওহিদের দারুণ ব্যাটিংয়ের দিনে হতাশ করেছেন তার সতীর্থরা। দুরন্ত ব্যাটিংয়ের আভাস দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাঁ-হাতের আঙুলের চোটে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান। ফিরে এসেছেন দেশে। তার অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব ছিল তার কাঁধেই। কেননা শান্তই এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক। সাকিবের সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ নিয়ে বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দিলেন শান্ত। চোটের জন্য এর আগে ভারতের বিশ্বকাপ ম্যাচে দর্শক হয়ে ছিলেন সাকিব। সেই ম্যাচেও টাইগারদের হয়ে অধিনায়কত্ব করেন শান্ত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফের নেতৃত্ব পেয়ে জ্বলে ওঠারই আভাস মিলেছিল তার ব্যাটিংয়ে। শুরুটা তার চমৎকার হলেও ফিফটি মিস করেন পাঁচ রানের জন্য। গতকাল পুনেতে অজিদের বিপক্ষে ব্যর্থতার গল্প লিখে গেছেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমও। ৩৬ রানের বেশি তাদের কেউ স্কোর গড়তে পারেননি।

শান্তর বিদায়ের পর তাওহিদকে ক্রিজে সঙ্গ দিচ্ছিলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারকা এ অলরাউন্ডারও দিয়েছিলেন বড় ইনিংস খেলার পূর্বাভাস। কিন্তু নাহ! দুর্ভাগ্য! ব্যক্তিগত ৩২ রানেই কাটা পড়ে যান রিয়াদ। তাওহিদ বল কাভারে পাঠিয়ে দিয়েই এক রান নেওয়ার জন্য ডাকেন মাহমুদউল্লাহকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ফেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই পাণ্ডব। ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে গিয়ে বল ধরে ছুড়ে মারেন লাবুশেন। তার হাতছোঁয়া বল সরাসরি আঘাত করে স্টাম্পে। ব্যস! প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এবারের বিশ্বকাপে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা মাহমুদউল্লাহ। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজও ব্যর্থতার গল্প লিখে হতাশ করেন ভক্ত-অনুরাগীদের। ৩০ রানের স্কোরও দুজনের স্পর্শ করতে পারেননি।

বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা সেভাবে দাপট দেখাতে পারেননি। তাদের সবচেয়ে সফল বোলার অ্যাডাম জাম্পা। ৩২ রান খরচায় ১০ ওভারে নেন দুটি উইকেট। দুটি উইকেট পান শন অ্যাবটও। ১০ ওভারে তিনি দেন ৬১ রান। কিন্তু ব্যাট হাতে সেই রকম দাপট দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

১৭৭ রানের অনন্য এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে যান ম্যাচসেরা মিচেল মার্শ। তার ১৩২ বলের চমৎকার এ ইনিংসে ছিল ১৭ বাউন্ডারি ও ৯ ছক্কা। হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়েই ফেরেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে ফেরার আগে খেলেন ৫৩ রানের দারুণ এক ইনিংস। তার ৬১ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারির মার। আর ৬৩ রানে অপরাজিত থেকে স্টিভেন স্মিথ দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন মার্শের সঙ্গে। তাতেই টাইগারদের ৮ উইকেটে ধসিয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের লিগ পর্ব শেষ অস্ট্রেলিয়ার। একই সঙ্গে শেষ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশনও। অজিদের কাছে হেরেও পয়েন্ট তালিকার আটে থেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্বপ্নই দেখছে এখন বাংলাদেশ। আজ ভারতের কাছে নেদারল্যান্ডস হারলেই আইসিসির এই ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের টিকিট নিশ্চিত হবে টাইগারদের। আর ৩২ বল রেখে পাওয়া এ জয়ে ১৪ পয়েন্টের পুঁজি নিয়ে তিনেই রইল আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা অজিরা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা