প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ০২:৩১ এএম
বিশ্বকাপে জস বাটলারদের পারফর্ম দেখে বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন, ‘ইংল্যান্ড কেন এমন খেলছে!’ সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘ইংলিশরা পারফর্ম করতে পারেননি, তাই হেরেছেন।’ বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ১০ দলের বিশ্বকাপে টেবিলের ১০ থেকে ওপরের দিকে উঠতেই পারছেন না, এটা কি মেনে নেওয়া যায়! না গেলেও হয়েছে এমনটি। বাটলারদের সেমির স্বপ্ন তো চুরমার হয়েছেই, এখন শঙ্কায় ২০২৫ সালে পাকিস্তানে বসতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ব্যর্থতা কেন, তার কয়েকটি কারণ খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছ এখানে।
ওয়াসিম আকরাম ব্যর্থতা খোঁজার কাজটি এগিয়ে দিয়েছেন। পাকিস্তানের কিংবদন্তি মনে করেন, সবাইকে সাদা বলের ক্রিকেট শিখিয়ে ইংল্যান্ড নিজেই খেলা ভুলে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর আকরামের দাবি, ইংল্যান্ড ওয়ানডেকে গুরুত্ব দেয়নি—‘ইংল্যান্ডের জন্য দুঃখের দিন। সব ক্রিকেট বিশ্লেষক ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের ফেভারিটের তালিকায় রেখেছিল। তারা যেভাবে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলে থাকে। গত তিন-চার বছরে ইংলিশরা দুনিয়াকে শিখিয়েছে, কীভাবে সাদা বলের ক্রিকেটটা খেলতে হয়। বিশ্বকাপে নিজেরাই ভুলে গেছে। কারণ, তারা ওয়ানডে ক্রিকেটকে গুরুত্ব দেয়নি।’
পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা গুরুত্ব দিক বা অন্য কোনো কারণ হোক, হারের বৃত্তেই ঘুরছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হার থেকে শুরু, মাঝে বাংলাদেশকে হারানো বাদে তেমন করে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াইও চালাতে পারেননি বাটলাররা। ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছেন, বোলিংয়েও ছিলেন যাচ্ছেতাই, ফল একে একে সাত হার। টেবিলেও পড়েছে প্রভাব। আছে ১০ নম্বরে। শীর্ষ চারের লক্ষ্য নিয়ে ভারত আসা দলটির চিন্তাভাবনা জুড়ে এখন আরেকটি জয়, আরেকটু ওপরের দিকে ওঠা।
কেন বাটলারদের ব্যর্থতা, সেই প্রশ্নের জবাবে শুরুতেই আসবে টিম হিসেবে ইংলিশদের বাজে খেলা। ওপেনাররা প্রায় কোনো ম্যাচেই রান পাননি৷ পাশাপাশি ব্যর্থ ছিলেন জো রুটও। টপ অর্ডারের ব্যর্থতা সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে ইংলিশদের। স্কোরবোর্ডে ভালো স্কোরও জমা হয়নি, লড়াইও চালাতে পারেননি চ্যাম্পিয়নরা।
ভারতের পিচ এবং আবহাওয়ায় মানাতে সমস্যা আরেকটি কারণ হতে পারে। কিন্তু আইপিএলে দাপিয়ে বেড়ানো ইংলিশদের কন্ডিশনের সমস্যাটিও এতটা প্রকট হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু ইংলিশরা ধুঁকেছে। উইকেট অনুযায়ী দল গঠনও ঠিকঠাক হয়নি। গত এক বছরে না খেললেও বিশ্বকাপের ঠিক আগেই ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ফেরেন বেন স্টোকস ৷
ভারতেও প্রথম তিন ম্যাচ চোটের কারণে ছিলেন না। কিন্তু দলে ফিরেও তেমন কিছু করতে পারেননি তারকা অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারও ছিল যাচ্ছেতাই। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কেউ তেমন হাল ধরতে পারেননি। জয়ও ছিল অধরা। আঙুল তোলা যায় টিম ম্যানেজমেন্টের দিকে, দল গঠনেও অপরিপক্বতা দেখা গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের মাঝে।
অথচ এই ইংল্যান্ডই বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট ছিল। প্রায় সব ক্রিকেট বিশ্লেষকই শীর্ষ চারে ইংলিশদের রেখেছিলেন। তবে টানা হারে প্রথম পর্ব থেকে ইংলিশদের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। ইংল্যান্ড কেন ধুঁকছে? উত্তর তো বিস্তর আছে, আকরামের মতো কারও মত, ‘ওয়ানডেকে অবহেলা’ করা। তবে খোদ ইংলিশরা কী ভাবছেন, জমে আছে প্রশ্ন। নীল জার্সিতে দুঃখের নীলে ডোবা বাটলাররা উত্তর দিতে নিশ্চয় স্বস্তি খুব একটা পাবেন না।