প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৪৭ পিএম
বিশ্বকাপে পয়েন্ট টেবিলের এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, তাতে আফগানিস্তানকে নিয়ে বাজি লাগতেই পারেন। সেমিফাইনালের দৌড়ে যাদের ভাবাটা বেশি বেশি মনে হতো, সেই রশিদ-নবিদের শেষ চারের পথ প্রায় পাকা। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিততে হবে, দক্ষিণ আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়ার কোনো একটি দলকে ধরাশায়ী করতে হবে—ব্যাস, এতটুকুতেই অনেক!
২০১৫ বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলতে আসা আফগানরা সেবার একটি ম্যাচে জয় পেয়েছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে হেরেছিল নয় ম্যাচের নয়টিতেই। এবারের গল্পকে রূপকথা বলেও ভুল হবে আপনার। রশিদদের ঘূর্ণি আর গুরবাজের ব্যাটিং তাণ্ডবে ধরাশায়ী হয়েছে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দল। কিন্তু কীভাবে— রশিদদের সাফল্যের নেপথ্যে কী?
খোলনলচে বদলে যাওয়া আফগানিস্তান দলের পেছনের কারিগরদের নিয়েই আজকের গল্প। যাদের নিরঙ্কুশ দায়িত্বে বুক চিতিয়ে মাঠে লড়েন হাসমতউল্লাহ শাহিদিরা, সংবাদ সম্মেলনে এসে কোচ জোনাথন ট্রট ছাড়েন হুংকার। দৃপ্ত আফগানদের দাপুটে ক্রিকেটে একেক দিন তৈরি হয় ভিন্ন গল্প, ক্রিকেট ইতিহাস যিনি লেখেন তার কাজও বাড়িয়ে দেন রশিদরা।
এতশত সাফল্যের গল্প যারা লিখে চলছেন তাদের পেছনে আছেন দুই ভারতীয়। দুজনই ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা। একজনকে তো ভারতের ক্রিকেটের ‘পোস্টারবয়’ও ভাবা হতো। বিশ্বকাপে আফগানদের মেন্টরের কাজ করছেন অজয় জাদেজা। আরেকজন ব্যাটিং পরামর্শক—মিলাপ মেওয়াদা। ব্লু নীল জার্সিধারীদের হয়ে খেলতেন উইকেটেরক্ষক ব্যাটার হিসেবে। ভারতের মাটিতে বসা বিশ্বকাপে আফগান রূপকথার পেছনের নায়ক তারাই।
রশিদ-নবিদের কীর্তি নয়, আজকের লম্বা গল্পে বলা হবে ভারতের মাটিতে বসা বিশ্বকাপে দুই ভারতীয়ের দায়িত্ব এবং খর্বশক্তির একটি দলকে শীর্ষ মনোভাব এনে দেওয়ার পেছনের কারিগরদের কথা। শুরুতেই মেন্টর হিসেবে থাকা গুজরাটের জাদেজার গল্প। ভারতের ডানহাতি মিডিয়াম বোলার এবং মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন জাদেজা। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে আফগানদের জয়ের পেছনের মাস্টারমাইন্ডকে অবশ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্ষোভে-দুঃখে ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছিলেন, পসার জমিয়েছিলেন বিনোদনে। সেই তিনিই আফগানদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সেমির।
রশিদদের সাফল্যের পেছনে তাহলে ভারতীয়রাই, আরেকটু খোলাসা করে বললে গুজরাটের দুই মাস্টারমাইন্ড? হয়তো তাই। তাই তো আফগানদের সাফল্যের পর একটা কথা বেশ ছড়িয়ে পড়েছে ‘গুজরাট মডেল’। বলা হয়, স্পিনে সেরা আফগানরা। পেস বোলিংয়েও ফজলহক ফারুকি-নাভিন উল হকরা কম যান না। তবে ব্যাটিংয়ে দুর্বল গুরবাজরা এবার দেখাচ্ছেন ভিন্ন রূপ। প্রতিপক্ষের বোলারদের তুলাধুনা করে গড়ছেন রেকর্ড।
হাঁকাচ্ছেন শতক, খেলছেন ম্যাচজয়ী ইনিংস। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচের তিনটিতে জিতে ছয় পয়েন্টও তুলে নিয়েছেন। খোলনলচে বদলে যাওয়াদের সামনে এখন আরও জোরালো সেমির পথ। আরেকটু কাছে আসা আফগানিস্তানের সাফল্যের স্বপ্নে পেছনের লম্বা গল্পে ভারতের সাবেক দুই ক্রিকেটার থাকবেন বড় জায়গাজুড়ে।