প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:২৭ এএম
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৪৭ এএম
বাবরদের বাঁচার ম্যাচে সাকিবদের নতুন আশা
শেষ কয়েক দিন যাবৎ সাকিব আল হাসান ওই একটা কথাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলছিলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা।’ সমীকরণ যদিও খুব একটা বাংলাদেশের পক্ষে নয়। তবুও, আশায় তো বুক বাধাই যায়। নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপের শেষটা রাঙিয়ে দিতেও বদ্ধপরিকর টাইগাররা। পাকিস্তান সেখানে ছেড়ে কেন কথা বলবে! বাবর আজমরাও এমন এক অবস্থায় পড়ে গেছেন, যেখানে থাকতে চাননি। মূলত হারের বৃত্তে ঘুরছে দুটি দলই, কলকাতায় আজ মঙ্গলবার সেই বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জ।
ইডেন গার্ডেন্সে সাকিব-বাবরদের লড়াই শুধু চ্যালেঞ্জেরই নয়, টিকে থাকারও বটে। পাকিস্তানের সেখানে চোখ রাঙাচ্ছে ছিটকে পড়ার বড় শঙ্কাও। দুপুর আড়াইটায় শুরু হওয়া ম্যাচে ফল যদি বাবররা নিজেদের পক্ষে না আনতে পারেন, তাহলে ভারত থেকে তল্পিতল্পা গুটানো শুরু করতে হবে। সাকিবরা তবে আরও বড় কিছুই হারাবে। কাগজে-কলমে বিশ্বকাপের সেমির আশা শেষ হলেও বাংলাদেশের এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ৮ নম্বরের ভেতর থাকার চ্যালেঞ্জ। পাকিস্তানের মাটিতে বসতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে হলে, কঠিন কাজটিই করতে হবে। হারাতে হবে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তিন দলকে। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অন্তত দুটি দলকে তো বটেই!
সাকিবদের সেই নতুন স্বপ্নের শুরুতে বড় বাধা পাকিস্তান। টেবিলের নয় নম্বরে থাকা বাংলাদেশ কতটুকু পারবে, দলের নেতার কাছে এমন একটি প্রশ্ন গিয়েছিল। গতকাল সেই প্রশ্নের উত্তর দৃপ্ত কণ্ঠে দিতে না পারলেও আরেকবার আশার কথা শুনিয়েছেন সাকিব, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি একটা লক্ষ্য। কত ওপরে থেকে শেষ করা যায় সেটাও তো একটা লক্ষ্য। আমরা যেভাবে আশা করেছিলাম, সেভাবে করতে পারিনি। কিন্তু যে কয়টি ম্যাচ আছে, যদি ভালোভাবে খেলতে পারি, রেজাল্ট যদি আমাদের পক্ষে আসে। তাহলে আমরা স্বস্তি নিয়ে ফিরতে পারব। তিনটি ম্যাচ আছে, কালকে (আজ) একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এবং সেভাবে ফোকাস করার চেষ্টা করব।’
পাকিস্তান অবশ্য স্বস্তি নিয়ে ফিরতে নয়, তারা চাচ্ছে শীর্ষ চারের একটি স্থান। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের সবটা নিয়ে লড়াইয়ের কথা শুনিয়েছে তারা। দুদল সবশেষ ম্যাচ হারলেও আজ অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই নামতে পারে। বাবর-শফিকদের অফ ফর্ম, আর শাহিন-রউফদের লাইন লেন্থ নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও পাকিস্তান আশাবাদী বিশ্বকাপে টিকে থাকার ব্যাপারে। ঘরের মাঠের ন্যায় বাংলাদেশের পরিচিত আঙিনায় সাকিবদের সমীহও করছে তারা।
পাকিস্তানের কোচ গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্ন বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে সম্মান করি। তাদের মুখোমুখি হতে ভালোভাবে প্রস্তুত আমরা। এমন এক অবস্থায় পড়ে গেছি যেখানে আমরা থাকতে চাইনি। ভালো প্রস্তুতি নিয়ে, নিজেদের সেরাটা দিয়ে শেষ ৩ ম্যাচ খেলতে চাই। এটা অবশ্যই কষ্টদায়ক। ছেলেরা কালকের (আজকের) সুযোগ কাজে লাগাতে মুখিয়ে আছে।’
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান সেখানে ছয়টির দুটিতে জিতেছে। হেরেছে যদিও টানা চারটি ম্যাচ। আজ বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জে মুখোমুখি দেখার হিসাবেও বাংলাদেশের চেয়ে যোজন এগিয়ে পাকিস্তান। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ৩৮ বার মুখোমুখি হয়েছে দুদল। লাল সবুজদের জয় সেখানে মোটে পাঁচটি। বিপরীতে পাকিস্তান জিতেছে ৩৩টিতে। বিশ্বকাপে অবশ্য এখনও সমানে সমান আছে দুদল।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অভিষেকে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল। ৬২ রানের সেই তাক লাগানো জয় পরে ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পেছনে প্রভাবকও ছিল। বাবর-শাহিনদের কাছে ২০১৯ বিশ্বকাপে হারলেও সাকিবদের আশা জাগাতে পারে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ। আফগানিস্তানের কাছে হেরে যাওয়া পাকিস্তানকে হারাতে পারলে আশার পালে আরেকটু হাওয়া জুড়বে।
শেষের আগেই বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়া সাকিবদের আজ মূলত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে টিকিট নিশ্চিতের লড়াই!