প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৩৮ পিএম
ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে ২০১৯ সালে বোর্ডের কাছে তিনটি দাবি রেখেছিলেন বিরাট কোহলিরা। প্রথমটি ছিল, সফরে স্ত্রী বা বান্ধবীকে সঙ্গে রাখার অনুমতি। চেয়েছিলেন সংরক্ষিত রুম এবং পর্যাপ্ত কলা। সব দাবিই সেবার রেখেছিল ভারতের ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড বিসিসিআই। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও সঙ্গে স্ত্রীকে রাখতে চেয়েছিলেন, যদিও শেষ পর্যন্ত সেটি আর হয়ে ওঠেনি। এবার ভারতের মাটিতে আরেকটি বিশ্বকাপেও তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গ দিচ্ছেন তাদের স্ত্রী, বান্ধবী কিংবা পরিজন। তবে দূর থেকে!
মাঠের ভেতরে, বাইরে কিংবা গ্যালারিতে প্রায়ই গলা ফাটাতে দেখা যায় খেলোয়াড়দের প্রিয়জনকে। মাঠে দুর্দান্ত কোনো অনুভূতির উদযাপন অথবা স্পেশাল কোনো ইঙ্গিতে খেলোয়াড়রাও ভাগাভাগি করেন আনন্দ। বিরাট কোহলি, কুইন্টন ডি ককরা তো সুযোগ পেলেই ছোটেন প্রিয়জনের কাছে। তবে আগের মতো বিশ্বমঞ্চে এবারও আছে অনেক যদি-কিন্তু... মনোযোগে চিড় ধরতে পারে এমন কারণ দেখিয়ে পরিবারকে পাশে রাখার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে প্রায় প্রতিটি টিম ম্যানেজমেন্ট বা বোর্ড। বৈশ্বিক আসরে তাই স্ত্রী-সন্তানদের থেকে দূরেই থাকতে হয়। ফুটবলে হরহামেশা প্রিয়জনের সঙ্গে থাকার বিষয়টি দেখা গেলেও ক্রিকেটে তার উল্টোটাই বটে!
বিশ্বকাপ মানেই কত-শত কৌশল, হাজারো জল্পনাকল্পনা। একেকটি বিশ্বকাপে একেক ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক প্ল্যান-প্রোগ্রাম নিয়েই নামে বড় দলগুলো। তাছাড়া বোর্ড বাড়তি খরচ বাঁচাতেও পরিবারকে দূরে রাখতে চায়। তবে বাটলার-মঈন আলিদের জন্য থাকছে আরেকটি সুবিধা। কোনো ক্রিকেটার যদি তার পরিবারের সদস্যদের বিশ্বকাপের দেশে রাখতে চায়, তবে সব খরচ বহন করতে হবে তাকেই। কিন্তু কোনোভাবেই ক্রিকেটাররা যে হোটেলে থাকবেন সেই হোটেলে থাকতে পারবেন না!
বিষয়টি মেনেই বিশ্বকাপে প্রিয় সঙ্গীকে সাপোর্ট করতে ভারতে এসেছেন তারাও। কেউ এনেছেন স্ত্রী, কেউ বান্ধবী। কেউ ভারতে উড়িয়ে নিয়ে এসেছেন মা-বাবা কিংবা ভাই-বোনকে। বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হাবিব দলকে অনুপ্রাণিত করছেন মাঠ থেকে। বাটলাররা নিয়ে এসেছেন তাদের বান্ধবীদের। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার কুইন্টন ডি কক সেখানে সবচেয়ে বেশি লাভবান। তার স্ত্রী শেসা হার্লি কাজ করেন স্পোর্টস নিয়ে, ক্রিকেট নিয়ে তাদের মাঝে আড্ডাটাও জমে বেশ। ভারতে এসেছেন কুশল মেন্ডিসের স্ত্রী নিশেল ও লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকার স্ত্রী সুলোচানা দিলরুখশি। গ্যালারিতে মঈন আলির হয়ে গলা ফাটাবেন ফিরোজা হোসেইন, ডেভিড মালানের স্ত্রী ক্লেরে মোট্রাম, স্যাম কারানের বান্ধবী ইসাবেলা গ্রেস। প্রোটিয়া স্পিনার তাবরেজ শামসির স্ত্রী খাদিজা শেরিফ আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার টিম হোটেলের কাছাকাছি। ভারতের মাটিতে খেলা হলেও দলের ট্যুরে সঙ্গী হচ্ছেন কোহলি-রোহিতদের স্ত্রীরাও। পেশাদার ফিজিক্যাল ট্রেনার লুসি বাটলারকে পাশে পেতে চাইলেও নিয়মের জালে আটকে আছেন জস বাটলার।
ফুটবল বিশ্বকাপে ছুটির দিনগুলোয় স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারেন ফুটবলাররা। ক্রিকেট বিশ্বকাপেও ছিল এমন। অনেক ক্রিকেটার মনে করেন যে, স্ত্রীদের উপস্থিতিতে বিদেশ সফরে একটা বাধা তৈরি হয়। আবার অনেকের ধারণা, শারীরিক কিংবা মানসিক অবসাদ কাটাতে প্রিয়জনকে কিছুক্ষণের জন্যও পাওয়া বড় ব্যাপার। অনলাইনে বা ফোনে যদিও যোগাযোগ রাখতে পারেন। তবে ড্রেসিংরুম তো দূরে, টিম হোটেলেও প্রিয়জনের ঘেঁষার সুযোগ নেই। তবুও প্রিয়জনকে গ্যালারিতে গলা ফাটাতে দেখে কিংবা মাঠের বাইরে একই দেশে থাকার আনন্দ আরও অনুপ্রাণিত করতে পারে ক্রিকেটারদের।