× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ক্রিকেটের পাশাপাশি পর্যটনের সম্ভাবনা

আমিরুল আবেদিন

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ২২:০৪ পিএম

আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:২৫ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। ওয়ানডে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরের মূল আয়োজন শুরু হবে। ২০২৩ সালে আয়োজিত ক্রিকেট বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে বহু আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে ভারত। কারণ বিশ্ব আসরের আয়োজনের মাধ্যমে তাদের পর্যটন খাতের সম্ভাবনা ও উদ্দেশ্য সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। ইতোমধ্যে ভারতে অবস্থিত ট্রাভেল ও ট্যুরিজম কোম্পানিগুলো নানা পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে। বিশ্বকাপের মূল আসরে খেলা ১০টি দলের সমর্থকরা স্বভাবতই এই প্যাকেজ দ্বারা আকৃষ্ট হবেন। 

ইতোমধ্যে এয়ারবিএনবি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রতীক্ষারত সমর্থকরা প্ল্যাটফর্মে এসে ভালো থাকার জায়গা খুঁজে চলেছেন। আহমেদাবাদে ভালোভাবে থাকার জায়গা খোঁজার ক্ষেত্রে সার্চের পরিমাণ ৪০০০ শতাংশ বেড়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, সমর্থকরা তাদের দল ও পছন্দের কথা বিবেচনা করে ইতোমধ্যে বুকিং শুরু করে দিয়েছেন। 

তাদের ওই প্রতিবেদনে এ-ও জানা গেছে, ট্রাভেল ও ট্যুরিজম প্যাকেজের খোঁজ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য থেকেই বেশি আসছে। পুনে, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, লক্ষ্নৌ শহরগুলোর হোটেল ও আবাসনের চাহিদাও আচমকা বেড়ে গেছে।

বিশ্বকাপে দর্শক খেলা দেখতে আসবেন। কিন্তু তাদের পরিকল্পনায় বৈচিত্র্যময় ভারত ভ্রমণের। যাত্রা অনলাইন নামক ভারতীয় এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ভারত মালিক জানান, বিশ্বকাপের আগেই হোটেল বুকিং বেড়ে গিয়েছে। হোটেলে পর্যটকদের জায়গা করে দেওয়ার কাজে তারা হিমশিম খাচ্ছে। যেসব ম্যাচের দিনে হোটেল বুকিং বাড়ছে সেসব দিনে চাহিদার সুযোগ নিয়ে অনেক চার বা পাঁচ তারকা হোটেল তাদের সেবার মূল্য ১০ থেকে ১৫ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। 

তা ছাড়া বিমানসেবাকেও ব্যস্ত সময় পার করতে হবে। চাহিদা এতটাই বেড়ে গেছে যেতিন তারকা হোটেলও তাদের রুমের ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমানযাত্রাও বিশ্বকাপের সময় ৩৮ গুণ বেড়েছে। আইসিসির টিকিট ভেন্যু যেখানে সেসব এলাকায় হোটেল বুকিং বেড়েছে। হোটেল ভাড়া যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বিমানযাত্রার খরচ। তবে হোটেল ভাড়ার মতো বিমানের ভাড়া অতটা বাড়বে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেবার চাহিদা এবং সেবা প্রদানের সক্ষমতার ভিত্তিতে তারা ভাড়া নির্ধারণ করবে।

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফাইনাল ও সেমিফাইনালকে কেন্দ্র করে মুম্বাই, কলকাতা, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, ধর্মশালা, হায়দরাবাদ, লক্ষ্নৌ ও পুনেতে এখনোই অনেকে আসতে শুরু করেছেন। আহমেদাবাদেই বুকিং চাহিদা বেশি। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ জ্বরে পুড়ছে ভারত। ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীরাই বেশি তৎপর। বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষে কলকাতা, হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদের সড়কের রূপ গেছে বদলে। সবখানেই ক্রিকেটের ছোঁয়া। ক্রিকেটকেন্দ্রিক আয়োজনের ফলে ভারত এবার তাদের পর্যটন খাতকেও সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাবে। 

ক্রিকেটপ্রেমীরা ম্যাচ দেখতে আসবেন। কিন্তু ভারতের বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি ও দর্শনীয় স্থানের লাভ কী হবে? এক্ষেত্রে পর্যটন নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনার বিষয়টি বিচার করে দেখা জরুরি। এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য অনলাইন বুকিং সার্ভিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর অক্টোবর-নভেম্বরে বুকিং চাহিদা ২০০ শতাংশ বেড়েছে। ক্রিকেট নিয়ে ভক্তদের এই আগ্রহের পরিমাপ উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই বিশদভাবে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সমর্থকরা ইতোমধ্যে ভারতের বিভিন্ন শহরে বুকিং নিশ্চিত করে এসেছেন। অনেকে বুকিং করেছেন মাসব্যাপী থাকার জন্য। তাদের বুকিং এক্সটেন্ড করারও সুবিধা রয়েছে। অর্থাৎ যেসব দিনে তাদের পছন্দের দলের ম্যাচ থাকবে না, সেদিন শহরগুলো ঘুরে দেখা যাবে। অনেক ট্রাভেল কোম্পানি ইতোমধ্যে কিছু প্যাকেজও চালু করেছে। 

এসওটিসি ট্রাভেল নামের একটি ট্রাভেল কোম্পানির পরিচালক ড্যানিয়েল ডি সুজা বলেন, ‘বিশ্বকাপ উপলক্ষে সমর্থকরা আসছেন। তারা আসার সময় ওই শহর সম্পর্কে নানা খোঁজখবর নিচ্ছেন। আমরা ট্রাভেল কোম্পানি হিসেবে কনসালট্যান্সি সেবাও দিয়ে থাকি। তখন পর্যটকরা প্যাকেজের খোঁজ করেন। তাদের কনসালট্যান্সি দেওয়ার মাধ্যমেই আমরা বুঝতে পারি কেমন কম্বো প্যাকেজ দেওয়া যেতে পারে। কারণ মাসব্যাপী এই আয়োজনে যারা প্রিয় দলকে সমর্থন জানাচ্ছেন, প্রতিদিন তো তাদের দলের খেলা দেখার সুযোগ নেই। তাই অবসরে তারা যেন উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য প্যাকেজ নির্ধারণ করতে হয়।’ 

ইতোমধ্যে বিভিন্ন ট্রাভেল কোম্পানি প্যাকেজের মাধ্যমে পর্যটকদের বিনোদনের ব্যবস্থা করেছে। বিশেষত ভারতের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্য সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্টরাও নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন। ব্যানার-ফেস্টুন এমনকি ডিজিটাল বিলবোর্ডেও ‘বিউটিফুল ভারত’ নামক ছোট ট্রেলার ভিডিও দেওয়া হচ্ছে। ভারতে আসা বিদেশিদের মধ্যে করপোরেট কর্মকর্তা, দম্পতি, এমনকি পুরো পরিবারও রয়েছে। তাই পর্যটকদের সেবা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন। ধর্মশালার অনেক ট্রাভেল কোম্পানি ক্যাম্পিং করার প্যাকেজ রেখেছে। প্যাকেজগুলো সম্পর্কে একটু জানানো দরকার। 

ধর্মশালা : ধর্মশালার পাহাড়ি অঞ্চলে ক্যাম্প করা, প্যারাগ্লাইডিং ও ট্রেকিং করার মাধ্যমে ওই অঞ্চল সম্পর্কেও মানুষ জানতে পারবেন। তা ছাড়া ম্যাচের দিন তো সমর্থনের উত্তেজনা রয়েছেই। 

লক্ষ্নৌ ও কলকাতা : এ দুই শহর ভীষণ ব্যস্ত। ক্রিকেট নিয়ে দুই শহরেই রয়েছে প্রবল উত্তেজনা। তবে কলকাতা কিংবা লক্ষ্নৌ গেলে শহরের সঙ্গেই সম্পৃক্ত থাকতে হবে। সেজন্য ট্রাভেল কোম্পানিগুলো ‘ফুড ট্রেইল’ নামে নতুন একটি ট্রাভেল প্যাকেজ উপস্থাপন করেছে। কলকাতা কিংবা লক্ষ্নৌ শহরে ঘুরতে ঘুরতে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। 

গুজরাট : গুজরাট অঞ্চলের আহমেদাবাদে পাকিস্তান-ভারত ম্যাচ নিয়েই সবার আগ্রহ। গুজরাটে সাফারি কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের অনেক সুযোগ রয়েছে। পর্যটকরাও ইতোমধ্যে গুগলে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছেন।

হায়দরাবাদ, মুম্বাই এমনকি পুনে শহরকেও সাজানো হয়েছে দর্শকদের আকর্ষণের জন্য। এই আকর্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার গুরুত্ব কম নয়। ভারতের পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্টরা এই সম্ভাবনা প্রথমেই বুঝতে পেরেছিলেন। ফলে চলতি বছর ভারতে আয়োজিত বিশ্বকাপ শুধু ক্রিকেট নয়, ভারতের বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য পৃথিবীর কাছে আরও স্পষ্টভাবে ছড়ানোর সুযোগ হিসেবেই ধরে নিতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা