× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নাজমুল হোসেন শান্তর সাক্ষাৎকার

শট খেলার সামর্থ্যটাই বদলে ফেলেছি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৪৫ পিএম

আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৫৯ পিএম

শট খেলার সামর্থ্যটাই বদলে ফেলেছি

একটা সময় মাঠের লড়াইয়ে ব্যাটিংটা ভালো যায়নি। এজন্য সমালোচনার বিষাক্ত তীর, বিদ্রুপ কত কিছুই না হজম করতে হয়েছে। সেই খারাপ সময় পেছনে ফেলে এসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এখন নিয়মিতই হাসছে তার হাতের ব্যাট। নিজের ব্যাটিংয়ের এ পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেছেন তরুণ এ টপ অর্ডার ব্যাটার-

৩০ অক্টোবর, ২০২২ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭১ রানের ইনিংসের পর থেকে দারুণ ছন্দে আছেন। এরপর খেলা ১৭ ওয়ানডেতে ব্যাট করেছেন ৪০-এর ওপর গড়ে। এই পরিবর্তন নিয়ে বলবেন। 

নাজমুল হোসেন শান্ত : এটা কোনো পরিবর্তন না। মনে হয়, এই পরিবর্তনের আগে আমি প্রস্তুতিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি এবং নির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করেছি। যেটা হয়েছে, আমি পারফর্ম করতে পারিনি। কিন্তু আমি আমার স্কিলের উন্নতিতে নজর রেখেছিলাম এবং ম্যাচের মধ্যে নিজের মানসিকতা ঠিক রেখেছি। যদিও আমার সময়টা ভালো ছিল না, কিন্তু নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেছি এবং ওই অনুযায়ী কাজ চালিয়ে গেছি। আমি নির্দিষ্ট জায়গা নিয়ে কাজ করেছি এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমি সফল হয়েছি।

এই সময়ের মধ্যে শুধু আফগানিস্তান সিরিজে প্রত্যাশার চাপ পূরণ করতে পারেননি। আপনি সেখান থেকে কীভাবে ফিরে এসেছেন?

শান্ত : আমার সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার অভ্যাস আছে। যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করেছি, বেশ কয়েকবার হতাশ করেছি। তাই যদি দুই তিন ম্যাচ খারাপ খেলি, মনে হয় এটা ঠিক হয়ে যাবে। মূলত ওই সিরিজে আমি ভুল করেছি, তাই রান করতে পারিনি। আমি চেষ্টা করেছি নিজের ভুলগুলো শোধরানোর। আমি বিশ্বাস করি, সব ক্রিকেটার সব ম্যাচে রান করতে পারবে না। এক দুই ম্যাচ খারাপ যাবে। মূল বিষয় হলো, কত তাড়াতাড়ি এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা যায়। আমি লক্ষ রেখেছি কোন জায়গায় আমার ভুল আছে এবং সেগুলো নিয়ে কাজ করেছি।

আরও পড়ুন - ভারতে ভীতসন্ত্রস্ত বাবররা

অনেকেই মনে করে আপনি আপনার ব্যাটিংয়ের ধরন পরিবর্তন করেছেন। এটা বিশ্বাস করেন?

শান্ত : দেখেন, খেলার ধরন তখনই পরিবর্তন হবে যখন আপনার হাতে অনেক সুযোগ থাকবে। আমার মনে হয়, স্কিলের উন্নতির কারণে মনে হচ্ছে আমার খেলার ধরন পরিবর্তন হয়েছে। দেখেন আগে, আমি একভাবে ব্যাটিং করতাম। এখনও ওইভাবে ব্যাটিং করি। এখন চাপ সামলাতে পারি। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারি। এজন্য সবার মনে হয়, আমার খেলার ধরন পরিবর্তন হয়েছে। আমি নিজের শটের ওপর নিয়ন্ত্রণ এনেছি। এখন জানি, কীভাবে কী ধরনের উইকেটে ব্যাট করতে হয়। এখন জানি, ভালো উইকেটে কেমন শট করতে হবে এবং কঠিন উইকেটে কীভাবে ব্যাটিং করতে হবে। আমার মনে হয়, আমি সব ধরনের উইকেটের জন্য স্কিলে উন্নতি করেছি। তাই খেলার ধরনে একটু পরিবর্তন।

এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা হাফ সেঞ্চুরি উইকেট বিবেচনায় অন্যতম ভালো ইনিংস?

শান্ত : আমার মনে হয় ভালো ইনিংস। সত্যি বলতে আমি যদি ওই ম্যাচে ১৩০ রান করতে পারতাম তাহলে আমরা ম্যাচ জিততে পারতাম। কিন্তু আমি যেভাবে ইনিংস গড়েছি তাতে আমি খুশি। উইকেটের কথা বিবেচনায় নিলে মাঝের ওভারে আমি অনেক কঠিন সময় পার করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে খেলা ইনিংসগুলোর মধ্যে এটা সেরা। আমি মনে করি, আমার পজিশনের সেরা ব্যাটাররা তাদের ৮০-৯০ রানের ইনিংসগুলোকে ১৩০ রানে পরিণত করে এবং দলকে জেতাতে সাহায্য করে। বিশ্বাস করি, আমার এখনও কিছু ঘাটতি আছে। আমি ভবিষ্যতে সেগুলোকে ভালো করতে কাজ করছি যাতে ৯০ রানের ইনিংসগুলো ১৩০-এ পরিণত করতে পারি। 

পুল শট ভালো খেলছে, স্কয়ার উইকেটেও তাই এবং লেগ সাইডে অনেক বেশি রান করছেন। এটার পেছনের রহস্য কী?

শান্ত : সত্যি বলতে, আমি কখনই স্কয়ার উইকেটে খুব ভালো ছিলাম না। আমার এখানে ঘাটতি ছিল। আমি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করি, দেখেছিলাম যারা সাফল্য পেয়েছেন তারা সবাই স্কয়ার উইকেটে ভালো। আমি অনেক পরিশ্রম করেছি এটাতে। এর কারণে আমি শর্ট বলে ভালো রান করছি। লেগ সাইডে খেলতে পারছি। এমনকি কেউ যদি আমার পা বরাবর বল করে সেখান থেকেও আমি রান করতে পারব। তবে সত্যি বলতে যেসব জায়গায় ঘাটতি ছিল সেসব জায়গায় অনেক উন্নতি করেছি।

ধীরগতির বলে ফুটওয়ার্ক উন্নতি করেছেন। তাদের বলে বারবার প্রান্ত বদল করেন। এটাতে কি চাপ কমে?

শান্ত : শতভাগ। আমার মনে হয়, স্ট্রাইক পরিবর্তন পেস-স্পিন দুই বোলারের বিপক্ষেই গুরুত্বপূর্ণ। স্পিনের বিপক্ষে আমার মনে হয়, যত বেশি সম্ভব প্রান্ত বদলের চিন্তা থাকে। দেখেন, ১১ থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত চারজন ফিল্ডার সীমানায় থাকে। তাই এই সময়ে ফাঁকা জায়গায় বাউন্ডারি বের করার চিন্তাও করতে হয়। আমি সব সময় চিন্তা করি, প্রতি এক দুই ওভারে কীভাবে বাউন্ডারি বের করা যায়। অনুশীলন করে আমি আমার শটের রেঞ্জ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। যখন এই ধরনের ডেলিভারি পাই, আমার মনে হয় বাউন্ডারি বের করে নিতে হবে। তবে এখনও আমার উন্নতি করতে হবে। কারণ যখন অনেক ভালো দলের বিপক্ষে খেলব, আরও বেশি বুঝতে পারব। এটা বলব না, আমি ভালো দলের বিপক্ষে খেলিনি। কিন্তু ১০-১৫ বছর টিকে থাকতে আমাকে আরও বেশি উন্নতি করতে হবে।

আপনার কোচ সোহেল ইসলাম অখুশি হন, যখন আপনি ফিফটির পর আউট হন। এটা কি চাপ নাকি অনুপ্রেরণা?

শান্ত : আমার মনে হয় দুইটাই। তবে এটা অনুপ্রেরণাই। যারা বিশ্বজুড়ে তিন নম্বরে ব্যাট করে আমার মনে হয় না তাদের জন্য ৫০-৬০-৭০ কোনো মানসম্পন্ন রান। তাই আমাকে ব্যাট করতে হবে শতকের চিন্তা করে। একই সময়ে কোচের পক্ষ থেকে চাপ। আমার মনে হয়, এটা দরকার। কারণ এই চাপ নিশ্চিত করে, আমি এই ভেবে খুশি হতে পারি না যে আমি এখনও আমার দায়িত্ব শেষ করতে পারিনি।এটা শুধু ব্যক্তিগত লক্ষ্য না, আমার মনে হয়, আমি ১০০ অথবা ১৫০ করলে সেটা দলের জন্যই ভালো। দল ভালো জায়গায় পৌঁছাবে। যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০০ করতে পারতাম, তাহলে হয়তো দল জিতত, আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেছি দল জিতেছে।

বিশ্বকাপে মূল চ্যালেঞ্জ কী?

শান্ত : বিশ্বকাপে আমার মূল চ্যালেঞ্জ মনে হয়, আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। কারণ প্রত্যেক ম্যাচেই ভালো করতে হবে। সব দলই জিততে চাইবে এবং এই চাপ নিয়ে আমাদের ভালো করতে হবে। এটা মূল কাজ। এ ছাড়াও বিশ্বকাপে মানিয়ে নেওয়াটাও একটা ব্যাপার। এটা অবশ্য ইতোমধ্যে আমি করেছি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যখন সেঞ্চুরি করেছি, ওই ইনিংসে যেভাবে ব্যাট করা দরকার ছিল, আমি ঠিক সেভাবে ব্যাটিং করেছি। এশিয়া কাপে কঠিন উইকেটে আমি রান করেছি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যখন রান করেছি সেটা পুরো ফ্ল্যাট উইকেট ছিল। আমি উইকেট অনুযায়ী ব্যাট করতে পেরেছিলাম। যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে খেলেছি সেটা ভিন্ন পিচ ছিল। আমার ধারণা ১০-১২ ম্যাচে অভিজ্ঞতা হয়েছে ভালো ও খারাপ দুই উইকেটে খেলার। আমি এখন বুঝি কীভাবে উইকেটে মানিয়ে নিতে হবে। তাই আমার মনে হয় না, এই ধরনের উইকেটে খেলা কঠিন হবে। ওই দিন কীভাবে ব্যাট করতে হবে সেটাই মূল বিষয়। যেভাবে ব্যাট করছি, আশা করি ভালো একটা টুর্নামেন্ট কাটাতে পারব। 

বিশ্বকাপের আগে ড্রেসিংরুমের ভেতর-বাইরে নিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে না…

শান্ত : যে যা-ই বলুক, এটা ড্রেসিংরুমে কোনো প্রভাব ফেলে না। মূল বিষয়, আমি আমার কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারতেছি কি না। আমার মনে হয় এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার নিজের স্কিলের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং পরিকল্পনা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। প্রতি ম্যাচে বল বাই বল চিন্তা করে খেলতে হবে। মূল কাজ হলো কীভাবে আমি আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করি।

হাথুরুসিংহে আপনাকে বেশ পছন্দ করে। আপনি তার মেথডটা বলতে পারবেন?

শান্ত : ব্যক্তিগতভাবে এটা বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। তিনি যখন প্রথম আসেন আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং আমার সঙ্গে অনেক কাজ করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে এটি অনুপ্রেরণাদায়ক (খেলোয়াড়দেরকে তাদের স্বকীয়তার বাইরে যেতে না দেওয়া)। তিনি যখন প্রথম আসেন তখনই স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং এটা আমার জন্য সত্যিই ভালো কাজ করেছে। আপনি যেমন বলেছেন, আমরা দেখেছি যে খারাপভাবে খেলার পরে আমরা একটু গুটিয়ে যাই এবং একইভাবে আমরা যখন ভালো করি তখন আমরা উৎফুল্ল থাকি। আমি মনে করি, আমাদের উভয় ধারাতেই থাকা উচিত এবং তিনি এটার ওপর অনেক জোর দেন। যেমন তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন তিনি ব্যর্থ কিংবা সফল যাই হন না কেন ব্যাটিংয়ের ধারায় পরিবর্তন করা উচিত না। আমরা আমাদের ভূমিকা এবং আমাদের ব্যাটিং পদ্ধতি সম্পর্কে খুব স্পষ্ট। আমি অনুভব করি যে, আমি নিয়মিত রান করছি এবং এমনকি যখন আমি রান করছি না তখনও আমি নামছি না এবং এটি আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং একজন কোচ হিসেবে তিনি আমাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা