এক্স-৩৬০ ফাইট নাইট
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৫৮ পিএম
এক্স-৩৬০ ফাইট নাইট-ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন’ এর মেইন ইভেন্টে ভারতের বক্সার অরুন অন্তিলকে হারিয়ে পতাকা নিয়ে উদযাপনে মেতেছেন বাংলাদেশের বক্সার ওমর ফারুক— প্রবা ফটো
যমুনা ফিউচার পার্কে ইস্ট কোর্টের উপরের সব তলাগুলো হয়ে উঠেছিল অস্থায়ী গ্যালারি। ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনি আর মুহুর্মুহু করতালিতে মুখরিত ছিল বিকাল। দর্শকদের আগ্রহ আর উন্মাদনা চলল রাত নয়টা অবধি। ক্রিকেট উন্মাদনার দেশে বক্সিং নামক খেলাটি জনপ্রিয়তায় অনেকটা পিছিয়ে বটে! তবে এত্তসব দর্শক আর তাদের গলা ফাঁটানো উল্লাসে জনপ্রিয় খেলার তকমা দিলেও ভুল কিছু হবে না হয়ত!
গতকাল শনিবার দর্শকদের ছয় ঘণ্টা উপভোগ্য করে তুলেছিল বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটি। তাদের অনবদ্য আয়োজনে বসেছিল বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল বক্সিং ইভেন্ট ‘এক্স-৩৬০ ফাইট নাইট—ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন’। প্রতিযোগিতায় ভারতের বক্সারদের বিপক্ষে মোটাদাগে ছিল বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের জয়জয়কার। আন্ডার কার্ড থেকে শুরু করে স্পেশাল অ্যাট্রাকশন বাউট হয়ে মেইন ইভেন্টে সফরকারী বক্সারদের হারিয়েছে ওমর ফারুক-আবদুল মুত্তালিবরা।
বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং বক্সিং কাউন্সিল এর ওয়ার্ল্ড জেনারেল সেক্রেটারী (সাউথ আমেরিকা) মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে পরিচালিত হয়েছে উপভোগ্য আসরটি। প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা পরিষদ সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু। উপস্তিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদুত লিও টিটো এল আউসান। অন্যানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া বক্সিং কাউন্সিলের প্রমোটার মাইক আল্টামুরা সহ আরো অনেকে।
বক্সিংয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা শুনিয়ে ক্রীড়া সংগঠক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা পরিষদ সদস্য মোজাফফর হোসেন বলেছেন, ‘তরুণ বয়স থেকেই আমি খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত— সেই পাকিস্তান আমল থেকে। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, তাছাড়া ফুটবল সহ প্রায় সব খেলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রোফেশনাল বক্সিং আমাদের দেশে নাই। ঠিক সেই কারণেই আমাদের বক্সিং জনপ্রিয় হচ্ছে না। বাইরে থেকে ভালো ভালো বক্সার এনে আমাদের খেলতে হবে।’
খেলাটিতে পৃষ্ঠপোশকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে এখানে এসে দেখেছি খেলাটার প্রতি মানুষের অনেক আগ্রহ আছে। দর্শকদের এই আগ্রহ যদি আমরা ব্যাপকভাবে প্রসারিত করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ যেমন আনন্দ উপভোগ করতে পারবে। তেমনি ক্রিকেট, ফুটবলের মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের পতাকা উড়িয়ে দিতে পারবে। প্রোফেশনাল বক্সিংয়ের মাধম্য আমাদের ছেলেরা আমাদের দেশকে পৃথিবীর মাঝে তুলে ধরতে পারবে। তারা উপার্জন করতে পারবে। যারা উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের মহান উদ্যোগকে সবাই স্বাগত জানাবে, সরকারি বা বেসরকারিভাবে পৃষ্ঠপোশক হয়ে আরও উৎসাহিত করবে।’
১০ রাউন্ডের প্রতিযোগিতায় প্রথম চার বাউন্ডে বাংলাদেশের সব প্রতিযোগীই জয়ী হয়েছেন। বাংলাদেশের মোহন আলী, আবদুল মোতালেব ও সাবিউলন ইসলাম হারিয়ে দিয়েছেন যথাক্রমে ভারতের বক্সার হারজত সিং, হারপ্রীত সিং এবং অংকিত কুমারকে। আন্ডার কার্ডে বাংলাদেশের ফরহাদ তরফদার হারিয়েছেন স্বদেশী সজীব মাহমুদকে।
বক্সিং নিয়ে মানুষের উন্মাদনা এবং আগ্রহকে আরও অনেকদূর নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মো. আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন, ‘আপনাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি, কথা দিচ্ছি— ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ প্রোফেশনাল বক্সিং সোসাইটির তত্ত্ববধায়নে বাংলাদেশে যে বক্সিং বিল্ড আপ হবে সেটা হবে দেশের অন্যান্য যত স্পোরস্ট আছে ক্রিকেট ফুটবল সবকিছুকে ছাড়িয়ে যাবে।’