প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:০৭ পিএম
আইসিসি ইভেন্ট বাদ দিন, ভারতকে শেষ কবে কোন বহুজাতিক টুর্নামেন্ট জিততে দেখেছেন? উত্তরটা হবে- ২০১৮। সেবারও মঞ্চ ছিল এশিয়া কাপ ফাইনাল। বাংলাদেশকে হারিয়ে সেবার শিরোপাটা ঘরে তুলেছিল রোহিত শর্মার দল। এরপর একে একে কেটে গেছে পাঁচটা বছর।
সীমিত ওভারের ফরম্যাটে দুটো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর একটা টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ চলে গেছে, ভারত খেলতে পারেনি ফাইনালেই। সাদা পোশাকে অবশ্য দুটো ফাইনাল খেলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের। কিন্তু লাভ কী, সেখান থেকেও তো ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই!
অথচ এই ভারতে কে নেই? রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের মতো ব্যাটার, জাসপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়াদের মতো খেলোয়াড়। এই দল নিয়েও কিছু জিততে পারছে না ভারত, বিষয়টা যেন দলের জন্যও বেশ অস্বস্তির। সে অস্বস্তিটা দূর করার সুযোগ আজ পেয়ে যাচ্ছে ভারত। শ্রীলঙ্কাকে হারালেই পাঁচ বছর পর আবারও কোনো বহুজাতিক ‘ফ্ল্যাগশিপ’ টুর্নামেন্টের শিরোপা উঠবে তাদের হাতে।
ভারতের দলটা দেখুন একবার। রোহিত আর কোহলি তো আগে থেকেই ছিলেন, সঙ্গে এখন লোকেশ রাহুল, শুভমান গিল, ঈশান কিষানরাও ব্যাট হাতে ভারতকে দিচ্ছেন ভরসা। হার্দিক পান্ডিয়া তো আরেক কাঠি সরেস, তিনি ব্যাট আর বলে দুহাতে দিয়ে যাচ্ছেন দলকে। এরপর বোলিংয়ে বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদ্বীপ যাদব, আর রবীন্দ্র জাদেজারাও আছেন বেশ ছন্দে। ‘এই দলটা না জিতে যাবে কোথায়!’Ñ ভাবনাটা আসতেই পারে।
কিন্তু তাদের দুর্বলতাটা কোথায়, তা ধরা পড়েছিল এক ম্যাচ আগে। সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে স্পিনের সামনে নাজেহাল হতে হয়েছে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে। এই দুর্বলতাটা যারা ধরিয়ে দিয়েছিল, সেই শ্রীলঙ্কারই যে মুখোমুখি হতে হবে আজ!
লঙ্কানরা খেলবে নিজেদের মাঠে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবারে ফুলহাউজ দর্শকদের সমর্থনটা যে তারাই পাবে, তা আর বলতে। লঙ্কানদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে সুপার ফোরের ওই ‘ক্লোজ’ম্যাচটাও। হোক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, কিন্তু আগের এশিয়া কাপটাও শ্রীলঙ্কা জিতেছিল। পরিস্থিতিটা কিন্তু ছিল এ রকমই। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে ‘তিন ম্যাচের ভারত-পাকিস্তান সিরিজ’এর আলাপ হচ্ছিল সর্বত্র। কিন্তু শেষমেশ সেবার ভারতের পথ আগলে ফাইনালে যাওয়া শ্রীলঙ্কা পাকিস্তানকে হারিয়ে জেতে শিরোপা। এবার ফাইনালের প্রতিপক্ষটা বদলে গেছে ঠিক, কিন্তু পরিস্থিতি তো আছে ওই এক রকমই! সেবারের মতো এবারের ফাইনালেও শ্রীলঙ্কার জায়গাটা ওই আন্ডারডগের চেয়ারেই। দুই টুর্নামেন্টের মাঝে এত মিল, শেষটাতেও নিশ্চয়ই একই রকম দৃশ্যই দেখতে চাইবে লঙ্কানরা!
একটা সময় এশিয়া কাপ নিজেই একটা স্বতন্ত্র টুর্নামেন্ট ছিল। এখনও আছে অবশ্য, তবে কাগজকলমে। ২০১৮ আসর বাদে শেষ কয়েক বছর ধরে টুর্নামেন্টটা হচ্ছে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ঠিক আগে, এশিয়ান দলগুলোর বাড়তি প্রস্তুতির সুযোগ করে দিতে।
তবে পুরো টুর্নামেন্টটা যতই অঘোষিত ‘প্রস্তুতিপর্ব’হোক, আজকের ফাইনালটা অন্তত তেমন হবে না। ভারতের ট্রফি কেসে শেষ পাঁচ বছর ধরে নেই কোনো বহুজাতিক শিরোপা। সে খরাটা ঘোচাতে আজ নিশ্চিতভাবেই মরিয়া হয়ে নামবে রোহিত শর্মার দল। ওদিকে শ্রীলঙ্কা?
ঘরের মাঠে এই টুর্নামেন্টটা জিতলে বিশ্বকাপের জন্য দল পেয়ে যাবে মহামূল্য এক মোমেন্টাম, সে দল, যারা এই দুদিন আগেও বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে বাছাইপর্ব খেলে। মোমেন্টাম পেয়ে যাওয়া হোক, কিংবা ভারতকে রুখে শিরোপাজয়, সুযোগটা শ্রীলঙ্কা হারাতে চাইবে কেন? আজকের এশিয়া কাপের ফাইনালটা তাই আভাস দিচ্ছে রোমাঞ্চেরই।