প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:০৪ এএম
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:১৫ পিএম
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের একদিন আগে প্রশ্নটা ধেয়ে গিয়েছিল তার কাছে। ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরের এই ম্যাচ হওয়ায় এর জন্য দলকে অনুপ্রাণিত করাটা কতটা কঠিন?’ বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের জবাব ছিল, ‘আপনি দেশের হয়ে খেলছেন, এর চেয়ে বড় অনুপ্রেরণাইবা কী হতে পারে আর?’
আরও পড়ুন : নিউজিল্যান্ড দলের একাংশ এখন ঢাকায়
প্রায় কাছাকাছি একটা প্রশ্নেরই মুখোমুখি হলেন গত শুক্রবার, ভারতের বিপক্ষে মাচের পর। সেখানেও তার সুরটা ছিল একই। বললেন, ‘দুই দেশের মধ্যে খেলায় আবার কিসের ডেড রাবার? আপনি আপনার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, সেটাও এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে।’ ভারতের বিপক্ষে ওই ‘নিয়মরক্ষার’ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ৬ রানে। এশিয়া কাপে নিজেদের অর্জনের খাতায় যা কিছু মধুর স্মৃতি যোগ হলো, তার একটা বড় অংশ তো এলো ওই ম্যাচ থেকেই!
সে ম্যাচটা একপাশে রাখলে দেখুন, আফগানিস্তান ম্যাচ বাদে দলের ব্যাটিং লাইনআপ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে প্রতিদিনই। বিশ্বকাপের আর বেশিদিন বাকি নেই। তার আগে ব্যাটিংয়ের এমন পরিস্থিতি শঙ্কার জোগান দিচ্ছে বেশ।
এশিয়া কাপের সুপার ফোরের একাদশ আর বিশ্বকাপের দলে পার্থক্য থাকবে বেশ। তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্তরা ফিরতে পারেন, তাতে শক্তিটা বাড়বে বেশ। তবে বিকল্পদের পারফরম্যান্সটা যেমন দেখা গেল এশিয়া কাপে, তাতে সদ্য চোটফেরত দুজনের ওপর যে চাপটা বেশিই পড়বে, তা একেবারে পরিষ্কার।
বিশ্বকাপের ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল আর লিটন দাস অনেকটাই নিশ্চিত। খোঁজ এখন তৃতীয় ওপেনারের। যে কারণে এশিয়া কাপের পাঁচ ম্যাচে বাজিয়ে দেখা হয়েছে চার ওপেনার, তিনটি ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশনে। মেকশিফট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ বাদে যাতে ব্যর্থ সবাই। এদিকে লিটন দাসের ফর্মও তো দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে দলের!
এশিয়া কাপের সুপার ফোরে তিন নম্বর জায়গা নিয়েও সমস্যা হয়েছে দলের। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত যদি ফেরেন, তাহলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এ ভাবনা খানিকটা স্বস্তি দিচ্ছে আপাতত। দলের মিডল অর্ডার এশিয়া কাপ পরীক্ষায় মোটামুটি উত্তীর্ণ। সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয় আর মুশফিকুর রহিমরা প্রতি ম্যাচেই প্রায় হাল ধরেছেন দলের।
তবে সাত নম্বর নিয়ে এশিয়া কাপের আগেও প্রশ্ন ছিল বেশ। সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি এই আসরেও। এই জায়গায় এসে তিনজন ব্যাটার খেলানো হয়েছে, তবে ভালো ইনিংসের আশা আশাই থেকে গেছে শেষমেশ।
সে কারণেই কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বললেন, ‘আমি খুব বেশি উত্তর পাইনি। কিছু উত্তর পেয়েছি। আরেকটি সিরিজ আসছে। আরও কিছু জায়গায় কাজ করার আছে। ভালো শুরু পাইনি বেশিরভাগ ম্যাচে। এটা একটা চিন্তার বিষয়। এ ধরনের কন্ডিশনে ভালো খেলা সহজ নয়। বেশিরভাগ দল ভুগেছে এখানে। কিছু উত্তর পেয়েছি। তবে কিছু খেলোয়াড় আমাদের ভালো খেলেছে।’
অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ম্যাচের আগেই সরলভাবে স্বীকার করে বলেছিলেন, দল এখনও ঠিক কম্বিনেশনটা খুঁজে পায়নি। জানিয়েছিলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে আমরা আরও ছয়টা ম্যাচ পাব। সবগুলো খেললে আমরা জানতে পারব যে আসলে আমরা কোথায় আছি।’
তবে এতসব সমস্যার ভিড়ে বোলিং বিভাগেও আছে সমস্যা। তবে সেটা ‘মধুর সমস্যা’ তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলামকে নিয়ে গ্রুপ পর্বের শেষ আর সুপার ফোরের দুটো ম্যাচ খেলা বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে খেলেছে মুস্তাফিজুর রহমান আর তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে। পাঁচ পেসারই আলো কেড়েছেন নিজেদের মতো করে। সে কারণেই তো কোচ হাথুরুসিংহে বললেন, ‘দলটা গোছানো কঠিনই হবে।’ ব্যাটিং, বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার এশিয়া কাপেও যে দলের পরিস্থিতিটা পুরোপুরি অম্লীয় হয়ে যায়নি, তার কৃতিত্বটা তো বোলারদেরই!