প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:২৮ এএম
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল বাংলাদেশের। আফগানদের বিপক্ষে ৮৯ রানের জয় এশিয়া কাপে শুধু আশা বাঁচিয়ে রাখেনি; নিশ্চিত করেছে টুর্নামেন্টের সুপার ফোর। আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ফল যা-ই হোক, নিশ্চিত বাংলাদেশের সুপার ফোর।
আফগানদের বিপক্ষে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং– তিন বিভাগেই বাংলাদেশের ছিল নজর কাড়া পারফরম্যান্স। ব্যাট হাতে দারুণ সেঞ্চুরি করে দলকে সাফল্যের পথ দেখিয়ে দেওয়ার নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
উইকেট থেকে সুবিধা পাওয়ায় দল ভালো করেছে বলে মনে করেন মিরাজ। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ম্যাচ শেষে জানান দলের জয়ের মূল কারণ দলীয়ভাবে পারফর্ম করা।
গত রবিবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ বলেন, ‘আমার মনে হয় দারুণ উইকেট ছিল। ছেলেরা ভালো খেলেছে। শুরুর দিকে উইকেটে কিছুটা মুভমেন্ট ছিল। প্রথমদিকে আমরা পরিস্থিতি ভালোভাবে মোকাবিলা করেছি।’ সাধারণত লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত মিরাজ। আফগান ম্যাচে প্রমোশন দিয়ে তাকে নামানো হয় ওপেনিংয়ে। সেখানে দলকে এনে দিয়েছে প্রত্যাশিত সাফল্য। এর জন্য টিম ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ দিয়ে মিরাজ বলেন, ‘এই কৃতিত্ব পুরোটা টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়কের। গতকাল (শনিবার) তারা আমাকে ওপেনিং করতে বলেছিল। আমি তাদের কথায় রাজি হয়েছি। কারণ, গত এশিয়া কাপের (ওয়ানডে সংস্করণ) ফাইনালে ওপেন করেছিলাম। সে কারণে আমার মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল।’
সেই আত্মবিশ্বাসে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান মিরাজ। অপরাজিত থাকেন ১১৯ বলে ১১২ রানে। এটাতে বেশ খুশি মিরাজ। বলেন, ‘আমি খুশি কারণ দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছি। মাঝের ওভারে যখন ব্যাটিং করছিলাম, তখন আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কারণ দল থেকে বলেছিল আমার স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে।’ মিরাজ-শান্তর সেঞ্চুরির পর সুপার ফোর নিশ্চিত হওয়া বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। লাহোরে খেলতে হবে স্বাগতিকদের বিপক্ষে। তাদের দারুণ বোলিং লাইনআপকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় যেকোনো বোলারকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আমার জন্য এটা আবার নতুন শুরু। যদি দল সুযোগ দেয়, পরের ম্যাচগুলোতে ওপেন করব।’
অন্যদিকে আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর মঞ্চে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জয়ের কৃতিত্ব দেন দলের সবাইকে। পুরো ইনিংস ব্যাটিংয়ের পর বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ভালো করাটা সহজ ছিল না বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সব বিভাগেই দারুণ খেলেছি। ৫০ ওভার ব্যাটিংয়ের পর ফিল্ডিং করা মোটেও সহজ ছিল না। আমরা ভাগ্যবান যে টস জিতেছি।’ মিরাজকে নিয়েও বেশ খুশি অধিনায়ক সাকিব। তিনি বলেন, ‘সে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছে। আমরা সব সময় বিশ্বাস করতাম তার মধ্যে সামর্থ্য আছে।’
মিরাজকে আগে মাঠে নামানো ছিল দলীয় পরিকল্পনার অংশ। সেই পরিকল্পনা কাজে লেগেছে বেশ ভালোভাবেই। এ ছাড়া বল হাতে পেসাররাও দিয়েছেন নিজেদের সেরাটা। এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পরিকল্পনায় সফল। পেসাররা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। এই কন্ডিশনে পেসারদের জন্য উইকেট নেওয়া সহজ ছিল না।’
আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ শুরুতে নজর কাড়ে মিরাজ-শান্ত জুটিতে। ব্যাটিংয়ের সময় দুজনের মধ্যে কী কথা হচ্ছিল? সেই উত্তর দেন মিরাজ। একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি আর শান্ত যখন ব্যাটিং করছিলাম, তখন আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো ছিল। আমরা বল টু বল কথা বলে খেলছিলাম। কীভাবে খেলব, কীভাবে টিমটাকে ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যাব।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি শান্তকে বলেছি, উইকেটটা অনেক ভালো উইকেট, তুই যদি স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলিস, রান করতে পারবি। যদি তুই নিজে মনে করিস, আমি আউট হব না, তাহলে কেউ আউট করতে পারবে না এই উইকেটে। ওইভাবে পরিকল্পনা করে, দুইজনে খেলেছি।’
এর আগে শ্রীলঙ্কা ম্যাচ শেষে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, আফগানদের বিপক্ষে শুধু জয় নিয়েই ভাবছেন। সেটাই হয়েছে। তখন আরও জানান, নিশ্চিত হলে তবেই ভাববেন সুপার ফোর নিয়ে। এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিতের পর এবার বাংলাদেশের লক্ষ্য নিশ্চয় সুপার ফোর নিয়ে ভাবনা।