পার্থ রায়
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩ ২১:৩২ পিএম
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৩ ২১:৩৩ পিএম
সাড়ে তিন বছর আগে অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হাতে বিশ্বমঞ্চে উড়েছিল বাংলাদেশের পতাকা। দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ অর্জন এসেছিল তাদের দারুণ পারফরম্যান্সে। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দেওয়া আকবর আলী-তাওহিদ হৃদয়দের নেওয়া হয়েছে সঠিক যত্ন। তরুণরা যেন হারিয়ে না যান, সেজন্য উচ্চতর ক্রিকেট প্রশিক্ষণের পাশাপাশি করা হয়েছিল মাসিক বেতনের ব্যবস্থা। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটে গভীর মনোনিবেশের সুযোগ পান। এখন তাদের হাতে ওঠার অপেক্ষায় দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের দায়িত্ব। সেই দায়িত্বের প্রথম ধাপ এশিয়া কাপ। এশিয়া সেরার মঞ্চে যুব বিশ্বকাপজয়ী পাঁচ ক্রিকেটারের জায়গা হয়েছে বাংলাদেশ দলে। দেশের ক্রিকেটকে বড় সাফল্য এনে দেওয়া ক্রিকেটারদের সামনে এখন সুযোগ বড় মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার।
আরও পড়ুন - বিশ্বাস রাখতে বলছেন রোনালদো
চলতি বছর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তোলা তাওহিদ হৃদয় ইতোমধ্যে একাদশে পাকাপোক্ত করেছেন নিজের জায়গা। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ীদের মধ্যে সবার আগে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া শরিফুল ইসলামে এখন পেস বোলিংয়ের অন্যতম ভরসা। ২০২১ সালে অভিষেকের স্বাদ পাওয়া শামীম পাটোয়ারী মাঝে খেই হারান। পথ ভুলতে বসা শামীম ফিরেছেন সঠিক ট্র্যাকে। এশিয়া কাপ দিয়ে ফের তার সামনে সুযোগ নিজেকে প্রমাণের। তানজিদ হাসান তামিম ও তানজিম হাসান সাকিবের প্রথমবার দলে ডাক পাওয়া এশিয়া কাপের এবারের আসরে। দুজনের এশিয়া কাপে সুযোগ মিলেছে অন্যদের ইনজুরির কারণে। তবে এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে ঠিকই প্রমাণ করেছেন নিজেদের। এশিয়া কাপে ভালো করলে তাদের জন্য খুলতে যেতে পারে বিশ্বকাপের দরজাও।
যুব বিশ্বকাপ জয়ের পর সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার অঙ্গীকার ছিল বিসিবির। সেই দলের সংবর্ধনায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, ‘আমরা ঠিক করেছি, অনূর্ধ্ব-২১ একটি ইউনিট আমরা গঠন করব। এই অনূর্ধ্ব-১৯ দলটার জন্য আগামী দুই বছর বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। স্পেশালাইজড ট্রেনিং, তাদের স্কিল বাড়ানোর জন্য। আর এই দুই বছর প্রতি মাসে প্রত্যেকে ১ লাখ টাকা করে পাবে। এটা দুই বছরের চুক্তি।’ সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছে বিসিবি। প্রত্যেক ক্রিকেটার বিশ্বকাপ জয়ের পর দুই বছর বিসিবির বিভিন্ন প্রোগ্রামের অংশ ছিলেন। ফলস্বরূপ একই সঙ্গে এখন জাতীয় দলেরও সদস্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের পাঁচ সদস্য। আরো বড় মঞ্চ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরার স্বপ্ন তাদের চোখে।
এশিয়া কাপে দলে থাকা পাঁচ ক্রিকেটারের পাশাপাশি জাতীয় দলে ইতোমধ্যে জায়গা পাকা করেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। টেস্টে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসার জায়গা হয়ে ওঠার পথে তিনি। এ ছাড়া জাতীয় দলের হয়ে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের আরেক সদস্য পারভেজ হোসেন ইমনও ইতোমধ্যে খেলেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। দলে ডাক পেলেও এখনও খেলার সুযোগ মেলেনি শাহাদাত হোসেন দিপু ও আকবর আলীর। আকবর আলী ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ডাক পেয়েছিলেন। ওই শেষ। এরপর আর জাতীয় দলের আশপাশে দেখা যায়নি তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন আকবর। অন্যদিকে দিপু জাতীয় দলে ডাক পান আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে। ইনজুরির কারণে অনুধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে পুরো সময় থাকতে পারেননি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ফিরে আসেন বিশ্বকাপের মাঝপথে। তিনিও ইতোমধ্যে নিজের গায়ে তুলেছেন জাতীয় দলের জার্সি। ইংল্যান্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হয়েছে তার অভিষেক।
যুব বিশ্বকাপজয়ী পনের ক্রিকেটারের মধ্যে ইতোমধ্যে ১০ জন ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। তাদের মধ্যে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন ছয়জন। অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন তানজিদ হাসান তামিম ও তানজিম হাসান সাকিব। বিশ্বকাপজয়ী ১৫ জনের মধ্যে পাঁচ ক্রিকেটার অবশ্য এখনও খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিজেদের পায়ের নিচের মাটি। তারা হলেন- প্রান্তিক নওরোজ নাবিল, হাসান মুরাদ, রকিবুল হাসান, অভিষেক দাস, শাহীন আলম। এদের মধ্যে অভিষেক দাস ভুগছেন পিঠের চোটে। কিছুদিন আগে কাতারে চিকিৎসা করিয়ে ফিরেছেন দেশে। শাহীন আলম নিয়মিত খেলছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। একই অবস্থা প্রান্তিক নওরোজ নাবিলের। ইতোমধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের জায়গা পাকা করেছেন রকিবুল হাসান ও হাসান মুরাদ।