প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩ ২২:০৬ পিএম
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩ ২২:০৯ পিএম
সৌদি আরব বিশাল এক শহর তৈরির পরিকল্পনা করছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শহরটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি গড়ে তুলবে তাদের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। উচ্চাভিলাসী এই পরিকল্পনা সৌদি সরকার হাতে নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগেই। ভাবছেন হঠাৎ এই আলোচনা কেন? ব্যাপারটা খোলাসা করা যাক এবার।
লোহিত সাগরের তীরে সৌদি নির্মাণ করছে প্রায় ২৬ হাজার ৫০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশাল এই শহর। যেটা আয়তনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির চেয়ে প্রায় ৩৩ গুণ বড়। সৌদির এ ‘নিওম সিটি’ চারটি অঞ্চলে বিভক্ত থাকবে। তার মধ্যে ‘লাইন’ নামের অঞ্চল তৈরি হবে কেবল ফুটবলের জন্য।
নিজেদের ফুটবলের উন্নয়নের জন্যই সৌদি সরকারের এই মহাপরিকল্পনা। যেখানে থাকবে ফুটবল ক্লাব, স্টেডিয়াম ও বিশাল অবকাঠামো। এতে করে ইউরোপিয়ান ফুটবলের হায় হুতাশ কেবল আরও বেড়ে যাবে। আল নাসরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর নাম লেখানোর পর সাদিও মানে, করিম বেনজেমার মতো সুপারস্টাররা রিয়াদে পা রেখেছেন। দিন কয়েক আগে ব্রাজিলিয়ান মেগাস্টার নেইমার যোগ দিয়েছেন আল হিলালে।
তারকা ফুটবলারদের সৌদি গমনের মিছিলে যোগ দেওয়ায় চিন্তায় পড়েছে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো। দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে জুর্গেন ক্লপ ও পেপ গার্দিওলার মতো কোচদের। এমনিতেই সৌদি এখন টাকার বস্তা নিয়ে ট্রান্সফার মার্কেটে দাপট দেখিয়ে চলেছে। ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে তাদের এই রাজত্ব। আরও কত তারকা ফুটবলার যে মরুভূমির দেশটিতে নাম লেখাবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই।
‘লাইন’ অঞ্চলে একটি স্টেডিয়ামের সঙ্গে ফুটবল খেলার জন্য থাকবে নানা স্থাপনা। লোকজনের চাহিদার ভিত্তিতে তৈরি হবে বিভিন্ন ফুটবলীয় অবকাঠামো। ধীরে ধীরে চলবে কাজ। নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০৪৫ সালে। প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক জাইলস পেন্ডলেটন জানান, ‘সকল অবকাঠামো এক সঙ্গে নির্মাণ করা হবে না। ২০৪৫ সালে শেষ হবে কাজ। বসবাসকারী মানুষের অনুপাতে তৈরি হবে স্টেডিয়াম।’ ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম গ্লোবো দিয়েছে এ খবর।
১৭০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের লাইন শহর হবে উল্লম্ব আকৃতির। লোহিত সাগরের পার থেকে যার দৈর্ঘ্য হবে ৫০০ মিটার। আর প্রস্থ হবে ২০০ মিটার। যেখানে জ্বালানি থাকবে শতভাগ নবায়নযোগ্য। ৯০ লাখ মানুষের এই শহরে থাকবে না কোনো গাড়ি বা সড়ক। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতেই পারে মানুষ যাতায়াত করবে কিভাবে? উড়ন্ত যাতায়াত ব্যবস্থাই রাখা হবে শহরটির বাসিন্দাদের জন্য।
যাতায়াত ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা দিতে পেন্ডলেটন বলেন, ‘ধরা যাক, আপনি কোনো ভবনের পঞ্চাশ তলায় থাকেন। দুই কিলোমিটার দূরে নিওম-বার্সেলোনার মধ্যে ম্যাচ হচ্ছে। আপনি সেই লড়াই উপভোগ করতে যাবেন। আপনার যাতায়াত ব্যবস্থা থাকবে দশতলার ওপরে বা নিচে।’
নিওম শহর আলোর মুখ অবশ্য এখনো দেখি। তবে ফুটবল উন্নয়নের জন্য আর একটি কার্যক্রম ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছে সৌদি সরকার। চার অঞ্চলের শুহুব প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশটির ৭-১২ বছরের ৪০০ শিশু পাবে হাই-পারফরম্যান্স প্রশিক্ষণ। নিওম শহরে ফুটবলের বাইরে আরও ক্রীড়া যজ্ঞও দেখা যাবে। ২০২৯ সালে শহরের ট্রোজেনা অঞ্চলে হবে শীতকালীন এশিয়ান গেমস। আরব অঞ্চলে যেটা হবে ঐতিহাসিক ঘটনা!