ফিফা নারী বিশ্বকাপ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩ ১৪:২১ পিএম
আগে কখনও শিরোপার মঞ্চের টিকিট পায়নি ইংল্যান্ড। স্পেন কখনও পেরোতে পারেনি নকআউটের বাধা। সিডনির অস্ট্রেলিয়া স্টেডিয়ামে আনকোরা দুই দল এবার ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায়। ফিফা নারী বিশ্বকাপের ফাইনাল মহারণে আজ লা রোজা না থ্রি লায়নেস— কারা তুলে ধরবেন ট্রফি, কারা হবেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, নরওয়ে ও জাপানের পর বিশ্বসেরা? সেই প্রশ্ন আপাতত তুলে রাখা হোক। কারা হতে পারেন ‘নতুন’ চ্যাম্পিয়ন, তাই নিয়ে বরং হোক শব্দের কাটাকুটি খেলা।
পরিসংখ্যানের খেরো খাতা বলছে, স্পেনের থেকে ইংল্যান্ড যোজন যোজন এগিয়ে। নারী ফুটবলে এখন পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৩ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। যার সাতটি ম্যাচে জিতেছেন থ্রি লায়নেসরা। চারটি করেছেন ড্র। স্প্যানিশদের ঝুলিতে মোটে দুটি জয়। সবশেষ দেখায়ও হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্পেন। গত বছর ব্রাইটনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে লা রোজাদের কাঁদিয়েছিলেন ইংলিশরা।
বিশ্বকাপে অবশ্য দৃশ্যপট ভিন্ন। একদিকে ইংলিশদের হার না মানার পণ, অন্যদিকে স্পেনের জেতার ক্ষুধা। সব মিলিয়ে উপভোগ্য ফাইনালটিকে আতশকাচের নিচে নিয়েছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্পোর্টস অ্যানালিটিকস কোম্পানি অপটা। শক্তিমত্তা, বিশ্বকাপে খেলোয়াড়দের পারফর্ম, ফেরার মানসিকতাসহ নানা দিক বিবেচনা করে এক বিশ্লেষণে অপটা বলেছে, ইংল্যান্ড নয় ‘নতুন’ চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে স্পেন। ওয়েবসাইটির মতে, খেলা এক্সট্রা টাইমে না গড়ালে ফাইনালে ৩৫.৯ শতাংশ জয়ের সম্ভাবনা রাখে স্পেন। ইংলিশরা সেখানে পাচ্ছেন ৩৩.৭ শতাংশ। আর খেলা যদি অতিরিক্ত সময়ে যায়, সেখানে ইংলিশদের জয়ের হার আরও কমবে। পেনাল্টি শুটআউটে গেলেও স্পেনকে এগিয়ে রাখছে অপটা।
শুধু বলার জন্য বলা নয়, ওয়েবসাইটির মতে- আইতানা বোনমাতি, সালমা সিলেস্তে ও অ্যালেক্সিয়া পুতেলাস গড়ে দেবেন পার্থক্য। তা ছাড়া এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে রোমাঞ্চকর জয়গুলো স্পেন এনেছে শেষ সময়েই।
তাসমানপাড়ের দেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে এবারই প্রথম ২৪ থেকে দল বাড়িয়ে ৩২ করা হয়েছে। সঙ্গে ছেলেমেয়ে উভয়ের প্রাইজমানি সমান করা হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো সেখানে খেলতে এসেছে স্পেন। ফাইনালের স্বপ্নপূরণে লা রোজারা বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছেন সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনের। এবার আরাধ্য শিরোপার সামনে বাধা ইংল্যান্ড। ইংলিশদের বিপক্ষে জিততে হলে প্রথমে জর্জ ভিদার শিষ্যদের পেরোতে হবে কোচ সারিনা ভিগমানের তীক্ষ্ণ চোখের চাহনি আর দুর্দান্ত সব সিদ্ধান্তকে। তারপর আটকাতে হবে কেটি জেলেম, রিচেল ডেলি, হান্নাহ হাম্পটনদের। তা ছাড়া বৈশ্বিক আসরটিতে অন্যতম অভিজ্ঞ দল ইংল্যান্ড। গত আসরের চতুর্থ হওয়া সিংহীরা আগের আসরে হয়েছিলেন তৃতীয়। এবার সেমিফাইনালের ফাঁড়া কাটিয়েছেন, বিশ্বকাপও নিশ্চয় উঁচিয়ে ধরতে চাইবেন। তবে আশার ভেলায় চড়ে ফাইনালে আসা স্পেনের সামনে তারা কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকবেন।
স্পেনের কোচ ভিদা আশাবাদী- কষ্টের ফসল বিশ্বকাপ নিয়েই মেটাবেন লা রোজারা। ফাইনাল তো দূরে, আগে কখনও যে দল সেমিফাইনাল খেলেনি। তাদের ফাইনালে তুলে স্বপ্নটা তাই আকাশছোঁয়ার দিকেই রাখছেন। অন্যদিকে এফএর প্রধান নির্বাহী মার্ক বুলিংহাম কোচ সারিনাকে দেখছেন ইংলিশদের পুরুষ দলের কোচ সাউথগেটের জায়গায়। ফাইনালে তাকে নিয়ে শিরোপা জেতার আশা করতেও পারেন ইংলিশরা। বুলিংহামের ভাষায়, ‘আমার মনে হয় সারিনা ফুটবলে যা-ই চান না কেন, সেটাই করতে পারেন।’ স্বপ্ন দেখা স্পেনকে হারিয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্নও নিশ্চয় পূরণ করতে চাইবেন সারিনা।