প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩ ১৭:১৩ পিএম
‘বেয়ারেস্ট অব মার্জিন্স’ বলবেন একে? .০৩ সেকেন্ড তো চোখের পলক ফেলতেই চলে যায়! সে ছোট্ট মুহূর্তটাই এবার পথ আগলে দাঁড়াল ইমরানুর রহমানের। আফসোসটা আরও বাড়বে আপনার, যখন জানবেন ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকছিল তাকে।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়ান অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার ইতিহাস। সেকেন্ডের ভগ্নাংশের ব্যবধানে ইতিহাসটা গড়া হলো না তার, বিদায় নিতে হলো এশিয়ান অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল থেকে।
আগের দৌড়েই নিজের ব্যক্তিগত সেরা টাইমিংয়ে দৌড়েছিলেন, যা ইমরানুর রহমানকে নিয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের দুয়ারেও। গতকাল এশিয়ান অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে সে টাইমিংটা ধরে রাখতে পারলে তো অবশ্যই, তার কাছাকাছি যেতে পারলেও হয়ে যেত। সেটা আর শেষমেশ হলো না। মাত্র ০.০৩ সেকেন্ডের ব্যবধানে ফাইনালে খেলার সুযোগটা হারান ইমরানুর।
গতকাল ব্যাংককের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের তিন নম্বর হিটে দৌড়ে নেমেছিলেন ইমরানুর। তার সঙ্গী ছিলেন সৌদি আরবের আবদুল্লাহ আকবর মোহাম্মদ, দক্ষিণ কোরিয়ার লি সিমন, ভিয়েতনামের এনগান এনগচ গিয়া, লেবাননের নুরেদ্দিন হাদিদ, সিঙ্গাপুরের লুইস মার্ক ব্রায়ান, চীনের চেন গুয়ানফেং, তাইওয়ানের ইয়াং চুন হান। সেমিফাইনালের দৌড়ের শুরুতে তাদের সবাইকে পেছনে ফেলেই ছুটছিলেন ইমরানুর। শুরুর ৬৫ মিটার পর্যন্ত ছিলেন সবার আগে।
তবে লড়াইয়ের বিজনেস এন্ডে গিয়ে আর পারলেন না তিনি, হলো ছন্দপতন। অনেকটা পেছনে থেকে এসে তাকে পেছনে ফেলে দেন আবদুল্লাহ; এরপর একে একে চুন হান, গুয়ানফেংরাও। লড়াইটা যখন শেষ হলো, এরপর দেখা গেল দৌড়টা তিনি শেষ করেছেন পাঁচে থেকে। তার আগে আছেন আবদুল্লাহ, চুন হান, গুয়ানফেং ও লুইস ম্যাক ব্রায়ান। তাদের টাইমিং যথাক্রমে ১০.২৪, ১০.৩৩, ১০.৩৮ ও ১০.৩৯। আর ইমরানুরের টাইমিং ১০.৪০।
সেমিফাইনালের তিন হিটের প্রতিটি থেকে শীর্ষ দুই অ্যাথলেট আর সব হিট থেকে শ্রেয়তর টাইমিংয়ের বিচারে আরও দুই প্রতিযোগীর ঠিকানা হতো ফাইনালে। সে মানদণ্ডে সেমিফাইনালের অষ্টম সেরা খেলোয়াড় হন চেন জিয়াপেং। তার টাইমিং ছিল ১০.৩৮। যার মানে দাঁড়াচ্ছে, দৌড় শেষ করতে আর ০.০৩ সেকেন্ড সময় কম নিলেই ইমরানুর ইতিহাসটাই গড়ে ফেলতেন। তা না হওয়ায় খুব কাছে গিয়েও স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে শেষ করতে হয় তাকে।
তবে তিনি যা করেছেন তাও কম কোথায়? প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে খেলেছেন, এটাও তো ইতিহাসই রীতিমতো! সেমিফাইনালের ২২ জন প্রতিযোগীর মাঝে ১১তম হয়ে শেষ করেছেন। ছিলেন ফাইনালের হাতছোঁয়া দূরত্বে।
আক্ষেপ থাকলেও এমন সব অর্জন তাই তাকে দেখাচ্ছে নতুন দিনের স্বপ্নই। আর তার স্বপ্ন মানে তো স্বপ্নটা বাংলাদেশেরও!