× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মাথা উঁচু করে বিদায় বাংলাদেশের

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩ ১০:২৬ এএম

আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৩ ১০:৪১ এএম

বল পায়ে ছুটছেন ঈসা ফয়সাল। তাকে রোখার চেষ্টা আল রাশিদির। তার সে চেষ্টা সফল না হলেও কুয়েতই হেসেছে শেষ হাসি। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের – বাফুফে

বল পায়ে ছুটছেন ঈসা ফয়সাল। তাকে রোখার চেষ্টা আল রাশিদির। তার সে চেষ্টা সফল না হলেও কুয়েতই হেসেছে শেষ হাসি। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের – বাফুফে

একটু আফসোস হচ্ছে বৈকি! যদি নির্ধারিত সময়ের ওসব সুযোগ কাজে লাগানো যেত। যদি অতিরিক্ত সময়ে ওভাবে রক্ষণের ভুলে বলটা না পেয়ে যেতেন আব্দুল্লাহ, সঙ্গে আরও কত কী! বাংলাদেশ সাফের প্রথম সেমিফাইনালে ১-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। 

আরও পড়ুন : শেষ দিনে ফলের অপেক্ষায় লর্ডস টেস্ট

প্রতিপক্ষ কুয়েত, যারা বিশ্বকাপে খেলেছে এক কালে, র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন এগিয়ে আছে প্রায় ৪০ ধাপেরও বেশি। তাদের বিপক্ষে এক ম্যাচ শেষে আলোচনার উপজীব্য হচ্ছে আফসোস, ‘ইশ ম্যাচটা তো জেতাও যেত’! ম্যাচটা হারলেও তাই বাংলাদেশ সুখস্মৃতিই উপহার দিয়েছে সমর্থকদের, বিদায় নিয়েছে মাথা উঁচু করেই।

বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিবীরা স্টেডিয়ামে ম্যাচটা শুরুর আগে থেকেই বাংলাদেশ আর কুয়েতের কথার সুরে ছিল বিস্তর ফারাক। বাংলাদেশ জোর আওয়াজেই বলছিল, ফাইনালে খেলতে চাই। আর ওদিকে কুয়েত? বাংলাদেশকে দেখছিল বেশ সমীহের দৃষ্টিতে। যেন পরিস্থিতিটা পুরো উল্টো, বাংলাদেশ ফেভারিট আর কুয়েত আন্ডারডগ।

আদতে লড়াইটা ছিল ডেভিড আর গোলিয়াথের। বাংলাদেশ সাফে ভালো খেলেছে বটে, কিন্তু তার আগে হেরেছে সিশেলসের কাছে, র‍্যাঙ্কিংয়েও তো পিছিয়ে অনেকটাই! আর কুয়েত দিনকয়েক আগে ভারতকে রুখে দিয়েছে, হারেনি সাফে, তার আগেও অনেক ম্যাচে। সেই কুয়েতের বিপক্ষেই কি না, বাংলাদেশ পেয়ে গিয়েছিল প্রথম সুযোগটা।

দর্শক যা এসেছেন, তারাও হয়তো ধাতস্থ হয়ে বসতে পারেননি তখন। পারবেন কী করে? ম্যাচের বয়স যে তখনো ১০০ সেকেন্ডও হয়নি! ডান পাশ থেকে আসা নিচু ক্রস শেখ মোরসালিনকে খুঁজে পেল একা। আলতো টোকা ঠিকঠাক হলেই গোল, টোকাটা হলো, কিন্তু ঠিকঠাক হলো না, বাংলাদেশ পেতে পেতেও পেল না গোলটা। তবে যা পেল, তা হলো লড়াইয়ের আত্মবিশ্বাস; যে সুযোগ একবার এসেছে, তা আরও আসবে, ৯০ কিংবা তার চেয়েও বেশি মিনিট তো পড়েই আছে– এ বিশ্বাসও!

তবে কুয়েত কি আর ছেড়ে কথা বলবে? বলেওনি। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা জানতেন, প্রতিপক্ষ প্রতি আক্রমণে বেশ ক্ষুরধার। তাই ট্রানজিশন, মানে রক্ষণ থেকে আক্রমণে ওঠার দ্বিতীয় ধাপ, মাঝমাঠে বল রাখতে হবে খুবই কম সময়, দ্রুততম সময়ে বল বাড়াতে হবে সামনে। সেটা করলোও দল।

আক্রমণের মূল পথ বন্ধ হওয়ায় কুয়েতকে হাঁটতে হলো নিচ থেকে খেলা গড়ে ওপরে ওঠার কৌশলে। তবে তা যে ফল দিল না, তা বোঝা গেল ৩০তম মিনিটে গিয়ে তাদের প্রথম বলার মতো আক্রমণ দেখে। তবে মাঝে তারা যা করেছে, রক্ষণকে ওপরে তুলে বেশ কবার বাংলাদেশকে ফেলেছে অফসাইডের ফাঁদে। প্রথমার্ধে তাই গোল আসেনি আর।

প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও প্রথম সুযোগটা বাংলাদেশই পেল। ৫০ মিনিটে রাকিবের শট একটুর জন্য গেল ক্রসবারের ওপর দিয়ে। দশ মিনিট পর সেই রাকিব আবারও দৃশ্যপটে। এবার ডান পাশ দিয়ে তার শট সবাইকে ফাঁকি দিয়ে গিয়ে চুমু খেল ক্রসবারে, কিন্তু ভেতরে গেল না। 

এরপরই যেন কুয়েত ‘পাওয়ারপ্লে’ নিয়ে নিল রীতিমতো। আল রাশিদি প্রথমার্ধেই বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিলেন একা একা। দ্বিতীয়ার্ধে তার আক্রমণের ধার বাড়ল, সঙ্গে দলেরও। তবে গোলমুখে আনিসুর রহমান জিকো দেয়াল তুলে দাঁড়ালেন রীতিমতো। এক-দুই-তিন করে চারটি সেভ দিলেন তিনি। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও হতাশাই উপহার পায় কুয়েত।

জিকোর দেয়ালের দেখা মিলল অতিরিক্ত সময়েও। প্রথমার্ধে দুটো সেভ দিলেন আরও। বাংলাদেশ একটু একটু করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে টাইব্রেকার থেকে ফাইনালের। তবে প্রথমার্ধের শেষ কয়েক সেকেন্ডে ঘটল, যা ঘটা উচিত ছিল না তা। ডান পাশে সরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রায় সব ডিফেন্ডার। ফাঁকায় থেকে আবদুল্লাহ তাই একা পেয়ে গিয়েছিলেন তপু বর্মণকে। তার পায়ের ফাঁক গলে আবদুল্লাহর বুদ্ধিদীপ্ত শট গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে, আনিসুর রহমান জিকোরও তখন খুব বেশি কিছু করার ছিল না, গতিটাই যে ছিল বড্ড গোলমেলে!

এরপর বাংলাদেশ হন্যে হয়ে একটা গোলের জন্য ঘুরে মরেছে সারা মাঠ। করেছে প্রায় সবকিছুই। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সে গোল আর দেখা দেয়নি শেষমেশ। বাংলাদেশ বিদায় নেয় ১-০ গোলে হেরে।

শেষ বাঁশিটা যখন বাজছে, বেঙ্গালুরুতে দর্শক ততক্ষণে বেড়ে গেছে অনেক গুনে। তারা যে আর বাংলাদেশ সমর্থক নন, তা বোধ করি বলে দিতে হবে না। সেই তারাই বাংলাদেশকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন এরপর। ডেভিডের গোলিয়াথ বধ না হোক, কিন্তু এমন পারফর্ম্যান্সের পর এমন কিছু তো তাদের প্রাপ্যই।

সাফে স্বপ্নের ছোঁয়া বাংলাদেশ পায়নি ঠিক। তাই বলে বিদায়টাও বিস্মরণযোগ্য হয়ে যায়নি। লেবাননের বিপক্ষে লড়ে হার, এরপর মালদ্বীপ-ভুটানের বিপক্ষে দুটো দারুণ জয়, এরপর কুয়েতকে এভাবে রুখে দেওয়া… সব কিছুর পর দল যে বিদায় নিচ্ছে এবার মাথা উঁচু করেই!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা