প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৩ ১২:১০ পিএম
আপডেট : ১১ জুন ২০২৩ ১২:৩২ পিএম
ইনজুরি থেকে মাত্রই মাঠে ফিরেছেন রশিদ খান। তাকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না আফগানিস্তান। সে কারণেই বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে আসছেন না। এমনকি সবশেষ আইপিএলে নজরকাড়া নূর আহমেদ ও আরেক রহস্যময়ী স্পিনার মুজিব উর রহমানও নেই। তিন স্পিনারের বদলি হিসেবে অচেনা তিনজনকে দলে এনেছে বাংলাদেশ। তারা হলেন আমির হামজা, জহির খান ও ইজহারুল হক নাভিদ।
আরও পড়ুন : অনুশীলনে অস্বস্তিতে তামিম
২০১৯ সালে প্রথম দেখায় আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে স্পিনে নিজের ঝলক দেখান রশিদ খান। ১১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে রশিদের অভাববোধ করবে। ইনজুরি শঙ্কা থাকায় অভাববোধের সুযোগ থাকলেও তাকে বিশ্রামে রেখেছে। তার জায়গায় সুযোগ পাওয়ারা অনভিজ্ঞ হলেও নিজেদের প্রমাণে মরিয়া থাকবেন সেটা সুনিশ্চিত।
বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামের ওই টেস্ট খেলেছিলেন জহির খান। ওই ম্যাচে টেস্টে তার অভিষেক হয়। সেবার প্রথম ইনিংসে কোন উইকেট পাননি। দ্বিতীয় ইনিংসে রশিদের যোগ্য সঙ্গী ছিলেন। রশিদের ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দেন। এখন পর্যন্ত তিন টেস্ট খেলা জহির শিকার করেছেন ৭ উইকেট। টেস্টে নিজেকে প্রমাণের অপেক্ষায় থাকলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দারুণ ছন্দে আছেন। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে মাত্র ১৮ ম্যাচ খেলা বাঁহাতি চায়নাম্যান বোলার জহিরের সংগ্রহ ৮৭ উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে তার আধিপত্য প্রমাণ করে কতটুকু ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন। ঢাকা টেস্টে তার হাতে থাকবে আফগানদের স্পিন আক্রমণের ভরসা।
জহির খানের সঙ্গী আমির হামজা ও ইজহারুল হক নাভিদ। আফগান দলে প্রায় নিয়মিত মুখ আমির হামজা। তিন টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আমির শিকার করেছেন ১৬ উইকেট। জহিরের থেকে পরিসংখ্যানে বেশ এগিয়ে আছেন। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তিন টেস্টেই দুইবার দেখা পেয়েছেন ফাইফারের। টেস্ট বিবেচনায় গড়ও বেশ ঈর্ষণীয়, ২১.৩৭। অর্থাৎ প্রতি ২১ রানে একটি করে উইকেট নিয়েছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও নিজেকে বেশ ভালোভাবে প্রমাণ করেছেন আমির হামজা। ২৬ ম্যাচে তার শিকার দেড়শ ছুঁই ছুঁই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩ বার ফাইফারের দেখা পাওয়া আমির হামজার গড় ১৮.৫৬। তার এই ছন্দ প্রমাণ করে রশিদের অভাব পূরণে তারাও আছেন।
জহির খান ও আমির হামজার মতো টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই ইজহারুল হক নাভিদের। ১৯ বছর বয়সি এই স্পিনার দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে এখনও ঠিকঠাক প্রমাণ করতে পারেননি। অন্য আফগানদের মতো তিনিও নজর কেড়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে। ওই অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামবেন। সবকিছু ঠিক থাকলেই ঢাকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরু হবে ইজহারুল হক নাভিদের পথচলা। টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা নাভিদ খেলেছেন মাত্র তিনটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে তার শিকার সর্বসাকুল্যে ৮ উইকেট। তবুও বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট দলে জায়গা মিলেছে তার। লেগস্পিনার রশিদ খানের বদলি হয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের আগে এই লেগস্পিনার অংশ ছিলেন বিগ ব্যাশের। সবশেষ বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের জার্সিতে পুরো বিশ্বকে দিয়েছেন নিজের আগমনী বার্তা। বিগ ব্যাশের পাশাপাশি ২০২২ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নেট বোলার হিসেবেও ছিলেন ইজহারুল নাভিদ। সেখান থেকেই নিজেকে অনেক বেশি শানিত করেছেন। এবার তার জন্য অপেক্ষা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ফোটার।
রশিদ খান, নূর আহমেদ কিংবা মুজিব উর রহমানরা না থাকলেও আফগানদের স্পিন আক্রমণ ঠেকানো খুব একটা সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। স্পিন বোলিং দিয়ে বাংলাদেশের বড় পরীক্ষা নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন স্পিনাররা। জহির, আমির কিংবা ইজহারুলদের পাশাপাশি পেস বোলিংয়ে আছেন করিম জানাত, নিজাত মাসুদের মতো পেসাররা। আফগান শিবিরের বেশিরভাগ ক্রিকেটার ‘অচেনা’ হওয়ায় দ্বিধাগ্রস্ত হয়েই মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে।