আবাহনী ৩-০ শেখ জামাল
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩ ২৩:৪২ পিএম
আপডেট : ০২ জুন ২০২৩ ২৩:৪৪ পিএম
শেষ এক সপ্তাহে আবাহনী লিমিটেড চাইলে কুমিল্লায় একটা অস্থায়ী ঘাঁটি গেড়ে ফেললেও পারত। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই নিয়ে যে তৃতীয়বারের মতো কুমিল্লার ভাষাশহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে নামতে হয়েছিল তাদের! তবে আগের দুই ম্যাচের স্মৃতি যে কোচ মারিও লেমোসের দল ভুলেই যেতে চাইবে, তা আর বলতে।
আরও পড়ুন : এক চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে হাসল আরেক চ্যাম্পিয়ন
এই তিন দিন আগে দ্বিতীয় ম্যাচটায় যে মোহামেডানের কাছে হেরে ফেডারেশন কাপ জেতার সুযোগ খুইয়েছিল! তবে সে স্মৃতি তো আর ভোলা সম্ভব নয়, যদি সে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া যায়! আবাহনী দিয়েছেও বটে। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে। তাতে লিগের দ্বিতীয় স্থানটাও নিশ্চিত হয়ে গেছে আকাশিদের।
আজ দেশে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমে বিকাল ৪টায় মাঠে নামতে হয়েছিল আবাহনী ও শেখ জামালকে। তীব্র গরমের ছাপটা মাঠের পারফরম্যান্সেও পড়ছিল বৈকি! শুরুতে বেশ ঢিমেতালেই খেলছিল যেন দুই দল।
তবে ম্যাচের পরিস্থিতিটা বদলাল ২২ মিনিটে এসে। অনেকটা অতর্কিতভাবেই গোলের দেখা পেয়ে যায় আবাহনী। দানিয়েল কলিন্দ্রেসের বাড়ানো লং বলটা বক্সে পেয়ে যান এলিটা কিংসলে। গোলরক্ষক মোহাম্মদ নাঈমকে নড়ার সুযোগ না দিয়ে আলতো টোকায় সেটা জালে জড়ান কিংসলে।
শেখ জামাল প্রথম বলার মতো সুযোগ তৈরি করেছে ম্যাচের আধাঘণ্টা পেরোনোর পর। তবে সে সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি দলটি। রায়হান হাসানের ক্রসটা দূরের পোস্টে থাকা কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট কাজে লাগাতে পারেননি।
শুরু থেকে শ্রেয়তর দল ছিল আবাহনীই। তবে এক গোলের লিড খোয়ানো তো মিনিট খানেকেরই ব্যাপার। ব্যবধানটা বাড়িয়ে ম্যাচটা শেখ জামালের নাগালের বাইরে নিয়ে যাওয়া দরকার ছিল দলের। সেটা আবাহনী করেছে বিরতির একটু আগে। এই গোলের কৃতিত্ব শুধুই এমেকা ওগবাহর।
তিন দিন আগে ফেড কাপে গোল করা এমেকা এবার গোলটা করেন একক প্রচেষ্টায়। বাঁ পাশ দিয়ে আক্রমণে উঠে এসে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তিনি। মোহাম্মদ নাঈম তাকে এগিয়ে এসে বাধা দিতে চেয়েছিলেন, তবে তাকে কাটিয়ে কঠিন এক কোণ থেকে বলটা শেখ জামালের জালে জড়ান এমেকা।
বিরতির একটু পরেই আবাহনী পেয়ে যায় তৃতীয় গোলের দেখা। এবার গোলটা করেন দানিয়েল কলিন্দ্রেস। সবশেষ ফেড কাপের ফাইনালে গোলটা করেছিলেন তিনি, তবে ব্যর্থ হয়েছিলেন পেনাল্টি শ্যুট আউটে। সেই কলিন্দ্রেস গোলটা করেন ম্যাচের ৪৮ মিনিটে। প্রতিপক্ষ বিপদসীমায় সতীর্থের বাড়ানো বল আলতো টোকায় তিনি পাঠান শেখ জামালের জালে।
শেখ জামাল শুরু থেকেই ছিল ম্যাচের দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে। তিন গোল হজমের পর ম্যাচে ফিরতে হলে যে ক্ষুরধার আক্রমণ প্রয়োজন ছিল তাদের, তার দেখাও মেলেনি। ওদিকে আবাহনীর কাজ তো সারা হয়েই গিয়েছিল, শেষদিকে সময় যত গড়িয়েছে, রক্ষণকাজেই মনোযোগ দিয়েছে কোচ মারিও লেমোসের দল। ফলে ম্যাচের স্কোরলাইনটাও বদলায়নি আর। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো শেখ জামালকে হারায় আবাহনী, ম্যাচটা জেতে ৩-০ গোলে।
এই জয়ের ফলে লিগ রানার্সআপ হওয়া নিশ্চিত হলো আকাশিদের। বাকি সব ম্যাচ এখন হেরে গেলেও তাদের টপকে দ্বিতীয় স্থানে যাওয়ার উপায় নেই আর কারও। ১৮ ম্যাচ শেষে আবাহনী লিমিটেডের পয়েন্ট ৩৮। রানার্সআপ হওয়া তো বটেই, একই ভেন্যুতে হওয়া এই ম্যাচের জয় আবাহনীকে ফেড কাপ হারানোর ক্ষতে প্রলেপ দেবে বৈকি!