প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩ ০৯:৫৫ এএম
ক্রিকেটারদের আন্দোলনে টনক নড়েছিল বিসিবির। তখন থেকেই বৃদ্ধি পেয়েছে ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধা। তবে ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াব নিয়ে থাকা দাবিই পূরণ হয়নি। ক্রিকেটারদের দাবি ছিল নির্বাচনের। আন্দোলনের প্রায় চার বছর পর ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আজ।
ঠিক নির্বাচন নয়, অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ বার্ষিক সভা ও কাউন্সিল। সেখানেই ক্রিকেটাররা বেছে নেবেন নিজেদের সংগঠনের নেতৃত্ব। এর আগে গতকাল মিরপুরে কোয়াব শেষ করেছে নিজেদের প্রস্তুতি।
ক্রিকেটারদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় দেখার কথা ছিল কোয়াবের। তবে সেখানে সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবালদের মতো বর্তমান ক্রিকেটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নেই। এমনকি সংগঠনটির নেই নিজস্ব কোনো অফিস। অর্থাৎ, ঠিকানাবিহীন একটি সংগঠন হিসেবে আছে কোয়াব। ক্রিকেটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ না থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটারদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সজাগ হয়েছিল কোয়াব। যেমন করোনাকালে ঘরোয়া ক্রিকেট মাঠে ফেরাতে ভূমিকা রেখেছিল। এ ছাড়া ক্রিকেটারদের মানবিক দিকেও সাহায্য সহযোগিতা করেছিল। এরপরই অবশ্য আবারও থমকে যায় কোয়াবের কার্যক্রম।
নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটির শুরু থেকেই নির্বাচন কিংবা বার্ষিক সাধারণ সভার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে দূরে আছে। আলোচনার মাধ্যমে তৈরি হতো কমিটি। সর্বশেষ ২০১২ সালে গঠিত কমিটির দায়িত্বে আছেন সাবেক দুই ক্রিকেটার নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও দেবব্রত পাল। এ ছাড়া ইফতেখার আহমেদ মিঠু ও খালেদ মাহমুদ সুজনের মতো বোর্ড পরিচালকরাও আছেন সেখানে। ক্রিকেটারদের সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন ক্রিকেটাররাই। তারা আবার আছেন বিসিবির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে। বিষয়টি সাংঘর্ষিক কি না সেটাই হয়ে উঠেছে বড় প্রশ্ন। তবে সেই বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান না অনেক ক্রিকেটারই।
অসুবিধার চেয়ে বরং সুবিধাকেই বড় করে দেখছেন ক্রিকেটার নাঈম ইসলাম, ‘দুর্জয় (নাঈমুর রহমান) ভাই, দেবু দা-রা (দেবব্রত পাল) বোর্ডে যুক্ত থাকায় সহজেই বিসিবিতে আমাদের সমস্যার কথাগুলো তুলে ধরতে পারছেন। আমাদের স্বার্থগুলোকে বড় করে দেখতে পারছেন।’
ক্রিকেটাররা কোয়াবের সঙ্গে কতটুকু সম্পৃক্ত হতে পারছেন সেটা নিয়েও আছে প্রশ্ন। নাঈম ইসলাম অবশ্য সেই রকম কোনো সমস্যা দেখেন না। বরং জেলা পর্যায়ে কোয়াবের কমিটি গঠন করায় ক্রিকেটাররা সহজেই নিজেদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে পারছেন বলেও জানান, ‘আমরা চাইলেই (যারা জাতীয় পর্যায়ে খেলছেন) দেবু দা-দুর্জয় ভাইদের সঙ্গে কথা বলতে পারি। জেলা পর্যায়ের কমিটি হওয়ায় তৃণমূলের ক্রিকেটাররাও সহজেই তাদের সমস্যার কথা বোর্ডে জানাতে পারছেন।’
কোয়াবের প্রথম সাধারণ বার্ষিক সভা শেষে ক্রিকেটারদের মধ্যে নিজেদের সংগঠন নিয়ে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এমনটাই মনে করেন নাঈম ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কোয়াবের নির্বাচনে আশা করি ভালো কিছু হবে। এটা ক্রিকেটারদের জন্য ভালো।’
ক্রিকেটারদের সংগঠন হলেও কোয়াবের নেই নিজস্ব কোনো অফিস। সেটা থাকলে কোয়াবের জায়গা আরও কিছুটা শক্তিশালী হতো বলেও মনে করেন নাঈম। ভবিষ্যতে কোয়াবের নিজস্ব অফিস হবে সেটাও ধারণা তার- ‘কোয়াবের অফিস নেই, সেটা ঠিক আছে। আমাদের বড় ভাইরা সেটা হয়তো পরিকল্পনা করছেন। না থাকলেও হয়তো আমাদের সমস্যা হচ্ছে না। বিসিবিতে সবার সঙ্গেই দেখা হয়। সেখানে আমরা নিজেদের সমস্যার কথাগুলো তুলে ধরতে পারি। অবশ্যই অফিস থাকলে সেটা আমাদের জন্যই সুবিধার হবে।’
ক্রিকেটারদের আন্দোলনে কোয়াব নিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন নাঈম ইসলাম। কোয়াবের নির্বাচন নিয়ে দাবি তুললেও আপাতত নির্বাচন করার কোনো পরিকল্পনা নেই তার। ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানালে সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারেন তিনি। এই নিয়ে নাঈমের ভাষ্য, ‘এখনও ক্রিকেট খেলছি। ক্যারিয়ার শেষে এটা নিয়ে ভাবব। সবাই তো সারা জীবন থাকতে পারে না। তারা এক সময় না এক সময় বিদায় নেবে। তখন হয়তো আমাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। তাই ভাবনাটা আপাতত ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষেই নেব।’
প্রতিদিনের বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটারের সঙ্গে কোয়াবের নির্বাচন নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। তবে কেউই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে কোনো আগ্রহ প্রকাশ করেননি। তাদের সাফ উত্তর ছিল, কোয়াব নিয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। তাই কথা বলতে চান না। ক্রিকেটারদের এমন উত্তরের পর কোয়াব কতটা কাজ করতে পেরেছে তা নিয়ে আঙুল তোলাটা বেশ সহজ হয়েছে।