× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শান্তর সেঞ্চুরিতে ক্রিকেট থ্রিলার জিতল বাংলাদেশ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৩ ০১:৫০ এএম

আপডেট : ১৩ মে ২০২৩ ০২:২৮ এএম

শান্তর সেঞ্চুরিতে ক্রিকেট থ্রিলার জিতল বাংলাদেশ

মে মাস চলছে। বিলেতে এখন সময়টা ‘আর্লি সামার’, সময়টা বলা নেই কওয়া নেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামার। সে ‘আপদ’ থেকে বাঁচতেই সিরিজটা ডাবলিন-বেলফাস্ট থেকে নিয়ে আসা হয়েছে চেমসফোর্ডে, যদি বৃষ্টিটাকে দূরে রাখা যায়! প্রথম ওয়ানডেতে রাখা যায়নি, অসাধ্য সাধন করে আইরিশদের বিশ্বকাপ নিশ্চিতের সম্ভাবনাটাও তাই ধুয়ে গেছে সে বৃষ্টিতে। 

সিরিজটা তাই কার্যত হয়ে গেছে ‘ডেড রাবার’। শুক্রবার ম্যাচের শুরু থেকেই যখন বৃষ্টি নামল ঝমঝমিয়ে, তখন ঠাহর হচ্ছিল, বৃষ্টি বুঝি নিয়মরক্ষার সিরিজের বাকি ম্যাচগুলোকেও ছাড়বে না! ভাগ্যিস ছেড়েছিল! না হয় অমন রান তাড়া করে জেতাটা যে মিস হয়ে যেত!

বৃষ্টির বাগড়া শেষে বোলাররা পেস বিষে নীল করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন আইরিশদের। সে চোখরাঙানি এড়িয়ে চেমসফোর্ডে দেখা মিলল হ্যারি টেক্টরের সেঞ্চুরির, সঙ্গে জর্জ ডকরেলের তাণ্ডবেরও। ৪৫ ওভারের ইনিংসে আইরিশরা গড়ল ৩১৯ রানের পাহাড়। জবাবের শুরুটা ভালো হয়নি। তবে সময় যত গড়াল, সেটা ক্রমেই ভালো হতে থাকল। নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন যে! তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস, সঙ্গে তাওহীদ হৃদয়ের ঝোড়ো ফিফটিতে ভর করে বাংলাদেশ জিতল রীতিমতো হেসে খেলেই! কার্টেল ওভারের ম্যাচে ৩২০কে মনে হচ্ছিল রীতিমতো পাহাড়, বিশেষ করে প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং মাথায় রাখলে তো বটেই! সে ৩২০ রানের পাহাড়ই কি-না বাংলাদেশ টপকে গেল ৩ বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখে! বৃষ্টিটা এদিনও বাগড়া দিলে কি আর অমন ব্যাটিংয়ের দেখা মিলত? কিংবা শেষের অমন নাটকীয়তার?

চেমসফোর্ডে দিনের শুরুটা ছিল বৃষ্টির। এরপর বাংলাদেশের পেসারদের। বৃষ্টিতে ৫ ওভার গিয়েছিল কমে, তবে বৃষ্টির ভাগশেষ কিছু ম্যাচে ছিলই। মেঘলা আকাশের নিচে মুভমেন্ট হচ্ছিল বেশ। তার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশও ১৬ রান খরচায় তুলে নিয়েছিল আইরিশদের দুই উইকেট, দুটোই হাসান মাহমুদের কল্যাণে। এরপর ‘স্বাগতিক’রা জুটি গড়ছিল বটে, কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে খোয়াচ্ছিল উইকেটও। ১১৩ রানে ২ উইকেট থেকে যখন ১৭০ পেরোতেই আয়ারল্যান্ড খোয়াল ৫ উইকেট, তখন মনে হচ্ছিল কতোই বা পেরোবে আইরিশদের ইনিংস?

তখনই শুরু হ্যারি টেক্টরের প্রতি আক্রমণের, সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন জর্জ ডকরেলকে। দুয়ের তাণ্ডবে ভর করেই আয়ারল্যান্ড পরের ১১.২ ওভারে তুলল ১১৫ রান, ওভারপ্রতি প্রায় ১০ করে। চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি করা টেক্টর যখন বিদায় নিচ্ছেন ক্যারিয়ার-সেরা ১৪০ করে, আইরিশদের রান পাহাড় তখনই নিশ্চিত হয়ে গেছে। সেখান থেকে বাকি কাজটা সেরেছেন ডকরেল। ৪৭ বলে ৭৪ রান তুলে ইনিংস শেষ করেই উঠে এসেছেন সাজঘরে। আইরিশরা পুঁজিটা পায় ৩১৯ রানের। 

বিলেতের মাঠে এর চেয়ে বড় রান তাড়া করার ইতিহাস বাংলাদেশের আছে। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপের টন্টনের ম্যাচের সঙ্গে এদিনের শুরুটায় ছিল বড় অমিল। সেদিন রান উঠেছিল শুরু থেকে, এদিন শুরুর ১০ ওভারে উঠল মোটে ৪৬ রান, তাও আবার দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর লিটন দাসের উইকেটের মাসুল গুণে। আস্কিং রেটটাও তাই বেড়ে যাচ্ছিল তরতর করে।

প্রতি আক্রমণের কৌশলে নাজমুল হোসেন শান্ত বশে আনলেন সে বেয়াড়া আস্কিং রেটটাকে। শুরুতে সঙ্গী হিসেবে পেলেন সাকিব আল হাসানকে। ২৭ বলে ২৬ করে তার উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসার পর শান্ত জুটি গড়লেন তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে। পূর্বসূরি যে ভুল করে গেছেন, শান্ত-তাওহীদ সে ভুলের ধারেকাছেও গেলেন না।

দুজন মিলে গড়লেন নিখুঁত, অথচ আগ্রাসী এক জুটি। দুজনের ১৭ ওভারে ১৩১ রানের জুটিটা প্রথমে বাংলাদেশকে নিয়ে এল ম্যাচের কক্ষপথে, এরপর জয় থেকে হাতছোয়া দূরত্বে। শান্ত তিন অঙ্কের দেখা পেলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো, তাও মাত্র ৮৩ বলে, বিদেশের মাটিতে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় দ্রুততম। 

যেভাবে খেলছিলেন, তাওহীদের প্রথমবারের মতো তিন অঙ্ক ছোঁয়াকেও মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। তখনই ভুলটা করলেন তাওহীদ। ডকরেলের বলে ব্যাট চালাতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন শর্ট মিড উইকেটে। উইকেটের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘোরা আইরিশরা পেয়ে যায় পরম আরাথ্য মহার্ঘ্যের সন্ধান।

এরপর বাংলাদেশকে চেপে ধরতে চেয়েছে আইরিশরা। মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজরাও জবাবটা দিয়েছেন সেভাবেই। তবে ডকরেলের শিকার হয়ে মিরাজের বিদায় নেন একটু পর। তাইজুল অবশ্য সামলে নিচ্ছিলেন, মুশফিককে দিচ্ছিলেন যোগ্য সঙ্গ। তবে ক্লোজ ম্যাচটা যে স্নায়ুতেও চাপ দিচ্ছে, তার আঁচ মেলে দ্রুত রান নিতে গিয়ে মিলিমিটারের জন্য মুশফিক রান আউট থেকে বেঁচে যাওয়ায়। সে ওভারেই তাইজুল ক্যাচ তুললেন স্লিপে। তাইজুল এরপর ফিরলেন, শরিফুল এলেন তাতে। চার মেরে জানান দিলেন, এ চাপ অমন কিছু নয় তার কাছে। 

তবে চাপটা বাংলাদেশ বুঝল শেষ ওভারে। ৬ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। মার্ক অ্যাডায়ার প্রথম দুটো বল দিলেন ডট। তৃতীয় বলে পাওয়া ফুলটসে ডিপ স্কয়ার লেগে মুশফিক তুলে দিলেন ক্যাচ। গ্যালারিতে হাজির হাজার চারেক তো বটেই, ইউটিউব স্ট্রিমিংয়ে চোখ রাখা ষাট হাজার দর্শকদেরও বোধ করি মুখটা হয়ে গিয়েছিল পাংশুটে। টিভি আম্পায়ারের পরামর্শ নিয়ে মাঠের আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দিলেন, নো বল; হাজার ভোল্টের বাতির মতো জ্বলে উঠল মুখগুলো, তৎক্ষণাৎ। 

৫০-৫০ সিদ্ধান্তগুলো এসেছে পক্ষে, সঙ্গে ছিল মোমেন্টামও। এ ম্যাচ বাংলাদেশের হারাটাই যেন কঠিন ছিল। মুশফিক ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বৈধ বলটায় খেললেন স্কুপ, বলটা বাউন্ডারি ছুঁতেই নিশ্চিত হলো ৩ উইকেটের জয়। বৃষ্টির চোখরাঙানি এড়িয়ে বাংলাদেশ সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। সুপার লিগটা তিনে থেকে শেষ করার সম্ভাবনাটাও বাড়ল তাতে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড- ৩১৯/৬ ( টেক্টর ১৪০, ডকরেল ৭৪*, হাসান ২/৪৮)
বাংলাদেশ- ৩২০/৬ (শান্ত ১১৭, হৃদয় ৬৮, ক্যাম্ফার ২/৩৭)

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা