প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩ ১১:১৫ এএম
আপডেট : ১২ মে ২০২৩ ১৩:০৮ পিএম
ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরিতার প্রভাব পড়েছে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে। বিসিসিআইয়ের মতো পিসিবিও এখন বলছে তারাও ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে যেতে রাজি নয়। সে ক্ষেত্রে একটি হাইব্রিড মডেলও প্রস্তাব করেছেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। যাতে বলা হয়েছে, এশিয়া কাপের মোট ১৩টি ম্যাচের মধ্যে চারটি নিজেদের মাটিতে খেলতে চায় পাকিস্তান। একইভাবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও খেলতে চায় তারা।
এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ ঘিরে নানা আলোচনার পর বৃহস্পতিবার ভারতের স্পোর্টস তাককে সাক্ষাৎকার দেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। এ মুহূর্তে পিসিবির অবস্থান কীÑ প্রশ্নে শেঠি হুমকির সুরে বলেন, ‘ভারত পাকিস্তানে খেলতে না এলে পাকিস্তানও ভারতে খেলতে যাবে না। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত, আমাদের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।’
বিসিসিআই পাকিস্তানে দল না পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারত সরকারের অনুমতি না থাকার কথা বলে থাকে। শেঠি বলেন, বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে একই যুক্তি দেবে পিসিবিও, ‘ভারতের সরকার যদি বিসিসিআইকে পাকিস্তানে দল পাঠাতে নিষেধ করে, আমাদের সরকারও ভারতে বিশ্বকাপ খেলার জন্য অনুমতি দেবে না। সরকার, মিডিয়া এবং পাকিস্তানের জনগণের দ্বারা আমাকে দেওয়া আদেশ হলো এটির একটি সম্মানজনক এবং পারস্পরিক ব্যবস্থা হতে হবে। আমরা এশিয়া কাপ আয়োজন করতে পেরে খুশি কিন্তু এটা হতে পারে না যে ভারত পাকিস্তানে আসতে অস্বীকার করবে। সেই সঙ্গে তারা আমাদের কয়েকটি ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন করতে দেয় না। ভুলে যাবেন না, এশিয়া কাপের পরপরই বিশ্বকাপ আসছে এবং এটি ভারতে হতে চলেছে। এটি একটি আইসিসি ইভেন্ট। ভারত যদি পাকিস্তানে না আসে বা ভারত আমার হাইব্রিড মডেল টর্পেডো করে তাহলে কী হবে? আমি মনে করি না আমার সরকার আমাকে যেতে দেবে ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে।’
এদিকে পাকিস্তান হাইব্রিড মডেলের কথা বললেও শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ তা মানতে নারাজ। তাদের যুক্তি, বছরের এ সময়টাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উত্তাপ ক্রিকেটের জন্য উপযোগী নয়; যার জেরে শেঠির কথা, ‘আয়োজক দেশ হিসেবে নিরপেক্ষ ভেন্যু কোথায় হওয়া উচিত তা সিদ্ধান্ত নেওয়া পিসিবির ওপর নির্ভর করে। আমি খুবই অবাক হয়েছি যে এ ধারণাটি অনানুষ্ঠানিকভাবে শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ দ্বারা প্রবর্তিত হচ্ছে। এসিসির শেষ বৈঠকে, যা প্রায় এক মাস আগে হয়েছিল, আমরা তখন সবাই একমত হয়েছিলাম যে পাকিস্তানের এশিয়া কাপ খেলা অপরিহার্য ছিল এবং পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোথাও এশিয়া কাপ হবে না। এশিয়া কাপের আয়ের প্রায় ৮০% ভারত থেকে আসে। পাকিস্তানের ম্যাচগুলোর সূচি যেভাবে সাজানো হয়েছে, আমরা সেগুলোর মধ্যে অন্তত দুটি খেলব এবং সম্ভবত তিনটি খেলব যদি আমরা দুই দলই ফাইনালে থাকি। বাংলাদেশের একমাত্র আপত্তি ছিল যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সেপ্টেম্বরে খুব গরম হতে চলেছে এবং তা একটি সমস্যা হবে। তার পরে অন্য সমস্যাটি ছিল লজিস্টিক। আমি যে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছি তা সমস্ত লজিস্টিক সমস্যার যত্ন নেয়।’
তবে সব সমস্যা কাটিয়ে ২০১৮ ও ২০২২ এশিয়া কাপের মতো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে এশিয়া কাপ আয়োজনের পক্ষে শেঠি। সেই সঙ্গে এ মডেলটি অনুসরণ করা হতে পারে আগামী বিশ্বকাপেও। এ বিষয়ে শেঠি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ফুরিয়ে আসছে। বোর্ডের প্রস্তুতির জন্য তিন মাস লাগবে। আমাদের সংযুক্ত আরব আমিরাত বা শ্রীলঙ্কায় বা যেখানেই আমরা সিদ্ধান্ত করি সেখানে ভেন্যু রিজার্ভ করতে হবে। সময় শেষ হয়ে গেছে, এসিসিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। আমাদের প্রথম সমস্যাটি সমাধান করতে হবে (হাইব্রিড সমাধান গ্রহণ করা) এবং তার পরে আমরা একটি টেবিলে বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে কোথায় খেলতে হবে। আমরা যুক্তিসঙ্গত হব। আমি জয় শাহকে আমাদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেছি, তিনি সমস্যা নেই বলেছেন। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কথা বলতে চান।’