প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩ ১৬:১৯ পিএম
আপডেট : ১০ মে ২০২৩ ১৬:৩৩ পিএম
হঠাৎ করেই ভিন্ন কথা শোনালেন লিওনেল মেসির বাবা জর্জ মেসি, যিনি আবার এই মহাতারকার এজেন্টও। ট্রান্সফার মার্কেট বিশেষজ্ঞ ফ্যাব্রিজিও রোমানো জানালেন, মৌসুম শেষেই উত্তর মিলবে কোন ক্লাবে যাচ্ছেন মেসি। আপাতত কোনো ক্লাবের সঙ্গেই চুক্তি হয়নি তার, কোনো ক্লাবকেই কথা দেননি তিনি। আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলারের সৌদি ক্লাবে নাম লেখানোর যে খবর ভেসে বেড়াচ্ছে, সেটিকে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। মেসির বাবার বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, ‘এটি ভুয়া খবর!’
এর আগে অবশ্য অনেক কানাঘুষা, জল্পনা ও গুঞ্জন ছিল মেসিকে ঘিরে; কোথায় যাচ্ছেন মেসি? বিভেদ ভুলে প্যারিসেই থাকছেন, নাকি শুনবেন নাড়ির টান অর্থাৎ বার্সায় ফিরবেন ফের। শোনা গেছে, ইন্টার মিয়ামির কথাও, তিনি নাকি পাড়ি জমাবেন সেখানেই। এসব গুঞ্জনকে ছুড়ে ফেলে মেসি এখন সৌদি আরবে থিতু হওয়ার অপেক্ষায়। আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসিকে নিয়ে এমন সংবাদই দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
বার্তা সংস্থা এএফপির দাবি, বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিকে সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকার সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে আল হিলাল। ৩৫ বছর বয়সি মেসির সঙ্গে এই চুক্তি দুই বছরের।
চুক্তির টাকার অঙ্কটা সামনে এনেছে ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইল। ইতঃপূর্বেই মেসির জন্য রেকর্ড ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করার কথা জানিয়েছিল আল হিলাল। এবার সেই অঙ্কটা বেড়ে দাঁড়াল ৫২২ মিলিয়ন পাউন্ডে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার ১২০ কোটি টাকারও বেশি!
বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্যমতে, মেসি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে খেলতে রাজি হয়েছেন। এমন হলে মেসি সর্বোচ্চ বেতনভোগী ফুটবলার হিসেবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। চড়া বেতনে কাতার বিশ্বকাপের পর সিআর সেভেন সৌদির আরেক ক্লাব আল নাসরে নাম লিখিয়েছেন। রোনালদোকে সৌদিতে পা রাখার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল মেসিকে দেশটির ক্লাব ফুটবলে যুক্ত করা নিয়ে। তখন আল নাসর কোচ রুডি গার্সিয়াও জানিয়েছিলেন, তিনি তার দলে মেসিকেই চেয়েছিলেন। এরপর আল নাসরের বেশ কিছু ম্যাচেও মেসি মেসি ধ্বনি শোনা গেছে।
এদিকে প্যারিসেও সময়টা ভালো কাটছিল না মেসির। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ের পর লিগ ওয়ানের ম্যাচেও হারতে হচ্ছিল পিএসজিকে। যার জন্য ভক্তরাও ক্ষুব্ধ ছিলেন মেসিকে নিয়ে। এদিকে এসব থেকে দূরে থাকতে কাউকে কিছু না জানিয়ে সৌদি আরব সফরে যান মেসি। যার জন্য অবশ্য তাকে দুই সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধও করা হয়। পরে মেসি এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইলেও কোনো সুরাহা হয়নি। জানা যায়, এ ঘটনার পর মেসিকে নিয়ে নতুন করে আর আগ্রহ নেই পিএসজির। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছিল, দেশটির পর্যটন শুভেচ্ছাদূত হিসেবে সৌদিতে গেলেও আগামীতে কোথায় উঠবেন সেটিই রোকুজ্জোকে নিয়ে স্বচক্ষে দেখে এসেছেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।
মেসিকে ঘিরে সৌদির এত আগ্রহের কারণ জানতে গিয়ে জানা গেছে, কাতারের মতো সৌদিও চায় তাদের মাটিতে আগামীতে বিশ্ব ফুটবলের আসর বসাতে। সেই সঙ্গে ফুটবলকে ঢেলে সাজাতে রোনালদোর পর মেসিকে টানার ব্যাপারে এত আগ্রহী সৌদি; যা হলে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই দেখতে দেশটিতে নিয়মিতই পা রাখবেন বহু পর্যটক, আগামীতে সৌদিকে বিশ্বকাপের আয়োজক করতে সাহায্য করবে। যার জন্য রোনালদোর পর মেসির মতো তারকা ফুটবলারদের ক্লাব ফুটবলে যুক্ত করতে এতটা আগ্রহী সৌদি। আর এর পেছনে অর্থ ঢালছে সৌদি আরব সরকারের মালিকানাধীন পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ)। বর্তমানে এটি বিশ্বের অন্যতম স্বাধীন সম্পদশালী ফান্ড, যার সম্পদের পরিমাণ ৬২ হাজার কোটি ডলার।
দলবদলের বাজারে অবশ্য শেষ খবর বলে কিছু নেই। ফুটবলার নিজে বিবৃতি দিয়ে জানানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বলা যায় না কিছুই। এখন দেখার বিষয় সত্যিই মেসিকে নিয়ে এএফপির দেওয়া এই সংবাদ সত্য হয় কি না। তবে সে সম্ভাবনা যে বেশ জোরালো তা বলাই যায়। কেননা দিন শেষে টাকায় কী না হয়? চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজাই যখন তার সাম্রাজ্য ছেড়ে পাড়ি জমান প্রো লিগ খেলতে, তখন মেসি যে সে পথে পা বাড়াবেন না তারই বা গ্যারান্টি কী?