× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফিফা আইন ভেঙেছেন সালাউদ্দিন

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৩ ১০:০৩ এএম

আপডেট : ০৫ মে ২০২৩ ১০:০৮ এএম

ফিফা আইন ভেঙেছেন সালাউদ্দিন

নেতিবাচক কারণে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আলোচনায়, সেটা বহুদিন ধরে। অনিয়ম, দেশের ফুটবলের পারফরম্যান্সের নিম্নমুখী গ্রাফ, কর্তাদের স্টান্টবাজি- সব কিছু মিলিয়েই। গেল ১৪ এপ্রিল জালিয়াতি, অনিয়ম, দায়িত্বহীনতা ও তহবিল তছরুপের দায়ে ফিফা থেকে আবু নাঈম সোহাগের নিষেধাজ্ঞা তাতে যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা। সেই সমালোচনায় নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন খোদ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সাংবাদিকদের বাবা-মা নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে সমালোচনার অকূল পাথারেই পড়ে গেছেন তিনি। তবে তার দুঃসময়টা এখানেই শেষ না-ও হতে পারে। কারণ তিনি যা করেছেন, তার গভীরতা যে মোটেও কম নয়!

আরও পড়ুন : স্কুল ক্রিকেটে ঢাকা মেট্রোর চ্যাম্পিয়ন ক্যামব্রিয়ান

কী করেছেন তিনি? সেটা সবারই জানা। তবু আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া- গত ২ মে বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে সালাউদ্দিন বলেন, ‘জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে তাদের আমার এখানে ফটো দিতে হবে তাদের বাপ-মার। আরেকটা কন্ডিশন হলো তার বাপের ফটো পাঠাবে, জুতা পরা। ঠিক আছে (হাসি)? এটা হতে হবে ম্যান্ডেটরি। বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।’ এমন কথা ধরা পড়ে যায় সংবাদকর্মীদের রেকর্ডারে। 

এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পর ক্ষমা অবশ্য চেয়েছেন সালাউদ্দিন। বলেছেন, ‘নিউজে দেখছি যে, আমি সাংবাদিকদের আঘাত করার জন্য একটা কথা বলেছি। আসলে আমি সাংবাদিকদের আঘাত করে বলিনি, আমি নাবিলের (কাজী নাবিল আহমেদ) একটি বিষয় নিয়ে জোক করছিলাম। সেটা যে কেউ টেপ করছে সেটা আমি জানি না। আমি একটা কথাই বলব, কাউকে যদি আঘাত দিয়ে থাকি, দুঃখ দিয়ে থাকি, আমি খুবই দুঃখিত। আমি ক্ষমা চাই। আমি কিন্তু আপনাদের উদ্দেশ করে কিছু বলিনি। এটা আমাদের মাঝে ব্যক্তিগত একটা জোক হচ্ছিল, সেখানে যে টেপ (রেকর্ড) হচ্ছে তা আমি জানি না। অবশ্যই আমি এটার জন্য দুঃখিত, যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকি।’ তবে যা তিনি করেছেন, তা কি আর এক ক্ষমা প্রার্থনায় মুছে যায়? 

মুছে যায়নি। প্রতিবাদের মুখে পড়েছেন সালাউদ্দিন। ‘মানহানিকর’ এই বক্তব্যের ফলে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সম্মানসূচক সদস্যপদ হারিয়েছেন তিনি। এরপর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসহ আরও একাধিক সাংবাদিক সংস্থা চেয়েছে তার পদত্যাগ।

সালাউদ্দিনের পদত্যাগের ‘জনদাবি’ অবশ্য আজকের নয়। আগেও বহুবার হয়েছে, সোহাগের নিষিদ্ধ হওয়ার পর ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে এক স্মারকলিপির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়েছেন সাবেক ফুটবলাররাও। সে সবের কেয়ার অবশ্য সালাউদ্দিন কবে করেছেন? 

তবে সবশেষ যা করেছেন, তাতে তার মসনদ সত্যিই পড়ে গেছে হুমকির মুখে। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছরের সভাপতিত্বে যবনিকা পড়ে যেতে পারে তাতে। সাংবাদিকদের তিনি যা বলেছেন, তা নিশ্চিতভাবেই মানহানিকর। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর ভাষ্য অন্তত তেমনই।

সালাউদ্দিন তার কথায় সাংবাদিকদের মানহানি করে ফিফার আইন পরিপন্থি কাজও করে বসেছেন। যেকোনো ব্যক্তিকে মানহানিকর কিছু বলা বা কিছু করা ফিফা কোড অব এথিকসের বিরোধী। 

ফিফা কোড অব এথিকসের ২২ অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, ‘এই কোডের অধীনে থাকা ব্যক্তিরা বর্ণ, গায়ের রঙ, জাতিসত্তা, জাতীয়তা, সামাজিকতা, লিঙ্গ, অক্ষমতা, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো অভিমত, সম্পদ, জন্ম কিংবা অন্য কোনো পরিচয়, কিংবা ভিন্ন কোনো কারণে অবমাননাকর, নিন্দনীয় ও বৈষম্যমূলক কথা কিংবা কাজের মাধ্যমে অন্য কোনো দেশ, কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতে পারবেন না।’

যদি এ নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়, তাহলে শাস্তি তার জন্য অবধারিত। সে অনুচ্ছেদেই পরে জানানো হচ্ছে, ‘এই অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করলে অন্তত ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁর সঙ্গে ফুটবল সম্পর্কিত কার্যক্রমে সর্বোচ্চ দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। আরও গুরুতর পরিস্থিতিতে কিংবা একই কাজের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা নেমে আসতে পারে।’

এখন প্রশ্ন আসে, ফিফার কোড অব এথিকসের আওতায় পড়েন কারা? সালাউদ্দিন আদৌ এর আওতায় পড়েন কি না? এই প্রশ্নের উত্তর ফিফা কোড অব এথিকসের ২ নম্বর অনুচ্ছেদেই বলা আছে। সেখানে জানানো হচ্ছে, ‘ফিফা কোড অব এথিকস সেসব ফুটবল কর্মকর্তার ওপর বর্তায় যারা বিভিন্ন কনফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন, লিগ, ক্লাবে অধিভুক্তির কারণে, কিংবা ফুটবলে তাদের অবস্থান ও কার্যক্রম, যেমন ফুটবল ম্যাচ, প্রতিযোগিতা, ইভেন্ট ও ফিফা টুর্নামেন্ট, কনফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন বা লিগে জড়িত থাকার কারণে ফিফার সঙ্গে যুক্ত।’ 

ফিফার অধিভুক্ত কনফেডারেশনের প্রধান হিসেবে সালাউদ্দিনও কোড অব এথিকসের আওতায় পড়েন। এখন ২২ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের দায়ে তার পরিণতি কী হয়, তাই এখন দেখার বিষয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা