বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৪:৩৬ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৪:৩৯ পিএম
বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডিতে বাংলাদেশ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। টানা দুইবারের শিরোপাজয়ী স্বাগতিকরা। লাল-সবুজের জার্সিধারীদের পারফরম্যান্সেও মিলছে তার প্রমাণ। তারা খেলে যাচ্ছে রাজকীয় কায়দায়। কোর্টের লড়াইয়ে দাপট দেখিয়ে একের পর এক প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন দেশের ছেলেরা। হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে জয়রথে চেপে ছুটে চলেছে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। পৌঁছে গেছে সেমিফাইনালে। আজ ফাইনালে ওঠার লড়াই। প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড।
টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্বে পোল্যান্ডকে ৫০-২২ পয়েন্টে, আর্জেন্টিনাকে ৭২-২৩ পয়েন্টে, নেপালকে ৪০-২৪ পয়েন্টে, ইংল্যান্ডকে ৫৫-২৭ পয়েন্টে এবং ইরাককে ৪৯-৩৩ পয়েন্টে হারিয়ে সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট নিয়ে এ-গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন : নেপালকে বিধ্বস্ত করে বাংলাদেশের হ্যাটট্রিক
শেষ চারের ম্যাচে জয়ে চোখ বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দলের। জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেই ফাইনালে নাম লেখাতে চায় দল। অধিনায়ক তুহিন তরফদার বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহপাকের রহমতে আমরা গ্রুপপর্বের পাঁচটি ম্যাচ খেলে পাঁচটিতেই জিতেছি। এখন আমরা গ্রুপসেরা হয়ে সেমিফাইনালে। আশা করি, সেমিফাইনালেও আমরা জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারব।’
সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ এখনও ঠিক হয়নি। তবে যে দেলই আসুক জয়ের লক্ষ্য থেকে একচুলও সরবে না বাংলাদেশ। তুহিন তরফদারের দৃঢ়প্রত্যয়, ‘মনে হচ্ছে চাইনিজ তাইপে অথবা থাইল্যান্ড, এই দুটি দলের একটি সেমিতে আমাদের প্রতিপক্ষ হতে যাচ্ছে। যে দলই আসুক না কেন, তাদের হারিয়ে আমাদের ফাইনালে যেতে হবে এবং শিরোপাও জিততে হবে। এটা মাথায় রেখে আমরা অনুশীলন করে যাচ্ছি এবং আমাদের পরিকল্পনা সেভাবেই করা হচ্ছে। ইনশাল্লাহ আমাদের দলই চ্যাম্পিয়ন হবে।’
যেকোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত লাল-সবুজের জার্সিধারীরা, ‘এই আসরে আমরা এ পর্যন্ত যে কটি ম্যাচ দেখেছি, তার মধ্যে চাইনিজ তাইপেকেই সবচেয়ে শক্তিশালী মনে হয়েছে। তারপরেই আছে থাইল্যান্ড। দুটিই ভালো দল, কেউ কারোর চেয়ে খারাপ নয়। যারাই আসুক, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই লড়াই করেই জিততে হবে।’
দলে হানা দিয়েছে ইনজুরি। তবে ফাইনালে রোমান-রাসেলকে পেতে আশাবাদী ক্যাপ্টেন তুহিন, ‘বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টের শুরুর আগ থেকে এ পর্যন্ত ইনজুরিতে পড়ায় ছয় খেলোয়াড়কে হারিয়েছি। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ ম্যাচে আমাদের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রোমান হোসেন এবং রাসেল হাসান মাথায় চোট পান। দুজনের মাথাতেই অনেকগুলো সেলাই করা হয়েছে। তারা এখন অনেকটাই সুস্থ। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের (ফাইনালে বাংলাদেশ উঠলে) আগে যে সময় পাওয়া যাবে, আশা করি তারা সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরবেন।’
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের চোখেমুখে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। তুহিন জানালেন তেমনটা, ‘বঙ্গবন্ধুর নামেই এই টুর্নামেন্ট। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আমাকে ব্যক্তিগতভাবে উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, আগের দুবার তোমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবারও যেন তোমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়। তোমরা যদি শিরোপা জিততে পার, তাহলে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব তোমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যেতে।’
টুর্নামেন্টে শুধু শিরোপাই জিততে চান না খেলোয়াড়রা। বীরের বেশে দেখা করতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। তুহিন বললেন মনের সেই সুপ্ত ইচ্ছার কথা, ‘আগের দুবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমাদের দলের সবারই খুব ইচ্ছা ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার। করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। এবার দেশের পরিস্থিতি ভালো আছে। আশা করি এবার শিরোপা জিতব এবং কাবাডি ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমাদের সবার আক্ষেপ ঘুচবে।’