× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সেই স্যুভেনির স্ট্যাম্প ছুঁয়েই স্বপ্ন বুনেছিলেন হৃদয়

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৪:২৭ পিএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪১ পিএম

সেই স্যুভেনির স্ট্যাম্প ছুঁয়েই স্বপ্ন বুনেছিলেন হৃদয়

১৭ মার্চ ২০০৭। মুনাফ প্যাটেলের বলটা কভারে ঠেলেই মোহাম্মদ আশরাফুলের সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন মুশফিকুর রহিম। পোর্ট অফ স্পেনে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই পাওয়া এই জয় বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে লেখা আছে সোনার হরফেই। 

সে ম্যাচটা যখন শেষ হলো, তাওহীদ হৃদয়ের বয়স তখন সাত। সেই বয়সে বাংলাদেশের এই জয় তার মনে দাগ কেটে গিয়েছিল বেশ। সেই ম্যাচে মুশফিক করেছিলেন ফিফটি, স্মারক একটা স্টাম্পও নিয়ে এসেছিলেন দেশে। সেটাই বগুড়ায় এক অনুষ্ঠানে ছুঁয়ে দেখেছিলেন মুশফিকের শহরেরই ছেলে হৃদয়। জাতীয় দলের স্বপ্নটাও মনে মনে বুনে ফেলেছিলেন তিনি। ওয়ানডে ফরম্যাটে তার সে স্বপ্নটা সত্যি হলো শনিবার।

কী কাকতাল দেখুন! যাকে দেখে জাতীয় দলের স্বপ্ন দেখেছিলেন, ওয়ানডে ক্যাপটাও পেয়েছেন তার হাত থেকেই! নেমেওছিলেন তার জায়গাতেই, যে কারণে প্রায় ৫ বছর পর মুশফিক নেমেছিলেন ৬ নম্বর পজিশনে। জাতীয় দলের ডাকটা এসেছে যে পারফরম্যান্সের পর, সেই বিপিএলেও যে দেদার রান করেছেন, সেটাও তো এই মুশফিককে ব্যাটিং পজিশনে একটু নিচে ঠেলে দিয়েই! ওয়ানডে অভিষেকে এরপর অবশ্য মুশফিকের সঙ্গেই গড়েছেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া দুই জুটির একটি। ৪৯ বলে ৮০ রানের জুটি গড়ার সময় পেয়েছেন মুশফিকের বাহবাও।

মুশফিকের সঙ্গে সাকিবকে জুটি গড়ে উঠতে দেখে বড় হয়ে উঠেছেন হৃদয়। সেই সাকিবকে তিনি পেয়েছেন অভিষেক ইনিংসের শুরু থেকেই। সে অভিজ্ঞতাটা তার ভাষায়, ‘সাকিব ভাই সঙ্গে ছিলেন, তার সঙ্গে ব্যাট করার অভিজ্ঞতাটা দারুণ। তিনি অনেক অভিজ্ঞ ব্যাটার। তার কাছ থেকে শিখছিলাম, উপভোগ করছিলাম। সময়ে সময়ে তিনি আমাকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন। যখন মনে হচ্ছিল কিছু দরকার, তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করছিলাম। তিনি আমাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন, ইনিংস যতটা সম্ভব লম্বা করার কথা বলছিলেন।’

আরও পড়ুন : হৃদয়-কাড়া অভিষেক

তার ব্যাটিংয়ে জেদের একটা ছাপের দেখা মেলে পরিষ্কার। বঙ্গমুল্লুকে যেমনটা হয়, পরিবারের সহায়তা মেলেনি। বাবা তো খেলতেই দিতে চাইতেন না, মায়ের কাছ থেকে সমর্থনটা আদায় করতেন জেদ করে, গোঁ ধরে। জেদি না হলে যে তার ক্রিকেটারই হওয়া হতো না!

তেমনই এক গোঁ ধরে ঢাকায় এসেছিলেন ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হতে। কিন্তু মায়ের জমি বন্ধক রেখে দেওয়া টাকা তার গচ্চা যায় প্রতারকের পাল্লায় পড়ে। তবে বিসিবি পরিচালক ও কোচ খালেদ মাহমুদের চোখে পড়ে যান শিগগিরই। সুজন তাকে নিয়ে যান রাজশাহীর বাংলা ট্র্যাক একাডেমিতে। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আনুষ্ঠানিক শুরুটাও হয় এখানেই। 

এরপর বয়সভিত্তিক পর্যায় পেরিয়ে আসা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আসাটাও অবশ্য মসৃণ ছিল না তার। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দুবার খেলা, এরপর ২০২২ বিপিএলে বাজে ফর্ম... সব মিলিয়ে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নটা বাস্তব হতে দেখার অপেক্ষাটা ক্রমেই বাড়ছিল তার।

সে অপেক্ষাটা শেষ হলো আরও এক জেদের ফলে। ২০২২ বিপিএলের ফাইনালে শেষ ওভারে ব্যাট হাতে বরিশালের আশা হয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ১ রানে হারের বিষাদে ডুবতে হয় তাকে, তার দলকে। এরপরই নিজেকে খোলনলচে বদলে ফেলার শুরু তার। ব্যাটিংয়ের কৌশল থেকে মানসিকতা, সব দিক থেকেই তাওহীদ নিজেকে বদলে ফেলেছেন এরপর। ফলটা তো দেখতেই পারছেন! সবশেষ বিপিএলে ৪০৩ রান করে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়া, এরপর জাতীয় দলে অভিষেক। 

সে অভিষেকে শুরু থেকেই খেলেছেন সাবলীল ক্রিকেট। বেশ কিছু বল খেলে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টাটাকে দুনিয়াজুড়ে ব্যাটিংয়ের ব্লুপ্রিন্ট বলে ধরা হয়। তাওহীদ হৃদয়ের বদলে যাওয়া মানসিকতাতে তারও জায়গা নেই। জানালেন, ‘আমি ইনটেন্টা ঠিক রাখার চেষ্টা করছিলাম। এমন নয় যে সেট হওয়ার জন্য উইকেটে ছিলাম, আমি চেষ্টা করছিলাম বলের মেরিট বুঝে ব্যাট করার।’

সাকিবের সঙ্গে ১২৫ বলে ১৩৫, আর মুশফিকের সঙ্গে ৪৯ বলে ৮০, দুটো জুটিতেই ছিলেন তাওহীদ। নিজে সেঞ্চুরি না পেলেও খেলেছেন ৮৫ বলে ৯২ রানের ইনিংস। গড়েছেন অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড, যা পরে ম্যাচসেরার পুরস্কারও পাইয়ে দিয়েছে তাকে। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে অভিষেকে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা পেয়েছেন তাওহীদসহ চারজন। তবে বাকিদের কেউই ব্যাটিং পারফরম্যান্সের জন্য এই পুরস্কারটা জেতেননি, এখানে তিনিই প্রথম। এটাই শেষ নয়, তাওহীদ আরও বহু অর্জনের প্রথমেও নিজের নামটা দেখতে চাইবেন নিশ্চয়ই!

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা